এখনও রাতে ঘুম হয় না। এখনও বিছানায় শুয়ে এ পাশ-ও পাশ করেন। একটা প্রশ্ন এখনও তাঁকে শান্তি দেয় না ‘কী ভাবে নিজের প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করব? কী ভাবে নিজের তৈরি মানদণ্ড ছুঁতে পারব?’
নিজেকে ছুঁতে চাওয়ার এই লড়াই এখনও লড়ে যাচ্ছেন সচিন তেন্ডুলকর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনের তেইশ বছর পার করে এসেও। “কী ভাবে পারফর্ম করব, এই প্রশ্নটা এখনও আমাকে শান্তিতে থাকতে দেয় না। আর সেটাই আমার সেরাটা বার করে নিয়ে আসে,” নিজের সাফল্যের রেসিপি ব্যাখ্যা করছেন সচিন।
নিজের ক্রিকেট জীবনের শুরুতে ম্যাচের আগের রাতে বিছানায় এ পাশ-ও পাশ করতেন সচিন। “এখনও এটা হয়। তবে এখন আমি জানি ব্যাপারটা খুব স্বাভাবিক। তাই রাতে উঠে পড়ে হয় টিভি দেখি, না হয় অন্য কিছু করি। আসলে এখন আমি নিজেকে অনেক ভাল করে চিনি।”
শুরু থেকেই তিনি ক্রিকেটকে উপভোগ করে এসেছেন এবং শেষ পর্যন্ত করতেও চান। “মাঝে মাঝে মাঠ ও মাঠের বাইরে এমন সব ঘটনা ঘটে, যে আপনি খেলাটাকে উপভোগ করতে ভুলে যান। তখনই সমস্যা দেখা দেয়। আমার সামনেও কঠিন মুহূর্ত এসেছে। তখন নিজেকে বলেছি, কী ঘটছে না ঘটছে, তাতে কিছু এসে যায় না। খেলাটাকে উপভোগ করো,” বলেছেন সচিন।
তাঁকে ঘিরে মিডিয়ার চাপ সারাক্ষণই। কী ভাবে সামলান এই চাপ? সচিনের কথায়, “যখন বাইশ গজে থাকি, তখন একটা বল দেখে খেলার জন্য হাফ সেকেন্ডেরও কম সময় হাতে থাকে। ওই সময় আমার সম্পর্কে কে কী বলছে, ভাবার সুযোগ থাকে না। আমার সম্পর্কে কে কী বলেছে বা লিখেছে, পরে কখনও চোখে পড়ল তো ঠিক আছে। কখনও আগ বাড়িয়ে দেখতে যাই না ও সব।”
এর পর নিজের ছেলে অর্জুনের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। সচিন বলেছেন, “আমার ছেলে ক্রিকেটকে ভালবেসে ফেলেছে। আমি বিশ্বাস করি, ক্রিকেট শুরু হবে হৃদয় থেকে। আর তার পর যত বয়স বাড়বে, হৃদয় থেকে ক্রিকেট উঠে আসবে মস্তিষ্কে। আমার ছেলে যত দিন ক্রিকেটকে ভালবাসবে, তত দিন কোনও সমস্যা নেই।”
সচিন জানিয়েছেন, তাঁরা কখনও অর্জুনকে জোর করেননি ক্রিকেট খেলার জন্য। “ও নিজেই ক্রিকেটকে বেছে নিয়েছে,” মার্কিন পত্রিকা ‘টাইম’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর বাবা যে উপদেশটা তাঁকে দিয়েছিলেন, নিজের ছেলেকেও সেই একই কথা বলছেন সচিন, “জীবনে ক্রিকেট স্থায়ী হবে না। কিন্তু তুমি কী রকম মানুষ হতে পারলে, সেটা লোকে মনে রাখবে। তাই চেষ্টা করো ভাল মানুষ হওয়ার।” |