স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প বাতিল, কাজ বন্ধের নোটিস প্রত্যাহার ও উৎপাদন চালু করার দাবিতে লাগাতার বিক্ষোভ অবস্থান শুরু করলেন ডিসেরগড় পাওয়ার সাপ্লাই কর্পোরেশনের (ডিপিএসসি) চিনাকুড়ি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের শ্রমিকেরা। আইএনটিটিইউসি, আইএনটিইউসি, সিটু এবং এআইটিইউসি-র যৌথ ভাবে গড়া ‘চিনাকুড়ি পাওয়ার স্টেশন বাঁচাও কমিটি’র নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ চলছে। বুধবার কমিটির নেতারা জানান, দাবি পূরণ না হওয়া অবধি বিক্ষোভ চলবে।
ডিপিএসসি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত নভেম্বর থেকেই চিনাকুড়ির ওই কেন্দ্রটিতে কোনও উৎপাদন হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষের দাবি, ইসিএলের কাছ থেকে পাওয়া তাদের ২০ বছরের লিজের মেয়াদ গত বছর মার্চেই শেষ হয়ে গিয়েছে। ইসিএল লিজের মেয়াদ বাড়ায়নি। কয়লা দেওয়াও বন্ধ করেছে। এই অবস্থায় চিনাকুড়ির এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে হাত গুটিয়ে নিয়েছেন ডিপিএসসি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত নভেম্বর থেকে শ্রমিকদের কার্যত বসিয়ে বেতন দিতে বাধ্য হচ্ছে ডিপিএসসি। ডিপিএসসি-র প্রেসিডেন্ট (কর্পোরেট) সোমেশ দাশগুপ্ত বলেন, “শ্রমিক-কর্মীদের বসিয়ে বেতন দেওয়া আর সম্ভব হচ্ছে না। তাই স্বেচ্ছাবসরের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু শ্রমিক-কর্মীরা কেউ স্বেচ্ছাবসর নিতে রাজি না হওয়ায় ২৩ জুলাই থেকে কাজ বন্ধের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, যে শ্রমিকেরা স্বেচ্ছাবসর নেননি, ২৩ জুলাইয়ের পর থেকে তাঁরা বেতন ও অন্য ভাতা পাবেন না। |
এর পরেই শ্রমিকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন। এ দিন সকাল থেকে সংস্থার ঝালবাগান সদর কার্যালয়ের গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, ইসিএলের কাছ থেকে ফের লিজ নিয়ে কেন্দ্রটি চালাক ডিপিএসসি। প্রত্যাহার করা হোক স্বেচ্ছাবসরের নোটিস ও কাজ বন্ধের বিজ্ঞপ্তি। কিন্তু ডিপিএসসি-র বক্তব্য, কেন্দ্রটি লিজে দেওয়ার জন্য ইসিএল সম্প্রতি যে ‘গ্লোবাল টেন্ডার’ ডেকেছে, তাতে এমন কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে যা তাদের পক্ষে মানা সম্ভব নয়। তাই ফের এই কেন্দ্রের লিজ নেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প ও কাজ বন্ধের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারেরও সম্ভাবনা নেই।
বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়ে কুলটির তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেন, “আধিকারিকদের একাংশ কেন্দ্রটি চালাতে চাইছেন না বলেই যত সমস্যা হচ্ছে। আমরা এটা বন্ধ করতে দেব না। আমি মন্ত্রী পর্যায়ে কথা বলছি। আশা করি, দ্রুত সমাধান সূত্র মিলবে।” চারটি শ্রমিক সংগঠনের পক্ষে আইএনটিটিইউসি-র সম্পাদক চন্দন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে কাজ হারানো শ্রমিক-কর্মীরা ঘর সংসার নিয়ে অথৈ জলে পড়বেন।” সিটু-র চিনাকুড়ি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র শাখা সম্পাদক গৌর দত্তের হুঁশিয়ারি, “ডিপিএসসি স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প বাতিল করে কাজ বন্ধের নোটিস প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।” |