নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
চোখের অসুখের জন্য ইঞ্জেকশন নিতে গিয়ে শালুগাড়া হাইস্কুলের এক শিক্ষিকার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। ঘটনার পর বারো দিন কেটে গেলেও তিনি কিভাবে নিখোঁজ হয়েছেন তা জানতে পারেনি ভক্তিনগর থনার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার নাম চৈতালি বিশ্বাস। অবিবাহিতা ৪৮ বছরের ওই মহিলার বাড়ি শালুগাড়ার পোস্ট অফিস রোডে। তিনি শালুগাড়া হাইস্কুলের ইতিহাসের শিক্ষিক। এই অবস্থায়, ওই শিক্ষিকার হদিশ বের করতে পুলিশ যাতে আরও তৎপর হয় সে ব্যপারে আবেদন জানিয়ে সম্প্রতি ভক্তিনগর থানায় স্মারকলিপি দেয় পশ্চিমবঙ্গ মহিলা সমিতির ডাবগ্রাম জোনাল কমিটি। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্তোষ পাণ্ডে বলেন, “একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। আমরা সমস্ত সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখছি।” পশ্চিমবঙ্গ মহিলা সমিতির ডাবগ্রাম জোনাল কমিটির পক্ষে শিলিগুড়ি পুরসভার কাউন্সিলর প্রীতিকনা বিশ্বাস বলেন, “কিভাবে ওই শিক্ষিকা নিখোঁজ হয়েছেন তা এখনও জানা যাচ্ছে না। কেউ তাঁর খোঁজ দিতে পারছে না। ওই সামান্য সময়ের মধ্যে কি হল তা তদন্ত করে দেখা উচিত। এখন পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের উপর নানা অত্যাচার হচ্ছে। এখানেও অন্যরকম কোনও ব্যপার রয়েছে কি না তা পুলিশকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা উচিত।” ওই শিক্ষিকার বোন মিতালি দেবী জানান, বেশ কিছুদিন ধরে চোখের অসুখে ভুগছিলেন চৈতালি দেবী। সম্প্রতি তিনি কলকাতায় গিয়ে চিকিৎসা করান। সেখানকার চিকিৎসকের দেওয়া ইঞ্জেকনশন নেওয়ার জন্য তিনি দুই দিন অন্তর বাড়ি থেকে পাঁচ মিনিটের দূরত্বে একটি ওষুধের দোকানে যান। ২৮ মে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ তিনি ইঞ্জেনকশন নেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। তার পর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। ওষুধের দোকানদার জানিয়েছেন, তিনি ওই দিন ইঞ্জেকশন নিতে দোকানে যাননি। মিতালি দেবী বলেন, “ওষুধের দোকানে যাওয়ার সময় প্রতিবেশীর বাড়ি হয়ে ফিরবেন বলে তিনি বাড়িতে জানান। বিকাল ৩টে বেজে গেলেও তিনি বাড়ি ফেরেননি। ওষুধের দোকানে খোঁজ করে জানতে পারি তিনি সেখানেও যাননি। তা হলে ও কোথায় গেলেন বুঝতে পারছি না।” মিতালি দেবীর বাড়িতে বাবা, মা ও এক ভাই রয়েছে। এলাকায় খুব নরম স্বভাবের মহিলা বলে তিনি পরিচিত। স্কুলেও তাঁর সুনাম রয়েছে। প্রতিবেশী তথা শালুগাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যাম দাস জানিয়েছেন, তিনি স্কুলের পার্শ্বশিক্ষিকা। ওই দিন তাঁর ছুটি ছিল। শুক্রবার তিনি স্কুলে যান। তিনি বলেন, “এর পর শনিবার ওঁর বাবার মুখে বিষয়টি জানতে পারি। আত্মীয়, বন্ধুদের বাড়িতে খোঁজ করা হয়। ওই রাতে তিনি ফিরে আসবেন বলে অপেক্ষাও করা হয়। রবিবার সকালে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। তিনি কোথায় গেলেন আমরা বুঝতে পারছি না। পুরো ধোঁয়াশার মধ্যেই রয়েছি।” |