আলোচনা করতে গিয়ে একই দিনে দুটি এলাকায় সরকারি প্রতিনিধিদের সামনে টেবিল চাপড়ে উদ্ধত আচরণের অভিযোগ উঠল সিপিএম ও তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার একটি ঘটনা ঘটেছে শিলিগুড়িতে। দ্বিতীয়টি প্রায় একই সময়ে ঘটেছে ময়নাগুড়িতে। দুটি ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত নেতারা অভব্য আচরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। একই সঙ্গে উভয় দলের তরফেই পাল্টা উদ্ধত আচরণের অভিযোগ করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রিত বাজারে পার্কিং সমস্যার জট মেটাতে বৃহস্পতিবার মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব ফোসিন ও গাড়ি চালক ইউনিয়নের নেতাদের বৈঠকে ডেকেছিলেন। সেখানে সিটুর জেলা সম্পাদক তথা সিপিএমের জেলা কমিটি সদস্য অজিত সরকার শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তবের সঙ্গে টেবিল চাপড়ে কথা বলেন বলে অভিযোগ। বৈঠকে সিটুর নিয়ন্ত্রিত বাজারের ছোট গাড়ির চালক ইউনিয়নকে ডাকা হলেও অজিতবাবুকে ডাকা হয়নি। পার্কিং সমস্যা নিয়ে মহকুমা প্রশাসনের প্রস্তাব নিয়ন্ত্রিত বাজারের সমস্ত ইউনিয়ন ও ব্যবসায়ীরা মেনে নিলেও সিটুর জেলা সম্পাদক তা মানতে অস্বীকার করেন। মহকুমাশাসক বলেন, “একটি সরকারি বৈঠকে একজন প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা এ ভাবে আমার সঙ্গে টেবিল চাপড়ে কথা বলবেন, এটা আশা করিনি। ওঁকে বৈঠকে ডাকাও হয়নি। তার পরেও জোর করে বৈঠকে ঢুকে উনি যে ব্যবহার করেছেন সেটা মানা যায় না।” অজিতবাবুর তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “প্রথমে মহকুমাশাসকই ঔদ্ধত্ব্যপূর্ণ কথাবার্তা বলছিলেন। উনি সম্মান দেখালে, আমি সম্মান দিতাম।” মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি পার্কিংয়ের জেরে বছর খানেক ধরে নিয়ন্ত্রিত বাজারে যাতায়াত করা ব্যবসায়ীদের পক্ষে কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তার দু’পাশে ছোট গাড়ি পার্কিংয়ের জেরে পণ্য নিয়ে বাজার থেকে বার হওয়াও কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারে গাড়ি ঢোকা ও বার হওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতিতে ফি দিতে হয়। কিছু শ্রমিক নেতার মদতে সেই বাড়তি ফি আদায় করে ছোট গাড়ি রাস্তার পাশে বেআইনি ভাবে দাঁড় করানো হত। সমস্যা মেটাতে মহকুমা প্রশাসন ট্রাক দাঁড় করানোর পার্কিং জোন তৈরি করে। নিয়ন্ত্রিত বাজারের মাছ বাজারের পিছনের একটি খালি জমিতে তিন চাকা ও চার চাকার গাড়ির পার্কিংজোন তৈরির পরিকল্পনা হয়। বাজারের ব্যবসায়ী এবং গাড়ি চালক ইউনিয়নগুলি একমত হওয়ার পরে ২ মে থেকে তা চালু করার কথা ছিল। কিন্তু ২ মে থেকে সিটু চালকেরা ধর্মঘটে নামে। তার জেরে বিপাকে পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের। কয়েক লক্ষ টাকার ব্যবসা মার খায়। সমস্যা মেটাতেই এ দিন বৈঠক ডাকা হয়েছিল। এদিনের বৈঠকে ফোসিনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “নিয়ন্ত্রিত বাজারে পার্কিং সমস্যা মেটাতে মহকুমা প্রশাসন যে পরিকল্পনা নিয়েছে সেটি ফোসিন এবং আমাদের সংশ্লিষ্ট সমস্ত সংগঠনই সমর্থন করেছে। তবে সিটুর প্রস্তাব খতিয়ে দেখা যেতে পারে।” এ দিকে ময়নাগুড়ির মাধবডাঙা ১ পঞ্চায়েত প্রধান বাবলু রায় গ্রাম সংসদের পরামর্শ উপেক্ষা করে ইন্দিরা আবাসের ঘর বিলি করেছেন অভিযোগ তুলে দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রধানকে ঘেরাও করে তৃণমূল। তৃণমূল নেতা শশাঙ্ক বসুনিয়ার বক্তব্য, “উত্তেজনায় টেবিলে চাপ দিলে কাচ ভেঙে যায়। এটা এমন কিছু নয়।” সিপিএম প্রধান বলেন, “ঘর বিলিতে অনিয়মের কিছু হয়নি। যা বলার বিডিও বলবেন।” বিডিও সম্রাট চক্রবর্তী বলেন, “প্রধানকে বলেছি, ঘটনাটি পুলিশকে জানাতে।” |