কয়লা চুরি ও পাচারে অভিযুক্ত কুলটির কানাই দাসকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার রাতে কুলটির চৌরঙ্গি এলাকা থেকে তাকে ধরা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে অবৈধ কয়লা কারবার ছাড়াও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া ও মারধরের অভিযোগ রয়েছে বলে জানান আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের এসিপি চন্দ্রশেখর বর্ধন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বরাকর সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমান্তের ডুবুরডিহি চেকপোস্ট থেকে কুলটির চৌরঙ্গি পর্যন্ত এলাকায় কারবার চালাত বছর সাতচল্লিশের কানাই। ইসিএল এবং বিসিসিএলের বেশ কিছু খনি থেকে কয়লা চুরি করত সে। সে সব কয়লা মজুত করত নানা গুল কারখানায়। খনি ও শিল্পাঞ্চলে কমিশনারেট গঠনের পরে একে একে ধরা পড়েছে জয়দেব মণ্ডল, কালে সিংহ, রাজু ঝা, কমল দাসেদের মতো ‘মাফিয়া’রা। গত ৪ জুন কানাইকে ধরতে কুলটির সবনপুরে তার বাড়িতে অভিযানে যায় পুলিশ। কিন্তু বাড়ির কিছুটা আগেই এক দল দুষ্কৃতী পুলিশের উপরে চড়াও হয়। প্রহৃত হন পুলিশকর্মীরা। ছিনিয়ে নেওয়া হয় আগ্নেয়াস্ত্রও। পুলিশ জানায়, এই ঘটনার পরেই এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেয় কানাই। |
এসিপি (ডিডি) চন্দ্রশেখর বর্ধন জানান, পুলিশের কাছে খবর ছিল, শনিবার রাতে কানাই সবনপুরের বাড়িতে ফিরবে। আগের বার গ্রামের বাড়িতে তাকে ধরতে গিয়ে হামলার মুখে পড়ায় এ বার আর সেই ঝুঁকি নেয়নি পুলিশ। গ্রামে ঢোকার আগেই তাকে ধরার পরিকল্পনা হয়। সেই মতো চৌরঙ্গি এলাকায় ফাঁদ পেতে কানাইকে ধরে ফেলে পুলিশ। চন্দ্রশেখর বর্ধন বলেন, “ধৃতের বিরুদ্ধে অবৈধ কয়লা চুরি ও পাচার ছাড়াও বেআইনি অস্ত্র রাখা, পুলিশকে মারধর এবং কর্তব্যে বাধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।” আসানসোল-দুর্গাপুরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার শীষরাম ঝাঝারিয়া জানান, পুলিশের উপরে কানাইয়ের সাঙ্গোপাঙ্গোদের আক্রমণের ঘটনায় ইতিমধ্যেই ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশের একটি সূত্রে জানা যায়, কানাইকে ধরতে গিয়ে পুলিশের প্রহৃত হওয়ার ঘটনায় অসন্তুষ্ট ছিলেন পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ। অভিযানের খবর দুষ্কৃতীরা আগে থেকে কী ভাবে পেল, সে নিয়ে তিনি ঘনিষ্ঠ মহলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন বলেও জানা যায়। ঘটনাচক্রে, ওই ঘটনার কিছু দিন পরেই কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে কুলটির আইসি সঞ্জীব দে, চৌরঙ্গি ফাঁড়ির ওসি প্রদীপ দন্ডপাট ও এক কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়।
রবিবার ধৃত কানাই দাসকে আসানসোল আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতকে জেরা করে অবৈধ কয়লা কারবার সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জানার চেষ্টা করা হবে। |