|
|
|
|
৪ কংগ্রেস প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার |
হলদিয়ায় ফের অপহরণের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করানোর উদ্দেশ্যে এ বার প্রার্থীদের ‘অপহরণে’র অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী মিঠু সেনের স্বামীকে তৃণমূলের লোকেরা অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। চাপের মুখে পড়ে ওই কংগ্রেস প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ দিনই হলদিয়ার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী আঞ্জুমা খাতুন, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের খোকন প্রধান ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের তারাপদ মণ্ডল মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। চাপের মুখে পড়েই সকলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন বলে দাবি কংগ্রেস নেতৃত্বের। যদিও পুরোটাই ‘সাজানো নাটক’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতৃত্ব। তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর প্রতিক্রিয়া, “আমি কোনও মন্তব্য করব না। যে যার মতো অভিযোগ করতে পারে। তাতে কী হয়েছে?”
মিঠুদেবীর স্বামী প্রণববাবু কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মী। দুর্গাচক স্টেডিয়ামের কাছে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রণববাবু নিজে কংগ্রেসকর্মী। ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় তাঁর স্ত্রীকে প্রার্থী হিসাবে মনোনীত করে কংগ্রেস। গত ৭ মে মিঠুদেবী মনোনয়ন জমা দেন। অভিযোগ, এর পর থেকেই বাড়িতে এসে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিতে শুরু করেন তৃণমূল নেতারা। সেন পরিবার সরাসরি স্থানীয় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী মিলন মণ্ডল ও তৃণমূল নেতা শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে মিলন মণ্ডলদের দাবি, “উনি ভোটে লড়ছেন কি না তাই-ই জানি না। সেখানে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
প্রণববাবুর অভিযোগ, “এ দিন বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ অফিস থেকে আমাকে বাইরে ডেকে নিয়ে যায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা লালু জানা ও শেখ সেলিম। আচমকাই ঘিরে ধরে জনা পনেরো তৃণমূল সমর্থক। মোটর সাইকেলে চাপিয়ে আমাকে নিয়ে যায় কাঁকটিয়ায় ওদের দলীয় কার্যালয়ে। সেখানেই মারধর করে স্ত্রী-র প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফোন করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলি।” এর পর মিঠুদেবী হলদিয়া মহকুমা অফিসে গিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। বেলা দেড়টা নাগাদ প্রণববাবু ফিরে আসেন।
২৬ নম্বরের কংগ্রেস প্রার্থী তারাপদ মণ্ডলকেও বুধবার রাত থেকে তৃণমূলের লোকেরা ক্রমাগত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছিল বলে অভিযোগ। জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, রাতে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রাজারচকে তারাপদবাবুর বাড়ি ঘেরাও করেন তৃণমূলকর্মীরা। এ দিন সকাল ১০টা থেকে তাঁর আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। কংগ্রেসের নির্বাচনী এজেন্ট মনোজ পাণ্ডের অভিযোগ, “এ বার সরাসরি প্রার্থীদের অপহরণ করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে চাইছে তৃণমূল। আমরা জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। লাভ হয়নি।” বিকেলে ফিরে
এসে তারাপদবাবু মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেন। যদিও তারাপদবাবুর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, ‘স্বেচ্ছা’য় মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিনি। জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেন বলেন, “হেরে যাওয়ার ভয়েই ওঁরা প্রার্থীপদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। কৈফিয়ত দিতে দলের কাছে অপহরণের নাটক করছেন।”
এ দিকে, বুধবার গভীর রাতে ১০ নম্বর ওয়াডের্র সিপিআই প্রার্থী তথা হলদিয়ার উপপুরপ্রধান নারায়ণ প্রামাণিকের বাড়ি লক্ষ করে দুষ্কৃতীরা ইট ছোড়ে বলে অভিযোগ। ইটের আঘাতে তাঁর গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। বুধবার নারায়ণবাবু দুর্গাচক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, ‘‘কারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, দেখতে পাইনি। তবে, পুরভোটের আগে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এই সব হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|