বামেদের কটাক্ষ
‘অতিথিশালায়’ তৃণমূল প্রার্থীরা
‘জিটিএ’ নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র পেশের পর এলাকায় প্রচারে নামা তো দূরের কথা, তৃণমূলের প্রার্থীরা সরকারি অতিথিশালা ভাড়া করে শিলিগুড়িতে দিন কাটাচ্ছেন। দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের ১১ জন প্রার্থী রয়েছেন পুরসভার অতিথিশালায়। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম সংলগ্ন যুব আবাসে রয়েছেন কার্শিয়াংয়ের ৫ জন প্রার্থী। এলাকায় ঢুকলে তাঁদের উপর হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। এমনকী জোর করে মনোনয়ন পত্র তুলে নিতেও বাধ্য করা হতে পারে বলে জানান তাঁরা। তৃণমূলরে দার্জিলিং জেলা নেতৃত্বের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনার জন্য তাঁদের শিলিগুড়িতে রাখা হয়েছে। সোমবার মনোনয়ন পত্র দাখিলের পর তৃণমূল প্রার্থীরা শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে দেখা করে সরকারি অতিথিশালায় আশ্রয় নেন। দলের দার্জিলিং জেলার সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র কুন্ডু অবশ্য বলেন, “প্রার্থীরা সকলেই নতুন ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের অনেক কিছু জানাতে হবে। সে জন্য শিলিগুড়িতে রাখা হয়েছে। আলোচনার পর আগামী ১৩ জুলাই তাঁরা প্রচারের জন্য পাহাড়ে ফিরবেন। পুলিশ-প্রশাসন নজরদারি সেখানে।
ছবি: সন্দীপ পাল।
নিরাপত্তা নিয়ে কারও কোনও ভয় নেই।” বুধবার শিলিগুড়ি পুরসভার অতিথিশালায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দার্জিলিংয়ের ঘুম-জোরবাংলোর প্রার্থী মিলন ডুকপা, ছোংটং-ম্যারিবং কেন্দ্রে মনোজিৎ সুব্বা, কালিম্পংয়ের সামসিং কুমাইয়ের উরগেন শেরপা সহ ১১ জন প্রার্থী সেখানে রয়েছেন। দলের তরফ থেকে তাঁদের কাউকে কিছু বলতে বারণ করা হয়েছে। মিলনবাবুরা বলেন, “আমরা এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না। দলের তরফে মুখ খুলতে বারণ করা হয়েছে। যা বলার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ার পরে বলব।” একদিনের জন্য সেখানে ছিলেন কালিম্পংয়ের পেডং কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ছেয়ং লেন্ডুপ শেরপা। তিনি নিজের কেন্দ্রে ফিরে গিয়েছেন। তিনি বলেন, “সমস্ত প্রার্থীরা ভয় পাচ্ছে। তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাই শিলিগুড়িতে রয়েছেন তাঁরা। আমি ভয় পাই না। নিজের কেন্দ্রে ফিরে প্রচার শুরু করেছি। প্রয়োজনে লড়াই করে প্রস্তুত।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালিম্পংয়ের এক প্রার্থী বলেন, “ছেয়ং বরাবর একগুঁয়ে। তাকে ঘাঁটাতে চায় না মোর্চা কর্মীরা। কিন্তু আমাদের উপরে যে কোনও সময় হামলা করতে পারে। তাই এলাকায় থাকার ঝুঁকি নিচ্ছি না” এদিন তৃণমূলের কালিম্পংয়ের বং-দূরপিন এলাকার প্রার্থী গৌতম কালিকোটে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেন। দার্জিলিংয়ের এক তৃণমূল প্রার্থী জানান, মোর্চার কর্মীরা মনোনয়ন পত্র তুলে নেওয়ার জন্য তাঁদের উপর চাপ তৈরি করছেন। ফোনে ভয় দেখানো হচ্ছে। তিনি বলেন, “মনোনয়ন পত্র প্রত্যহারের সময়সীমা পার হওয়ার পরেই এলাকায় যেতে চাইছি।” মিরিকের সিয়ক গোপালধারার তৃণমূল প্রার্থী অনিল ছেত্রী রয়েছেন স্টেডিয়াম সংলগ্ন যুব আবাসে। সেখানে তাঁর সঙ্গে আরও পাঁচজন রয়েছেন। অনিলবাবুর অভিযোগ, “পাহাড়ে একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছে মোর্চা। সাধারণ মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অগণতান্ত্রিক পরিবেশের মধ্যে আমরা দিন কাটাচ্ছি। শিলিগুড়িতে থাকার পরেও নানা ভাবে আমাদের মনোনয়ন পত্র তুলে নিতে চাপ তৈরি করা হচ্ছে। পাহাড়ে গেলে গণ্ডগোল তৈরি হবে। এ জন্য আপাতত যেতে চাইছি না।” সৌরেনি কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রাজেশ ছেত্রী বলেন, “আমরা এলাকায় ঢুকলে মোর্চার লোকজন মনোনয়ন পত্র তুলে নিতে হুমকি দিতে পারে। তা নিয়ে মারপিটের আশঙ্কা রয়েছে। আমরা গণ্ডগোলে জড়াতে চাইছি না।” এদিন দার্জিলিংয়ে দলের প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। তিনি জানান, তাঁদের ১৩ জন প্রার্থীর মধ্যে অধিকাংশ আতঙ্কে ভোটে দাঁড়াতে ভয় পাচ্ছেন। কয়েকজন এই পরিস্থিতেও লড়তে চাইছেন। তিনি বলেন, “যেখানে শাসক দলের প্রার্থীরা এলাকায় থাকতে পারছেন না, সেখানে অবাধ নির্বাচন হওয়ার কথা বলা কতটা যুক্তিযুক্ত তা পাহাড়বাসী বুঝছেন। আমরা দলের প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন। ৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র তুলে নেবেন। ৫ জন অংশগ্রহণ করবেন।” সিপিএমের ৭ জন প্রার্থী এদিনই মনোনয়ন পত্র তুলে নেন। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিনয় তামাং বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে যারা ভোটে দাঁড়িয়েছেন তাঁদের পাহাড়ে কোনও অস্তিত্ব নেই। সাধারণ মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। সেটা বুঝতে পেরে মোর্চা বিরোধী প্রার্থীরা শিলিগুড়িতে চলে গিয়েছেন। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.