কর্তাদের হস্তক্ষেপে উঠে গেল মর্গ্যানের ফতোয়া
খুলে গেল গেট। উঠে গেল নিষেধাজ্ঞা। নতুন মরসুম শুরুর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়ে গেল মর্গ্যান-বিপ্লব।
বুধবার মরসুমের প্রথম অনুশীলনে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে গিয়ে দেখা গেল, ট্রেভর মর্গ্যানের কথা মতোই পেনদের অনুশীলনের সময় সাংবাদিকদের মাঠে ঢোকার ওপর নিষেধাজ্ঞা। চিত্র সাংবাদিকদের অবস্থা আরও খারাপ। মাঠে ঢুকতে দেওয়া তো দূরের কথা, গ্যালারি থেকে ক্যামেরা বের করলেও ছুটে আসছেন লাল-হলুদ কর্তারা। মাঠের ভিতর থেকে ভেসে আসছে মর্গ্যান এবং সহকারী কোচ অ্যালভিটো ডি’কুনহার চিৎকার, “আপনাদের বললাম না, এখানে ছবি তুলবেন না। আর কত বার বলব?” তার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে চিৎকার চেঁচামেচির মধ্যেই কেটে যায় অনুশীলন পর্ব। চতুর্দিকে ক্ষোভ আর হতাশা।
ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের সঙ্গে আলোচনায় মর্গ্যান। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
কিন্তু বেলা গড়াতেই বদলে গেল সব অঙ্ক। অনুশীলন শেষ। মাঠের মধ্যেই মর্গ্যানের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে দেখা গেল ইস্টবেঙ্গলের প্রধান কর্তা দেবব্রত সরকারকে। আলোচনা চলে প্রায় আধ ঘণ্টা। এমনকী সাংবাদিকদের জন্য যে আধ ঘণ্টা বেঁধে দিয়েছিলেন লাল-হলুদ কোচ, সেটাও পেরিয়ে যায়। পরে ক্লাব তাঁবুতে দাঁড়িয়ে দেবব্রতবাবু ঘোষণা করলেন, “বৃহস্পতিবার থেকে আর কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকছে না। সাংবাদিকরা অনুশীলনও দেখতে পারবেন। ছবিও তুলতে পারবেন। তবে একটাই অনুরোধ, মাঠে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সেটাকে যেন একটু দেখে প্রচার করা হয়।” বুঝতে অসুবিধা হল না, গত মরসুমে টোলগে-গুরবিন্দরের মারপিট-কাণ্ড এখনও মাথায় ঘুরছে ইস্টবেঙ্গল কোচ-কর্তাদের।
মর্গ্যান-ফতোয়া নিয়ে মাঠের বাইরে নাটকীয় মোড় থাকলেও, মাঠের ভিতরে স্বাভাবিক ছিল মর্গ্যানের অনুশীলন। ওপারা, চিডি, মেহতাব, গুরবিন্দর, হরমনজিৎ সিংহ খাবরা, মননদীপ সিংহ, লালরিন্দিকা ও সুশান্ত ম্যাথু অনুশীলনে আসেননি। বাকি যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের নিয়ে শুধু হালকা দৌড় ও ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ করেই উঠে পড়েন মর্গ্যান। অনুশীলনে নতুন মুখ বলতে অভিজিৎ মণ্ডল, অর্ণব মণ্ডল, জসপ্রীত, যশপাল, কেভিন লোবো ও সফর সর্দার। ইস্টবেঙ্গল কোচ বললেন, “সবে প্রথম দিন। বেশি প্র্যাক্টিস করিয়ে ফুটবলারদের মেরে ফেলতে চাই না।” সোমবার থেকে কল্যাণীতে ছ’দিনের শিবির করবে ইস্টবেঙ্গল। ওপারা, চিডি-সহ বেশির ভাগ ফুটবলারই থাকবেন সেই শিবিরে। থাকবেন অনূর্ধ্ব-২২ দলের ফুটবলাররাও।
কলকাতা ময়দানে টানা তিন বছর কোনও বিদেশি কোচকে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের মতো বড় দলে কোচিং করাতে দেখা যায়নি। সেই দিক থেকে দেখলে লাল-হলুদের ব্রিটিশ কোচ হ্যাটট্রিক করে নজির গড়লেন। কেমন অভিজ্ঞতা হল? মর্গ্যান হাসতে হাসতে বললেন, “হ্যাটট্রিক শুনতে ভাল লাগে। কাজটা এত সহজ ছিল না। প্রচুর ওঠা-নামার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।” অনুশীলনের প্রথম দিনে নিজের লক্ষ্যের কথাও জানালেন তিনি। বললেন, “আই লিগ জিততে চাই। দু’বার কাছাকাছি পৌঁছেও হাতে পাইনি। এ বার যা দল হয়েছে, তাতে কিন্তু ট্রফি জেতার ভাল সুযোগ আছে। দলে প্রচুর গভীরতা আছে।”
দল গঠন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও, প্রথম দল নিয়ে বেশ চিন্তায় মর্গ্যান। তাঁর কথায়, “প্রথম দলে কাকে রাখব, কাকে বাদ দেব বুঝতে পারছি না। ফুটবলারদের আরও পরিশ্রম করতে হবে। ওদের কাছেই বড় চ্যালেঞ্জ প্রথম দলে ঢোকার। আমার কাজ যারা সুযোগ পাবে না, তাদের খুশি রাখা।” মর্গ্যানকে ভাবাচ্ছে বেফারিং-ও। বলছিলেন, “গত বার বহু ম্যাচে রেফারির জন্য ভুগতে হয়েছে আমাদের। এ বার আমার সবচেয়ে বেশি ভয় রেফারিং নিয়েই।” আর স্বস্তি? “ফেডারেশন কাপের আগে চার-পাঁচটা কলকাতা লিগের ম্যাচ খেলার সুযোগ পাব। যেটা গত বার পাইনি।” আতঙ্ক, স্বস্তি, নজির, বিপ্লব। নতুন মরসুমে মর্গ্যানের প্রথম অনুশীলনে সব উপকরণই মজুত ছিল।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.