|
|
|
|
নৈহাটিতে উত্তেজনা |
নারকেল চুরি, মারে মৃত্যু কিশোরের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ব্যারাকপুর |
গাছ থেকে পড়া নারকেলের দখল নিয়ে মারের চোটে মৃত্যু হল এক কিশোরের। রাহুল ভট্টাচার্য (১৫) নামে ওই কিশোরের বাড়ি নৈহাটির ঠাকুরপাড়ায়। রাহুলের বাবা-মা প্রতিবেশী সন্দীপন বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে রানার বিরুদ্ধে থানায় ছেলেকে খুনের অভিযোগ দয়ের করেছেন। অভিযোগ, সন্দীপন শুক্রবার রাহুলকে মারধর করে তার মাথা ঠুকে দেয় দেওয়ালে। সেই রাত থেকেই রাহুল অসুস্থ হয়ে পড়ে। রবিবার তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে
|
রাহুল। |
রাস্তাতেই সে মারা গিয়েছে। রাহুলের মৃত্যুর খবর পেয়ে এই দিন এলাকার কিছু বাসিন্দা সন্দীপনদের বাড়িতে চড়াও হন। বাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। সন্দীপনের মোটরসাইকেলটিও পুড়িয়ে দেন তাঁরা। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তবে সন্দীপনদের বাড়িতে তখন কেউ ছিলেন না। ঘটনার পর থেকেই তাঁরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। এই দিন অবশ্য পরে এলাকা থেকেই সন্দীপনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় মহেন্দ্র হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রাহুল ওই দিন দুপুরে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে সন্দীপনদের বাগানে গিয়ে গাছ থেকে একটি নারকেল পড়তে দেখে। নারকেল কুড়িয়ে সে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। এ দিকে, নারকেল পড়ার আওয়াজ পেয়ে তখনই বেরিয়ে আসেন সন্দীপনও। রাহুলের হাতে নারকেল দেখে তাকে মারধর শুরু করে। ভয়ে রাহুলের অন্য বন্ধুরা পালিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাহুলকে মারতে মারতে স্থানীয় ক্লাবঘরের কাছে নিয়ে যায় সন্দীপন। |
|
কান্নায় ভেঙে পড়েছে রাহুলের পরিবার। |
সেখানে দেওয়ালে সজোরে তার মাথা ঠুকে দেওয়া হয়। ক্লাবের পাশেই রাহুলদের বাড়ি। হইচই শুনে তার মা বেরিয়ে দেখেন ছেলেকে মারছেন সন্দীপন। তিনি বাধা দিলে সন্দীপন চলে যান। রাহুলের মা কণিকা দেবী বলেন, “শুক্রবার রাত থেকেই ছেলের জ্বর আসে। সেই সঙ্গে কানের দু’পাশ ফুলে যায়। বলে মাথা ঘুরছে। শনিবার ওকে হোমিওপ্যাথ ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। কিন্তু ডাক্তার ছিলেন না। ফলে কোনও ওষুধই দিতে পারিনি। রবিবার অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় সবাই হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। যাওয়ার সময় রাস্তাতেই অজ্ঞান হয়ে যায় ও। হাসপাতালে গেলে ডাক্তারবাবুরা জানান, ও মারা গিয়েছে।” কথা শেষ করেই কেঁদে ওঠেন কণিকাদেবী।
স্থানীয় বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, “পরিবারটি হতদরিদ্র। ছেলেটির বাবা যে জুটমিলে কাজ করতেন তা দীর্ঘদিন বন্ধ। এমন অবস্থা যে মৃতদেহ সৎকারের সামান্য টাকা নেই। আমরাই মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করেছি। ওই-ই ছিল একমাত্র সন্তান। ঘটনাটি দুঃখজনক।”
|
—নিজস্ব চিত্র |
|
|
|
|
|