|
|
|
|
প্রণবকে সমর্থনের ‘অস্বস্তি’নিয়েই আন্দোলনে সিটু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
এক দিকে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে রাষ্ট্রপতি পদে সমর্থন। আবার তাঁরই আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন। এই ‘পরস্পর-বিরোধিতা’ নিয়ে সংগঠনের মধ্যেই প্রশ্ন ওঠায় অস্বস্তিতে পড়েছে সিপিএম। কিন্তু সেই অস্বস্তিকে সঙ্গী করেই ফের জোরদার আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু।
কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিআইয়ের ট্রেড ইউনিয়নগুলির সঙ্গে বৈঠক করে আজ সিটু নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশন ও শীতকালীন অধিবেশনের সময় বড়সড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও, তিন দিনের আইন অমান্য ও রেল রোকোর পরে দু’দিনের সাধারণ ধর্মঘট ডাকার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে ট্রেড ইউনিয়নগুলি। অন্যদের এতে সমস্যা না থাকলেও, সিটু-র শীর্ষ নেতারা তাঁদের ‘পরস্পর-বিরোধী অবস্থান’ নিয়ে সংগঠনের মধ্যে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। কারণ মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে আর্থিক সঙ্কটের মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য ইউপিএ সরকারকেই কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই ব্যর্থতার জন্য যদি অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ই দায়ী হন, তা হলে তাঁকে রাষ্ট্রপতি পদে সমর্থন জানানো হল কেন? আবার তার পরে তাঁর নীতির বিরুদ্ধে শ্রমিকদের আন্দোলনে নামতে বললেই বা তাঁরা কেন সাড়া দেবেন?
কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র নেতা জি সঞ্জীব রেড্ডি প্রথম থেকেই মনমোহন সরকারের আর্থিক নীতির বিরোধী। এআইটিইউসি নেতা গুরুদাস দাশগুপ্তও ভারমুক্ত। কারণ সিপিআই প্রণববাবুকে সমর্থনের রাস্তায় হাঁটেনি। তাই তাঁরা নির্দ্বিধায় বিজেপির শ্রমিক সংগঠন বিএমএস-এর সদর দফতরে গিয়ে বৈঠক করেছেন। কিন্তু সমস্যায় পড়েছেন সিটুর নেতারা। তাঁরা সিপিএমের দলীয় সিদ্ধান্তের শরিক। সিটু-র সভাপতি এ কে পদ্মনাভন পলিটব্যুরোর সদস্য। পলিটব্যুরোর বৈঠকে তিনি প্রণবকে সমর্থনের বিরুদ্ধে মত দিলেও খোদ প্রকাশ কারাট আলিমুদ্দিনের পক্ষ নেওয়ায় লাভ হয়নি। সিটু-র সাধারণ সম্পাদক তপন সেনও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। কাজেই তাঁদের পক্ষে প্রণবকে সমর্থনে দলের সিদ্ধান্ত থেকে নিজেদের আলাদা করে দেখানো সম্ভব নয়। প্রকাশ্যে অবশ্য সিটু-নেতারা অস্বস্তির কথা মানছেন না। তপনবাবুর যুক্তি, “যে বিবৃতিতে প্রকাশ কারাট প্রণবকে সমর্থনের কথা জানিয়েছিলেন, সেই একই বিবৃতিতে তিনি ইউপিএ সরকারের আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথাও বলেছিলেন।” সংগঠনের মধ্যে ওঠা প্রশ্ন নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “কারও কারও এই বিভ্রান্তি থাকতে পারে। তার জন্য আন্দোলন গড়ে তোলায় সমস্যা হচ্ছে না।” আজ সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৪ সেপ্টেম্বর দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে সমস্ত ট্রেড ইউনিয়নের জাতীয় সম্মেলনে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক হবে। এআইটিইউসি নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত বলেন, “১০০ দিনের কাজের মতো সামাজিক প্রকল্পে বাজেটে বরাদ্দ অর্থেও কাটছাঁট করছে মনমোহন সরকার। ডিজেলের মূল্য নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা বা খুচরোব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগের মতো পদক্ষেপ রূপায়ণের চেষ্টা হচ্ছে। সেই কারণেই আমরা ব্যাপক ও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলে চাইছি।” |
|
|
|
|
|