কর্মীর ‘মন্তব্যে’ ধৈর্যচ্যুতি, ভাঙচুর গ্রাহকদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
চড়া রোদে ঠায় দাঁড়িয়ে কয়েকশো লোক। কিন্তু, সফটওয়্যারের গণ্ডগোলে বিদ্যুতের বিল জমা নেওয়ায় ঝামেলা চলছিলই। এক সময় বিল না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বাড়ানো হয় বিল জমার সময়সীমা। গ্রাহকেরা ‘লেট ফাইন’ মকুবের দাবি তোলেন। অভিযোগ, এক কর্মী তখন মন্তব্য করেন, ‘মামা বাড়ির আব্দার নাকি!’
এর পরেই ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির শিলিগুড়ি কার্যালয়ে ভাঙচুর চালান একদল গ্রাহক। শহরের চিলড্রেন পার্ক এলাকায় বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ ওই ঘটনার খবর পেয়ে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ সেখানে যায়। পাশেই শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রাজার অফিস। তিনিও চলে আসেন। এক মহিলা-সহ ৬ জনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করে ঘটনার তদন্ত করা হবে।” |
বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি সূত্রের খবর, বিল জমা নেওয়ার কাজে গতি আনতে কয়েক মাস আগে নতুন সফটওয়্যার ব্যবহার শুরু হয়। দু’দিন থেকে সফটওয়ারের গণ্ডগোলে বিল নিতে সময় লাগছিল। এ দিন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিল জমা বন্ধ করা হবে ঠিক হয়। সময়সীমা ১৫ মে-র বদলে ১৭ মে পর্যন্ত বাড়িনো হয়। সে কথা গ্রাহকদের জানিয়ে নোটিস টাঙানোর প্রস্তুতি চলছিল। ওই অফিসের ম্যানেজার অমলাশিস মহানদেও-র অভিযোগ, গ্রাহকদের একাংশ ইট দিয়ে ক্যাশ কাউন্টারের তিনটি জানলা ভাঙার পরে অফিসে ঢুকে চেয়ার, টেবিল ও ৩টি কম্পিউটার ভাঙেন। জনা ১৫ গ্রাহক দোতলায় গিয়ে জুনিয়র ম্যানেজার ও ইউনিট ম্যানেজারের ঘরেও ভাঙচুর চালান। কয়েকটি চেয়ার, টেবিল, ফুলের টব পাশের টিনের চালে ছুড়ে ফেলা হয়।
এই অফিসের আওতায় প্রায় ২০ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। প্রতিদিন হাজারের বেশি বাসিন্দার লাইন পড়ে। বুধবারও অনেকে ফিরে যান। এ দিন ফের সকাল সাড়ে ৯টায় তিনশোরও বেশি গ্রাহকের লাইন পড়ে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিল জমা নেওয়া চলে। গ্রাহকদের অভিযোগ, কাজ ঢিমেতালে চলছিল। ক্যাশ কাউন্টারে বসা এক কর্মী অসুস্থ থাকায় ভাল ভাবে কাজ করতে পারছিলেন না। গ্রাহকের বক্তব্য, ক্যাশ কাউন্টারের কর্মী গ্রাহকদের উদ্দেশে ওই মন্তব্য না করলে পরিস্থিতি এমন হত না। যে কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর দাবি, “আমি এমন কোনও মন্তব্য করিনি। বরং হাতজোড় করে অনুরোধ
করে গ্রাহকদের শান্ত হতে বলেছিলাম।” অমলাশিসবাবু জানান, বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত বিল জমা নেওয়া হয়েছে। |