অথৈ জলে লক্ষ্মণদের মেডিক্যাল
পরীক্ষা দিতে, পড়া চালিয়ে
যেতে চেয়ে পড়ুয়ারা কোর্টে
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেই ছাত্রছাত্রীরা হলদিয়ার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আইকেয়ার পরিচালিত মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। ইতিমধ্যে এক বছর ক্লাসও করেছেন। তাঁরা পরীক্ষা দিতে চান এবং তারও পরে পড়া চালিয়ে যেতে চান। সেই ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানালেন ওই কলেজের পড়ুয়ারা।
একই ভবনে মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ চালানোর অভিযোগ ওঠায় সমস্যায় পড়ে ওই প্রতিষ্ঠান। মেডিক্যাল কলেজকে দেওয়া অনুমতি প্রত্যাহার করে নেয় রাজ্য সরকার, মেডিক্যাল কাউন্সিল ও স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়। অনিশ্চিত হয়ে পড়ে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ। মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে এখন সেই মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলাতেই যোগ দিয়ে ছাত্রছাত্রীরা আর্জি জানান, অগস্টে এমবিবিএস পরীক্ষা শুরু। অথচ তাঁরা জানেন না, পরীক্ষা দিতে পারবেন কি না। কলেজ-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিয়ম না-মানা, গাফিলতি-সহ যে-সব অভিযোগ উঠেছে, তার কোনওটার জন্যই তাঁরা দায়ী নন। তাঁরা সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের ভিত্তিতে ভর্তি হয়ে ক্লাস করেছেন। এ বার তাঁদের পরীক্ষা এবং পড়া চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
হলদিয়ার এক সময়ের দাপুটে সিপিএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠ ওই মেডিক্যাল কলেজের পরিচালন সমিতির প্রধান। রাজ্যে সরকার বদলের পরেই কলেজটি নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। ২০১০ সালে তৎকালীন রাজ্য সরকার ওই কলেজকে ‘এসেন্সিয়াল সার্টিফিকেট’ দিয়েছিল। সেই শংসাপত্রের ভিত্তিতেই অনুমতি দেয় মেডিক্যাল কাউন্সিল। অনুমোদন মেলে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়েরও। ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট প্রতিটি রাজ্য সরকারকে কমিটি তৈরি করে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ভর্তি, ডোনেশন দিয়ে ভর্তি ইত্যাদি বিষয়ে জানার এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়। হলদিয়ার ওই কলেজের কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, কমিটির কাছে বারবার ছাত্র ভর্তির অনুমতি চেয়েও না-পেয়ে তাঁরা শীর্ষ আদালতে মামলা করেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই তাঁরা ছাত্র ভর্তি করেছেন।
কিন্তু মেডিক্যাল কাউন্সিল সরেজমিনে ওই কলেজ পরিদর্শন করে জানায়, একই ভবনে মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ চলছে। তাই অনুমোদন বাতিল করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ও অনুমোদন বাতিল করে। কলেজ এখন বন্ধ। যে-সোসাইটি ওই কলেজ চালায়, তাদের আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, মালদহের মেডিক্যাল কলেজ ও কামারহাটির মেডিক্যাল কলেজে পরিকাঠামো বলতে কিছুই নেই। পরিকাঠামোর এই ভয়াবহ অবস্থার কথা জানিয়েছে এমসিআই। কিন্তু তাদের অনুমোদন বাতিল হয়নি। অথচ এখানে তা বাতিল করা হয়েছে। এই ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিতে না-পারলে তাঁদের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে পড়বে। রাজ্য সরকার যে-অনুমতি দিয়েছিল, তাতে বলা আছে, যদি কোনও কলেজ নিয়ে কখনও সঙ্কট দেখা দেয়, তা হলে তারা ছাত্রছাত্রীদের দায়িত্ব নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কলেজ-কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এর পরে সরকারের দায়িত্ব পালনের প্রশ্ন ওঠে না। পরবর্তী কালে দেখা গিয়েছে, নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না-করেই ওই কলেজ চালু করা হয়েছিল। একই ভবনে দু’টি কলেজ চলবে, সরকার তা মেনে নিতে পারে না। এই ধরনের সমস্যা হবে বুঝেই সরকার ওই কলেজে কোনও ছাত্রছাত্রীকে ভর্তি করার জন্য পাঠায়নি।
ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে আইনজীবী লক্ষ্মীকুমার গুপ্ত বলেন, এই লড়াইয়ে সব থেকে কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে পড়ুয়াদেরই। আজ, শুক্রবার ফের এই মামলার শুনানি হবে। হাইকোর্টের রায়ের উপরেই নির্ভর করছে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.