মনোনয়নপত্র তুলতে যাওয়া দলীয় প্রার্থীদের সঙ্গী হয়ে ‘আক্রান্ত’ হয়েছেন দলের প্রাক্তন সাংসদ। মনোনয়ন জমা দেওয়া প্রার্থীর বাড়িতে ‘হামলা’ হয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে প্রার্থীকে ‘একঘরে’ করার ‘হুমকি’ও দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিরুদ্ধে এমনই নানা সন্ত্রাসের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আসন্ন ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) ভোটে দলের সমস্ত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার কথা ভাবছে সিপিএম।
রবিবার সিপিএমের দার্জিলিং জেলার কার্যকরী সম্পাদক জীবেশ সরকার এবং সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা গোড়া থেকে বলছিলাম, দার্জিলিং পাহাড়ে অবাধ ভোটের পরিবেশ তৈরি হয়নি। এখন রোজই আমাদের পাহাড়ের নেতা-কর্মীদের যে ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের উপরে হামলা হচ্ছে, তাতে সব প্রার্থী প্রত্যাহার করার কথা ভাবতে হচ্ছে।” অশোকবাবু বলেন, “মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর্ব মিটলে আমরা পাহাড়ের নেতা-কর্মী ও রাজ্য কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে ওই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।”
জিটিএ-র ভোট হবে ৪৫টি আসনে। এ দিন পর্যন্ত মোর্চা ৪৪, সিপিএম ১১, তৃণমূল সমর্থিত নির্দল ৩ এবং ১টি আসনে এক নির্দল মনোনয়ন দাখিল করেছেন। আজ, সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার শেষ দিন ১২ জুলাই।
ইতিমধ্যে অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগ, সিপিআরএম, কংগ্রেস, জিএনএলএফ, গোর্খাল্যান্ড টাস্ক ফোর্স ভোটে যোগ দিতে আগ্রহী নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, অন্তত ১৫টি আসনে প্রার্থী দিতে চান দলের দার্জিলিং জেলা নেতৃত্ব। কারণ, সিপিএম শেষ মুহূর্তে সব প্রার্থী প্রত্যাহার করতে পারে এবং দু’-চার জন নির্দল মোর্চার ‘অনুরোধে’ সরে দাঁড়াতে পারেনএমন অনুমান করছেন দলের নেতারা। সেই পরিস্থিতিতে মোর্চা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিটিএ দখল করলে পাহাড়ে ‘ভোটের নামে প্রহসন’ হয়েছে বলে বিরোধীরা লাগাতার প্রচার চালাবেন, এমন ‘আশঙ্কা’ করছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের কথায়, “কম হলেও জিটিএ ভোটে প্রার্থী দেব। ভোটটা যেন ভোটের মতো হয়।”
শনিবারই মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ দাবি করেন, জিটিএ-র ৪৫টি আসনেই তাঁরা জিতবেন। তা হলে মোর্চার বিরুদ্ধে বিরোধীদের এত অভিযোগ কেন? মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিনয় তামাংয়ের বক্তব্য, “মারধর, হুমকির ঘটনায় আমাদের কেউ জড়িত নন। পাহাড়ে মোর্চা ছাড়া কারও গ্রহণযোগ্যতা নেই। পাহাড়ে এখন সিপিএমের সংগঠন নেই। তাই তারা মিথ্যা অভিযোগে দুর্বলতা ঢাকার চেষ্টা করছে।” |