স্ত্রী-মেয়ের সামনেই গুলিতে খুন যুবক
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সফরে এসে প্রশাসনিক কাজে সন্তোষ প্রকাশ করার ২৪ ঘণ্টা না কাটতেই পুলিশ পরিচয়ে বাড়িতে ঢুকে স্ত্রী ও দুই মেয়ের সামনে গুলি করে, বোমা ছুড়ে খুন করা হল এক ব্যক্তিকে। শনিবার গভীর রাতে, উত্তর ২৪ পরগনার ঘোলার নবপল্লিতে। তবে রবিবার ভোর পর্যন্ত স্থানীয় ঘোলা থানা ঘটনার খবরই পায়নি।
পুলিশ জানায়, নিহতের নাম নিতাই হালদার (৩৫)। একটি দস্তানা কারখানার কর্মী নিতাইয়ের সঙ্গে কিছু সমাজবিরোধীর যোগাযোগ ছিল বলে পুলিশের দাবি। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের দাগী দুষ্কৃতী গোবিন্দ সাহার সঙ্গেও নিতাইকে দেখা গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। গোবিন্দর এক সময়ের সঙ্গী, পেশাদার খুনি ত্রিনাথ বরের ভাই জগন্নাথ তার দলবল নিয়ে নিতাইকে খুন করেছে বলে অভিযোগ। বেলঘরিয়ার এডিসি বিশ্বজিৎ ঘোষ ও এসিপি-২ মৌমিতা বিশ্বাসের নেতৃত্বে তল্লাশি চালিয়ে রবিবার জগন্নাথকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ঘটনাস্থল থেকে মিলেছে দু’টি ওয়ান শটার ও একটি মোবাইল।
নিতাইয়ের স্ত্রী সঞ্জিতা পুলিশকে জানান, শনিবার রাত ২টো নাগাদ দুষ্কৃতীরা চড়াও হয়। তারা প্রথমে নিতাইয়ের নাম ধরে গালিগালাজ করতে থাকে। নিতাই দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে পালাতে বললেও ততক্ষণে বাড়ি ঘিরে ফেলে দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়। এর পরে দরজা ভেঙে ঢুকে নিতাইয়ের চুলের মুঠি ধরে বার করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেন সঞ্জিতা ও দুই মেয়ে রূপা এবং সোনা। সঞ্জিতা বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা ঘিরে ফেলতেই আমার স্বামী বুঝেছিল জগন্নাথ লোকজন নিয়ে এসেছে। ওকে বললাম, তুমি পালাও। কিন্তু ততক্ষণে ওরা ঢুকে পড়েছে। আমার মাথায় পিস্তলের বাঁট দিয়ে মেরে ঠেলে ফেলে এক জন। আর এক জন বোমা ফাটাল। হুঁশ ফিরতে বাইরে গিয়ে দেখি, স্বামীর দেহ উঠোনে পড়ে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে গোটা জায়গা।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে দুষ্কৃতী-তাণ্ডব চললেও বৃষ্টির শব্দে তাঁরা কিছু শুনতে পাননি। রবিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নিতাইয়ের ঘরের সামনে চাপ চাপ রক্ত। মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা সঞ্জিতা ঘরের সামনে বসে। বেলঘরিয়ার এডিসি বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘এক অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে।’’ কিছু দিন আগে অশোকনগরে খুন হন ঘোলার দুই বাসিন্দা সুদেব মণ্ডল ও মান্তু ওরফে রাজা। সেই ঘটনার সঙ্গে এই খুনের সম্পর্ক আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শনিবার রাতের এই ঘটনা নিয়ে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে গত ছ’মাসে মোট খুনের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৬। অধিকাংশেরই কিনারা করতে ব্যর্থ পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, ঘোলার ঘটনার মতো সর্বত্র প্রত্যক্ষদর্শীর অভাবই খুনের কিনারায় দেরি করাচ্ছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তার কথায়, “শিল্পাঞ্চলে রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা রমরমিয়ে বাড়ায় উঠতি মস্তানদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। শাসকদলের একাংশের মদতে তারা রাজনৈতিক ছত্রছায়াও পাচ্ছে। তাই এদের ধরতেও সমস্যা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.