হাসপাতালে হাত-কড়ায় প্রশ্ন |
অসুস্থ ছাত্রনেতাকে দেখতে গিয়ে ঝাড়গ্রামে ‘আটক’ ৭ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
জেলবন্দি অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়া ঝাড়খণ্ডী ছাত্রনেতা কমলেশ মাহাতোকে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে দেখতে এসে ‘আটক’ হলেন ছাত্র সংগঠন ‘ইউএসডিএফ’ ও মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর ৭ প্রতিনিধি। বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিনিধি-দলের এক জন হাসপাতালে কমলেশের সঙ্গে কথা বলতে গেলে পুলিশ তাঁকে বার করে দেন বলে অভিযোগ। পরে শহরের একটি হোটেলে খাওয়া-দাওয়ার সময়ে ২ মহিলা-সহ ওই ৭ জনকে আটক করে ঝাড়গ্রাম থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। রাত আটটায় ব্যক্তিগত জামিনে তাঁদের ছাড়া হয়। |
|
ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কমলেশ মাহাতো।--নিজস্ব চিত্র। |
এপিডিআর-এর সাধারণ সম্পাদক দেবপ্রসাদ রায়চৌধুরীর অভিযোগ, “অসুস্থকে দেখতে গেলেও এখন পুলিশ আঘাত করছে।” বিকেলে হাসপাতালের ভিজিটিং আওয়ারে কমলেশের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তাঁর আইনজীবী কৌশিক সিংহও। তাঁর অভিযোগ, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করে অসুস্থ বন্দিকে হাসপাতালের শয্যার সঙ্গে হাত-কড়া পর্যন্ত পরিয়ে রাখা হয়েছে।” ঝাড়গ্রাম সাব-জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, মঙ্গলবার বিকেলে জেলের শৌচাগারে মজুত ফিনাইল খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন কমলেশ। সন্ধ্যায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ প্রহরাও বসে। সাব-জেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট কন্ট্রোলার মনসারাম বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার ঝাড়গ্রামের পুলিশ কমলেশের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগে মামলাও রুজু করে। কৌশিকবাবুর অভিযোগ, ঘটনা খতিয়ে না-দেখেই জেল কর্তৃপক্ষ কমলেশের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন। আর এপিডিআর-এর ঝাড়গ্রাম শাখার সম্পাদক ফটিক ঘোষের অভিযোগ, “বিরোধী ছাত্র সংগঠন করায় কমলেশকে জেলের মধ্যেই নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছিল।”
গত ২৭ এপ্রিল ঝাড়গ্রাম শহর লাগোয়া এলাকা থেকে ৪ ফুটের একটি বন্দুক-সমেত কমলেশকে ধরা হয় বলে দাবি পুলিশের। বড়জোর ৫ ফুট উচ্চতার কমলেশ ৪ ফুট দৈর্ঘ্যের বন্দুক নিয়ে ঘুরলেও পুলিশ ছাড়া কেউ কেন দেখতে পেল না, সেই প্রশ্ন ওঠে আদালতে। পুলিশি হেফাজতের আবেদন নাকচ করে কমলেশকে জেল-হাজতে পাঠান ঝাড়গ্রামের এসিজেএম। এসিজেএমের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে সরকারপক্ষ মেদিনীপুর জেলা আদালতে গেলেও এসিজেএমের নির্দেশই বহাল থাকে। |
|