রাজ্য আবাসন পর্ষদের সঙ্গে বেসরকারি নির্মাণ সংস্থার যৌথ উদ্যোগে মোট আটটি সংস্থা গড়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সংস্থাগুলির মূলধন কত, তারা এ-যাবৎ কত টাকা লাভ করেছে, পর্ষদ বা রাজ্যের আবাসন দফতর তার কিছুই জানে না। এ-সব জানতে পর্ষদকে তদন্তের নির্দেশ দিলেন আবাসনমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
বুধবার মহাকরণে পর্ষদের কর্মসমিতির বৈঠকে এই নির্দেশ দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “অনেক দিন ধরে যৌথ সংস্থাগুলির পরিচালন নিয়ে এক ধরনের অনাচার চলে আসছে। সব কিছুই তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছি।”
যৌথ উদ্যোগের সংস্থাগুলি হল বেঙ্গল গ্রিনফিল্ড, বেঙ্গল পিয়ারলেস, বেঙ্গল ডিসিএল, বেঙ্গল শেল্টার, বেঙ্গল অম্বুজা, বেঙ্গল শ্রাচী, বেঙ্গল পার্ক চেম্বার এবং বেঙ্গল বেলানি। আবাসন দফতর সূত্রের খবর, এত দিন ধরে ওই সব সংস্থা তাদের লাভের অংশের ডিভিডেন্ড হিসেবে পর্ষদকে যে-টাকা দিয়েছে, তার চেয়ে তারা ঢের বেশি লাভ করেছে বলে সরকারের ধারণা। কিন্তু আগের (বামফ্রন্টের) আমলে সংস্থাগুলি তাদের হিসেবপত্র স্পষ্ট করে পর্ষদকে দেখায়নি। এ নিয়ে কোনও আগ্রহ দেখায়নি আগের প্রশাসনও।
পর্ষদের খাতাপত্র সন্ধান করে নতুন পরিচালন বোর্ড দেখেছে, ১৯৯৬-’৯৭ থেকে ২০১১-’১২ সালের ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ডিভিডেন্ড হিসেবে মোট ১০ কোটি ৯২ লক্ষ টাকার কিছু বেশি দিয়েছে আটটি যৌথ সংস্থা। কিন্তু তাদের আসল মূলধন কত, কত টাকাই বা লাভ হয়েছে, সেই হিসেব পর্ষদের কাছে নেই।
এ দিন মহাকরণে পর্ষদের পরিচালন সদস্যদের বৈঠকে ডাকেন মন্ত্রী। সেখানেই নির্দেশ দেওয়া হয়, সদ্যগঠিত ‘মনিটরিং কমিটি’ ওই সব যৌথ সংস্থার মূলধন থেকে শুরু করে এ-যাবৎ লাভের অঙ্ক পর্যন্ত সব কিছুই তদন্ত করে দেখবে। বৈঠকে বলা হয়, বাম আমলে সংস্থাগুলির পরিচালন বোর্ডে যে-সব সরকারি প্রতিনিধি ছিলেন, তাঁদের এ-সব তথ্য দেওয়া হত না। সেই সুযোগ নিয়ে যৌথ সংস্থাগুলির বেসরকারি কর্তারা তাঁদের নিজস্ব প্রকল্পে যৌথ প্রকল্পের লাভের টাকা খাটিয়েছেন।
পর্ষদের একটি হিসেবে দেখা গিয়েছে, গড়ে ২০০ কোটি টাকা মূলধন রয়েছে যৌথ সংস্থাগুলির। ওই সব সংস্থায় সরকারের ৪৯.৫ শতাংশ অংশিদারি আছে। সেই অনুযায়ী রাজ্য সরকার এখনই প্রায় ৮০০ কোটি টাকা পেতে পারে বলে মনে করছে আবাসন দফতর। |