কথা ছিল না সাংবাদিক সম্মেলনে আসার। কিন্তু হঠাৎই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ঠিক করেন সুব্রত রায় সহারা স্টেডিয়ামে জানাবেন নিজের বক্তব্য। দলের পারফরম্যান্স, তাঁর ব্যাটে রান না পাওয়া বা অধিনায়কত্ব নিয়ে সমালোচনা, সব কিছু নিয়েই যা বললেন, তুলে দেওয়া হল:
প্রশ্ন: শেষ তিনটে ম্যাচ নিয়ে কী ভাবছেন?
সৌরভ: সব সময় জেতার চেষ্টা করব। আমাদের শুরুটা ভাল হয়েছিল। মাঝে পারফরম্যান্স একটু খারাপ হয়। আশা করব শেষটা ভাল ভাবে হবে।
প্র: আপনি নিজেকে বসিয়ে দেবেন বলে গুজব ছড়াচ্ছে। তা নিয়ে কী বলবেন?
সৌরভ: আমি এখনও অধিনায়ক। পুরো আইপিএলের জন্যই অধিনায়ক। আর ক্যাপ্টেনরা নিজেদের বসাবে কি না সেটা নির্ভর করে পরিস্থিতির উপর। যে দু’জন অধিনায়ক নিজেদের বসিয়েছে তারা বিদেশি প্লেয়ার। আর আপনি চার জন বিদেশি প্লেয়ারই খেলাতে পারবেন। ভেত্তোরিকে বসতে হয়েছে মুরলীধরনকে দলে নেওয়ার জন্য। ওটা মোটেই খারাপ সিদ্ধান্ত নয়। |
প্র: নিজের পারফরম্যান্স...
সৌরভ: মাঝে মাঝে ভাল খেলেছি, আবার মাঝে মাঝে পারিনি। টি-টোয়েন্টিতে এ রকম হয়েই থাকে। আরও অনেক প্লেয়ার আছে যারা খুব একটা ভাল করেনি। কিন্তু গাঙ্গুলির ব্যাপার হলেই তো সমালোচনাটা অন্যদের চেয়ে বেশি হয়। গত পনেরো বছর ধরেই এটা হয়ে আসছে। তবে আমি আশা করেছিলাম আরও ভাল খেলতে পারব।
প্র: এ বারের নিলামে যোগ না দেওয়াটা কি ভুল হয়ে গেল?
সৌরভ: আমি যদি, কিন্তু, এ সবে বিশ্বাস করি না। আমরা ভালই শুরু করেছিলাম। আর যদি আমরা চেন্নাই, মুম্বই, দিল্লির মতো দলকে হারাতে পারি তা হলে বাকিদের পারব না কেন? আমাদের যা টিম ছিল তা নিয়ে ভাল লড়াই করা যেত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সেটা হল না। কোনও দু’এক জন নয়, গোটা টিমটাই বাজে খেলেছে।
প্র: আপনাদের ব্যাটিং লাইন আপটা কি দুর্বল ছিল?
সৌরভ: আমরা দিল্লিতে দিল্লিকে গুঁড়িয়ে দিয়েছি। চেন্নাই, মুম্বইকেও হারিয়েছি। বেঙ্গালুরু ম্যাচটাও জেতা উচিত ছিল। কিন্তু ডে’ভিলিয়ার্স শেষ ওভারে ২৪ রান তুলে দিল। জানি না আপনারা জানতেন কি না, তবে গতকাল আমি একটা তথ্য পেলাম। এ বারের আইপিএলে মোট রানের বিচারে পুণেই সবার আগে। তা হলে কী করে বলব আমাদের ব্যাটিং লাইন আপ দুর্বল?
প্র: টি-টোয়েন্টিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া কতটা জরুরি?
সৌরভ: প্রতিটা ফর্ম্যাটেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়াটা জরুরি। ক্যাপ্টেনকে পারফর্ম করতেই হবে। কিন্তু মনে রাখবেন এটা একটা টিম স্পোর্ট। মানছি ক্যাপ্টেনকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হয়। কিন্তু সব সময় সেটা হয় না। এই তো বিশ্বকাপের কথাই ধরুন না। ব্যাটে ধোনির বিশেষ কিছু অবদান ছাড়াই তো ভারত চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল।
প্র: মিঠুন মানহাস সম্পর্কে কী বলবেন?
সৌরভ: যা সুযোগ পেয়েছে, তা কাজে লাগিয়েছে মিঠুন। আপনাদের বুঝতে হবে টি-টোয়েন্টিতে সাত নম্বরে ব্যাট করাটা সহজ নয়। অর্ধেক সময় খেলার সুযোগই পাওয়া যায় না। টি-টোয়েন্টি ভুলে যান, পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচেও সাত নম্বরে ব্যাট করাটা যথেষ্ট কঠিন।
প্র: আপনার টিম কম্বিনেশন?
সৌরভ: আমাদের গোছানো টিম ছিল। টপ অর্ডারের প্লেয়াররা অনেক ম্যাচ খেলেছে। মাইকেল ক্লার্ক আসার আগে জেসি রাইডার অনেক ম্যাচ খেলেছে। স্টিভ স্মিথ আর রবিন উথাপ্পা সব ক’টা খেলেছে। মনীশ পাণ্ডেও অনেক ম্যাচ খেলেছে। আমার মনে হয় না, আমাদের দলে খুব বেশি রদবদল হয়েছে বলে।
প্র: গেইলের বিরুদ্ধে নামার আগে দলের প্লেয়ারদের কী পরামর্শ দেবেন?
সৌরভ: ওকে তাড়াতাড়ি ফেরাতে হবে। গেইল আরও ভাল টি-টোয়েন্টি প্লেয়ার হয়ে উঠেছে কারণ ও পনেরো-কুড়ি ওভার পর্যন্ত ব্যাট করতে চাইছে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ওকে ভাল ভাবে সামলেছে। ওকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অন্তত পনেরো ওভার ব্যাট করার। শুরুতে স্লো খেললেও সবাই জানে কুড়ি ওভার খেললে গেইল অনেক টিমকে শেষ করে দেবে। তাই ওকে আউট করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। |