কলেজে এসে ‘নিখোঁজ’ উত্তরপত্র ফেরালেন ছাত্র
রীক্ষা শেষে উত্তরপত্র ব্যাগে ঢুকিয়ে বাড়ি নিয়ে চলে গিয়েছিলেন এক ছাত্র। তাঁর দাবি, ভুল করেই এমনটা করেছেন। কলেজে এসে উত্তরপত্র ফিরিয়েও দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মমতো ওই উত্তরপত্র বাতিল হওয়ার কথা।
মঙ্গলবার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলিতে থ্রি-টায়ার পার্ট ১-এর শারীরশিক্ষার লিখিত পরীক্ষা ছিল। পাঁশকুড়া কলেজের পরীক্ষাকেন্দ্র হয়েছিল ঘাটাল কলেজে। পরীক্ষা শেষে খাতা মেলাতে গিয়ে শিক্ষকেরা দেখেন, ৫১টির মধ্যে ৫০টি খাতা রয়েছে। একটি খাতার হদিস নেই। পরীক্ষার্থীদের নামের তালিকা ঘেঁটে দেখা যায়, সৌরভ রায় নামে এক ছাত্র খাতা জমা দেননি। রাতে ঘাটাল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ঘাটাল কলেজের অধ্যক্ষ ভোলানাথ চট্টোপাধ্যায়। বিষয়টি জানানো হয় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও। অভিযোগ পেয়ে বুধবার সকালে যখন পুলিশ সৌরভের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছে, ঠিক তখনই ঘাটাল কলেজে এসে খাতা ফেরত দেন ওই ছাত্র। সৌরভের বক্তব্য, “ভুল হয়ে গিয়েছে। সকালে দেখি, ব্যাগের মধ্যে উত্তরপত্র। তার পরেই চলে এসেছি।” অধ্যক্ষও মানছেন, ভুল থেকেই এই ঘটনা। তিনি বলেন, “থানায় অভিযোগ করেছিলাম। পরে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছি।”
তিন ভাইয়ের মধ্যে সৌরভ মেজো। বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। সংসারে অনটন। তার মধ্যেই লেখাপড়া চালাচ্ছেন সৌরভ। বাড়ি ডেবরা থানার ডুঁয়ায়। পাঁশকুড়া কলেজের বিএ পাস কোর্সে প্রথম বর্ষের এই ছাত্র বলেন, “এমন সমস্যায় পড়তে হবে কখনও ভাবিনি।” কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল? সৌরভের কথায়, “উত্তরপত্রটি কার্ডবোর্ডে উপর ছিল। শিক্ষক যখন উত্তরপত্র নিচ্ছিলেন, তখন ব্যাগ আনতে ক্লাসরুমের বাইরে যাই। তার আগে কার্ডবোর্ড উল্টে রাখি। ফিরে এসে সেটি ব্যাগে ঢুকিয়ে নিই। ভেবেছিলাম, শিক্ষক উত্তরপত্র নিয়ে নিয়েছেন। উত্তরপত্র যে কার্ডবোর্ডে থেকে গিয়েছে, খেয়ালই করিনি। এ দিন সকালে ব্যাগ খুলে দেখি, বোর্ডের উপর উত্তরপত্র। ঠিক করি, ঘাটাল কলেজে গিয়ে উত্তরপত্র ফেরত দেব।” এ দিকে, উত্তরপত্রের হিসেব না মেলায় সমস্যায় পড়েছিলেন ঘাটাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। ক্লাসরুম তন্নতন্ন করে খোঁজা হয়। কিন্তু সৌরভের উত্তরপত্র মেলেনি। রাতে ঘাটাল থানায় লিখিত অভিযোগ জানান অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, “খাতার হিসেব না মিললে থানায় অভিযোগ জানাতেই হয়। এ দিন কলেজে এসে ওই ছাত্র অবশ্য খাতা ফেরত দিয়েছে। তারপর অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছে।”
এই ভুলের জন্য তাঁর উত্তরপত্র যাতে বাতিল করা না হয়, বুধবার কর্তৃপক্ষের কাছে সেই আর্জি রেখেছেন সৌরভ। তিনি বলেন, “জেনেবুঝে এ কাজ করিনি। ভুল হয়ে গিয়েছে।” অধ্যক্ষও মানছেন, “ছাত্রের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়নি, জেনেবুঝে খাতাটি বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। বিষয়টি আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” পাশাপাশি সৌরভকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন, ‘পরীক্ষা শেষে খাতাটি ব্যাগের মধ্যে থেকে গিয়েছিল। এ দিন সকালে তা ফেরত দিয়ে যাই।’ বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক নিরঞ্জন মণ্ডল বলেন, “ঠিক কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি।” আর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “এ ক্ষেত্রে নিয়ম মেনেই পদক্ষেপ করা হবে।”
সৌরভের আর্জি একটাই, এই ভুলের জন্য মস্ত মাশুল যেন গুনতে না হয়!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.