আলু ভর্তি ট্রাক নিয়ে আগরতলা যাবার পথে আলিপুরদুয়ারের তিন বাসিন্দার মৃতদেহ উদ্ধার হল অসমে। গত ২৯ জুন থেকে আলিপুরদুয়ার শহরের তিন বাসিন্দা পেশায় ট্রাক চালক ও খালাসি নিখোঁজ ছিলেন। শনিবার দুপুরে ট্রাকের মালিক ট্রাক-সহ তিন কর্মীর নিখোঁজের ব্যাপারে আলিপুরদুয়ার থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। পুলিশ জানায়, নিহতদের নাম মনা দেবনাথ (৩৮), পল্টন রায় ৫৫) এবং জয়ন্ত দাস (২২)। প্রথম দু’জন নিখোঁজ ট্রাকের চালক ছিলেন। অন্যজন খালাসি। আলিপুরদুয়ার থানার আইসি স্বপন কুমার ঘোষ বলেন, “শনিবার দুপুরে ওই তিনজনের নিখোঁজ থাকার বিষয় অভিযোগ জমা দেন ট্রাক মালিক পপি দাস। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে অসমের নলবাড়ি এলাকায় এই তিনজনের মৃতদেহ অসম পুলিশ ১ জুলাই উদ্ধার করেছে। নিখোঁজদের সহকর্মীরা অসমে রওনা দিয়েছেন। তারা ফিরে এলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। কী করে ঘটনাটি ঘটল তা জানতে অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।” ট্রাক মালিক পুলিশকে জানিয়েছেন, শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ট্রাক চালক মনা দেবনাথ, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ট্রাক চালক পল্টন রায় এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা খালাসি জয়ন্ত দাস ২৯ জুন পুন্ডিবাড়ি থেকে আলু নিয়ে আগরতলার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। চালক ও খালাসির সঙ্গে তাঁর শেষ কথা হয়েছে ২৯ জুন। তার পর থেকে ট্রাক চালক ও কালাসির মোবাইল সুইচ অফ ছিল। ট্রাক মালিক বলেন, “বহু বার ফোন করেও চ্লাক ও খালাসিদের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। ভেবেছিলাম বৃষ্টির দিনে তাঁরা কোথাও গাড়ি নিয়ে আটকা পড়েছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি আগরতলায় আলু পৌঁছয়নি। তার পরেই শনিবার দুপুরে আলিপুরদুয়ার থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করি।” বিকেলের দিকে ট্রাক মালিক জানতে পারেন অসমে তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের লোকেরা অসম পুলিশের কাছে ছবি দেখে ওই তিনজনকে শনাক্ত করেন। ট্রাক চালাক পল্টন রায়ের ছেলে দীপঙ্কর রায় জানান, তাঁর বাবা বাড়ি বাইরে থাকলেও ফোনে যোগাযোগ রাখতেন। এ বারা যোগাযোগ করেননি। তিনি বলেন, “অসমে মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে দাদা ও জামাইবাবু অসম পুলিশের কাছে ছবি দেখে বাবার মৃতদেহ শনাক্ত করেন। অসম পুলিশ মৃতদেহগুলি মাটিতে পুঁতে দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। আমরা মৃতদেহগুলি আনার চেষ্টা করছি।” গাড়ির অন্য চালক মনা দেবনাথের দত্তপট্টি এলকার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকের ছায়া। তাঁর স্ত্রী সরস্বতী দেবনাথ বলেন, “২৯ তারিখ রাতে শেষবার কথা হয়। সেই সময় তিনি জানান অসমের বিজনি এলাকায় রয়েছেন। তারপর আর যোগাযোগ হয়নি।” খালাসি জয়ন্ত দাসের মা কল্পনা দাস বলেন, “ছেলে বাইরে কাজে গেলে বাড়ির পাশের দোকানে ফোন করে খবর দিত। এ বার কোনও খবর না দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল কিছুই বুঝতে পারছি না।” |