শহর জুড়ে, বিশেষত বাঁকা নদীর দু’পাড়ে অবাধে অবৈধ নির্মাণ চলছে বলে অভিযোগ করলেন বর্ধমানের তৃণমূল কাউন্সিলরেরা। গোষ্ঠী-কোন্দল সরিয়ে রেখে বুধবার একযোগে পুরপ্রধানের কাছে স্মারকলিপিও দিলেন তাঁরা।
তৃণমূলের অভিযোগ, বর্ধমান শহরের ৩৫টি ওয়ার্ডে রমরমিয়ে অবৈধ নির্মাণ চলছে। তার চাপে বাঁকা নদীর প্রায় লুপ্ত হওয়ার দশা। ফলে, চাপ পড়ছে নিকাশির উপরেও। গত রবিবার বিকেলে দু’ঘন্টার বৃষ্টিতে প্রায় গোটা শহর জলমগ্ন হয়ে পড়ে। নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক করার ব্যাপারে পুরসভাকে অবিলম্বে নজর দিতে হবে বলেও দাবি তোলা হয়েছে।
পুরসভার বিরোধী দলনেতা সমীরকুমার রায়ের অভিযোগ, “এই শহরে মোটামুটি এক বছরে ১১০০-র মতো অবৈধ নির্মাণ হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে থান পনেরো বাণিজ্যিক ভবন। কয়েকটি অবৈধ নির্মাণ ভাঙার ব্যাপারে পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হওয়া সত্ত্বেও সেগুলি ভাঙা হয়নি।” তবে কোথায় ওই সব বাণিজ্যিক ভবন তৈরি হয়েছে তা তিনি নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি। ঘটনা হল, পুরসভার তরফে তাঁর নেতৃত্বেই একটি তদারকি কমিটি করা হয়েছিল। কিন্তু সমীরবাবুর দাবি, “ওই কমিটি শুধু কাগজে-কলমেই ছিল। অবৈধ নির্মাণের ব্যাপারে আমার কাছে কোনও তথ্যই পাঠানো হয়নি।”
সাম্প্রতিক অতীতে বর্ধমান শহরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। এমনকী সংঘর্ষও হয়েছে। কিন্তু এ দিন সমীরবাবু ছাড়াও শঙ্করী ঘোষ, রত্না রায়, খোন্দেকার মহম্মদ শহিদুল্লাহ ও খোকন দাস পুরসভায় যান। শহর যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি খোকনবাবুর দাবি, “অবৈধ নির্মাণ রুখতে ও নিকাশির উন্নতির জন্য আমরা বহুবার পুরসভার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু কখনও পুলিশের সাহায্য মিলছে না, কখনও পরিকাঠামো নেই এ সব অজুহাতে পুরপ্রধান প্রসঙ্গটি এড়িয়ে গিয়েছেন। সম্ভবত এই সব অবৈধ নির্মাণের নেপথ্যে রয়েছে আর্থিক লেনদেন।”
বর্ধমানের পুরপ্রধান আইনূল হক অবশ্য বলেন, “অবৈধ নির্মাণ রুখতে আমরা বরাবরই সচেষ্ট। তবে বেশ কয়েক বার পুলিশের সহযোগিতা না পেয়ে অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে পারিনি। রবিবার শহরের অতিবর্ষণ হয়েছিল। তারই জেরে কিছু জায়গায় জল জমে। যায়। তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জল সরে গিয়েছিল। বর্ষার আগেই আমরা সমস্ত নিকাশি নালা সাফাইয়ের ব্যবস্থা করেছি।” পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “পুরসভা হঠাৎ বললে হয়তো কিছু ক্ষেত্রে পুলিশের পক্ষে যাওয়া সম্ভব হয় না। আগাম বলে রাখলে অবশ্যই পুলিশ যাবে।” |