এক বছর আগে রাস্তার গর্ত থেকে বাঁচতে বাস ব্রেক কষায় খোলা দরজা দিয়ে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছিল এক স্কুলছাত্রী।
বছর ঘুরলেও রাস্তার হাল কিন্তু বিশেষ বদলায়নি। দুর্গাপুর থেকে ইছাপুর যাওয়ার রাস্তায় হেতেডোবা-জব্বরপল্লির কাছে রাস্তার ওই অংশ এখনও খানাখন্দে ভরা। তার মধ্যে জল জমায় পরিস্থিতি আরও খারাপ এখন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অবিলম্বে রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। রাস্তাটি সংস্কারের ব্যাপারে পূর্ত দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, রাস্তাটি ইসিএলের। ইসিএলের তরফে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
দুর্গাপুর থেকে বেরিয়ে জব্বরপল্লির ভিতর দিয়ে রাস্তাটি চলে গিয়েছে ইছাপুরের দিকে। লাউদোহা, ঝাঁঝড়া, ইছাপুর, সরপি, পান্ডবেশ্বর, উখড়া প্রভৃতি গ্রামের বাসিন্দাদের স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল বা প্রশাসনিক কাজে দুর্গাপুর আসতে এই রাস্তাটিই ব্যবহার করতে হয়। দুর্গাপুর স্টেশন যাওয়ার রাস্তাও এটা। রাস্তার আশপাশে বেশ কয়েকটি শিল্প-কারখানাও গড়ে উঠেছে। সেইসব কারখানার মালপত্র পৌছনো বা নিয়ে যাওয়ার কাজে ভারি লরি চলাচল করে এই রাস্তায়। তাছাড়া বাস, মিনিবাস, গাড়ি, মোটরবাইক, পুলকার, স্কুলবাস, ও লরির যাতায়াত তো লেগেই রয়েছে। |
অথচ বর্ষা আসতেই রাস্তাটির অবস্থা বেহাল। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পুরো রাস্তাটাই খানাখন্দে ভরা। তার উপর দিয়েই চলছে যানবাহন। ভাঙ্গা রাস্তা ও যানবাহনের চাকা থেকে ছিটকে বেরোনো কাদা বাঁচিয়ে মোটরবাইক আরোহীরা যাচ্ছেন। স্কুল বাস ও পুলকারও ছুটছে তার উপর দিয়েই। আর তাতেই এক বছর পুরোনো স্মৃতি টাটকা হয়ে উঠছে বাসিন্দাদের। ইসিএলের স্কুলবাসে চড়ে বাড়ি ফেরার সময় চালক হঠাৎ ব্রেক কষলে ছিটকে বাইরে পড়ে করুণা। বাসকর্মীরা তার রক্তাক্ত দেহ ভিতরে তুলে সহপাঠীদের সামনে দিয়েই রওনা হয়ে যায়। পুলিশকে চালক জানিয়েছিল, দ্রুতবেগে যাওয়ার সময় হঠাৎ বড় গর্ত সামনে চলে আসাতেই ব্রেক কষেন তিনি। তাই এমন দুর্ঘটনা। ফের যাতে এমন দুর্ঘটনা আর না ঘটে সেজন্যই দ্রুত রাস্তা সংস্কারের দাবি বাসিন্দাদের। হেতেডোবার বাসিন্দা অনিমা বাগ, সন্ন্যাসী দাস’রা বলেন, “আমাদের ছেলে-মেয়েরাও দুর্গাপুরের স্কুলে পড়ে। ওরাও বাসে করে ফেরে। যতক্ষণ বাড়ি না ফেরে ভয়ে ভয়ে থাকি। বারবার মনে পড়ে যায় পুরোনো ঘটনা”
রাস্তার দশা এমনই যে রাস্তায় মিনিবাস চালানো সম্ভব কিনা তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন বাস মালিকেরা। মিনিবাস মালিকদের একটি সংগঠনের তরফে কাজল দে জানান, ওই রাস্তায় যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া বাসের যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ায় পরিবহনের খরচও বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “অবিলম্বে রাস্তা সংস্কার করা না হলে আর কত দিন মিনিবাস চালানো যাবে জানি না।”
ইসিএল জানিয়েছে, রাস্তাটি সংস্কারের ব্যাপারে প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এডিডিএ’র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের আর্জি জানাবেন তিনি। |