চিকিৎসকদের একাংশের গাফিলতিতে ফের শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের মেডিসিনের বহির্বিভাগ বন্ধ রাখার অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার ওই ঘটনায় অনেক রোগীকে ফিরে যেতেও হয়েছে। চিকিৎসকদের একাংশ নির্দেশ না মানায় সমস্যা হচ্ছে বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সুপার। সোমবার এক চিকিৎসক ছুটিতে থাকায় হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ ছিল। ভারপ্রাপ্ত সুপার প্রদীপ সরকার বলেন, “কৃষ্ণেন্দু দেকে এ দিন মেডিসিন বিভাগে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিনি যাননি। পারস্পরিক বোঝাপড়ায় ওই বিভাগেরই চিকিৎসক সতীর্থ শীর্ষেন্দু পালকে তিনি যেতে বলেছেন বলে জানিয়েছিলেন। তখনই তাঁকে বলেছিলাম আপনার দায়িত্ব। কে যাবেন তা আপনাকে দেখতে হবে। তার পরেও বহির্বিভাগ বন্ধ থাকবে মানতে পারছি না। কৈফিয়ত চাইব। চিকিৎসকরা কথা শুনছেন না কেন বুঝতে পারছি না।” কৃষ্ণেন্দু দে জানিয়েছেন, সম্প্রতি স্বেচ্ছাবসর চেয়ে আবেদন করে তিনি বেশ কিছু দিন হাসপাতালে যাননি। স্বাস্থ্য দফতরের অনুরোধে বুধবার কাজে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার মেডিসিনের বহির্বিভাগ তিনি করবেন বলে নিজেই আগাম জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “সতীর্থ চিকিৎসক শীর্ষেন্দুবাবুর এ দিন রাত ডিউটি আছে জানিয়ে দিনে বহির্বিভাগ করতে চান। পর দিন শুক্রবার তিনি ছুটিতে থাকবেন। তাই তিনি এ দিন বহির্বিভাগে যেতে নিষেধ করেন। বদলে শুক্রবার বহির্বিভাগের পরিষেবা দেখতে অনুরোধ করেন। সেই মতো রাজি হই। অথচ তিনি দায়িত্ব নিয়ে কেন যাননি বুঝতে পারছি না।” কৃষ্ণেন্দুবাবুর দাবি বিষয়টি তিনি সুপারকেও জানিয়েছিলেন। তাও মেডিসিন বিভাগের পরিষেবা ঠিক চলছে কি না তা সুপার নজরে রাখেননি কেন প্রশ্ন উঠেছে। উল্টে দুই চিকিৎসকের কেউ না যাওয়ায় মেডিসিনের বহির্বিভাগ না খোলার বিষয়ে হাসপাতালের সুপার বিকেল পর্যন্ত কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেছেন। শীর্ষেন্দুবাবু জানিয়েছেন, রবিবার এবং মঙ্গলবার জরুরি বিভাগ এবং অন্তর্বিভাগের দায়িত্ব সামলাতে তিনি ২৪ ঘণ্টা করে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, “অতিরিক্ত কাজ করেই পরিষেবা দিতে চেষ্টা করছি। তবে কে কবে কোথায় কাজ করবেন তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট ‘রোস্টার’ ছিল না। বৃহস্পতিবার তা তৈরি হয়েছে। তাই সমস্যা হয়েছে।” কৃষ্ণেন্দুবাবুকে অনুরোধ করা নিয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি। তাঁর দাবি, এ দিন মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনিই কাজের ‘রোস্টার’ বানিয়ে সুপারকে দিয়েছেন। কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালে মাত্র দু’জন মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকায় সমস্যার কারণে গত কয়েক মাস ধরে ৬ দিনের পরিবর্তে সোম, বুধ এবং শুক্রবার খোলা হত। সেই পরিষেবাও ঠিক মতো মিলছিল না বলে অভিযোগ। মেডিসিন বিভাগ না খোলায় ফিরে যেতে হয়েছে টিকিয়াপাড়ার সুভাষ বিশ্বাস, মহম্মদ সফিউদ্দিনের মতো রোগীদের। |