ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং কলেজ কর্মীদের ঘর থেকে বাইরে বের করে দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য অফিসে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলনে নামল ছাত্র পরিষদ। বৃহস্পতিবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট কলেজের ঘটনাটি ঘটে।
পরীক্ষার পুনর্মূল্যায়নের ফলাফল দ্রুত প্রকাশ এবং পরীক্ষার হোম সেন্টার বদলের বিরুদ্ধে ছাত্র পরিষদের কলেজ ইউনিটের কর্মীরা এ দিন বেলা ১টা থেকে অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এর পর অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন। ঘন্টা খানেক পরে অধ্যক্ষ-সহ কলেজের অফিসঘর থেকে অশিক্ষক কর্মীদের বের করে দেওয়া হয়। ঝোলানো হয় তালা। সমস্ত প্রশাসনিক কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। |
তালা লাগানো হচ্ছে কলেজের গেটে। ছবি: অমিত মোহান্ত |
ওই অফিস ভবনেই টিচার্স-রুম। ফলে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন। ছাত্র পরিষদের ওই জঙ্গি আন্দোলনের জেরে কলেজে গরিব ছাত্রছাত্রীদের হাফ ফ্রি-ফুল ফ্রি প্রক্রিয়ার কাজও বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রতিবাদে সরব হন বাম ছাত্র সংগঠনের নেতারা। বালুরঘাট কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিনয় রবিদাস বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন করতেই পারে। কিন্তু যে ভাবে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হল, তা মেনে নেওয়া যায় না।” ছাত্র পরিষদের কলেজ ইউনিটের সভাপতি সৌরভ প্রসাদ অভিযোগ করেন, গত বছর ডিসেম্বরে কলেজের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার পর বহু ছাত্রছাত্রীর ফল অসম্পূর্ণ রয়ে গিয়েছে। এর পর পুনর্মূল্যায়নের জন্য কলেজের বহু ছাত্রছাত্রী আবেদন করলেও আজও তার ফল প্রকাশ হয়নি। এতে সমস্যায় পড়েছে পড়ুয়ারা! সৌরভের কথায়, “হঠাৎ করে এ বছর বালুরঘাট কলেজের ছাত্রছাত্রীদের গঙ্গারামপুর কলেজে পরীক্ষা কেন্দ্র করে দেওয়ায় গ্রামের গরিব পড়ুয়ারা সমস্যার মুখে পড়বে। ছাত্রদের স্বার্থেই তালা মেরে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।”
এসএফআইয়ের কলেজ ইউনিট সম্পাদক মৃণালকান্তি দত্ত বলেন, “ছাত্র পরিষদের দাবির সঙ্গে আমরা একমত। তবে যে পদ্ধতিতে ওরা আন্দোলন করল, তাকে আমরা সমর্থন করি না।” পিএসইউ নেতা তথা কলেজ সংসদের সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ সাহা বলেন, “পরীক্ষার হোম সেন্টার পরিবর্তন করে কর্তৃপক্ষ অনৈতিক কাজ করেছেন। ছাত্র পরিষদের সঙ্গে আমরাও একমত। তবে অধ্যক্ষ এবং অশিক্ষক কর্মীদের ঘর থেকে বের করে দিয়ে তালা দেওয়ায় আমাদের সায় নেই।” তৃণমূল নেতা রথীন দে সরকারের বক্তব্য, “পরীক্ষার পর এক মাসের মধ্য পুনর্মূল্যায়নের ফল প্রকাশ না হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা চরম বিপাকে। আমরাও পরীক্ষা কেন্দ্র বদলের বিরুদ্ধে। কিন্তু কলেজের কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়ে ছাত্র পরিষদের ওই আন্দোলনকে আমরা সমর্থন করি না।” |