রমেশের জামিনের আবেদন খারিজ হল সুপ্রিম কোর্টেও
সুপ্রিম কোর্টেও খারিজ হয়ে গেল কুখ্যাত দুষ্কৃতী রমেশ মাহাতোর জামিনের আবেদন।
হুগলির ‘ত্রাস’ হুব্বা শ্যামলকে খুনের অভিযোগে গত বছরের জুন মাস থেকে জেল খাটছে রমেশ। নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্ট সব জায়গাতেই জামিনের আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ার পরে সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন করেছিল হুগলি শিল্পাঞ্চলের দাগি এই সমাজবিরোধী। সেখানেও আবেদন নাকচ হয়ে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এইচ এল দাত্তু এবং বিচারপতি চন্দ্রমৌলিকুমার প্রসাদের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার রমেশের আবেদন খারিজ করে।
রমেশ মাহাতো। ফাইল চিত্র।
এ বিষয়ে হুগলির পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “আমরা রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করেছিলাম, ওই দুষ্কৃতীর জামিন নাকচের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের আইনজীবী অভিজিৎ সেনগুপ্ত জামিনের বিরোধিতা করেন। মহামান্য আদালত তা মঞ্জুর করেছে।”
হুগলি জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, রমেশের বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় ৩০টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে খুনের মামলাই ৮টি। এ ছাড়াও, ধর্ষণ, ডাকাতি, তোলাবাজি, বেআইনি অস্ত্র রাখারও অনেক মামলা তার নামে রয়েছে। এক সময়ে সে জেলার ‘ত্রাস’ হুব্বা শ্যামলের ‘ডান হাত’ ছিল। পরে রমেশ নিজস্ব ‘বাহিনী’ তৈরি করে। এক সময় নেপু, চিকুয়াদের মতো পুরনো সাগরেদদের সঙ্গেও শ্যামলের সম্পর্কে ভাঙন ধরে। অভিযোগ, তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েই এলাকায় নিরঙ্কুশ আধিপত্য কায়েম করতে শ্যামলকে খুন করে রমেশ।
২০১১ সালের ২ জুন বৈদ্যবাটিতে গঙ্গা-লাগোয়া খালে গলার নলি এবং পেট কাটা অবস্থায় রমেশের পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। শ্যামলকে খুনের অভিযোগে পরদিনই মূল অভিযুক্ত রমেশকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রমেশের সাগরেদ জিতেন্দ্র সিংহ, নেপু এবং চিকুয়াও ধরা পড়ে। সেই থেকে রমেশ জেলে। ঘটনার ৯০ দিনের মধ্যে মামলার চার্জশিটও আদালতে দাখিল করেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা।
জেলা পুলিশের তরফে এসডিপিও (শ্রীরামপুর) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় এবং রিষড়া থানার ওসি অনুদ্যুতি মজুমদার সুপ্রিম কোর্টে যান। পুলিশ জানায়, চলতি মাসের ২৩ তারিখ থেকে শ্যামল খুনের মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা শ্রীরামপুর আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে। তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, “অনেক সময়েই তথ্যপ্রমাণ এবং সাক্ষ্যের অভাবে দুষ্কতীরা ছাড়া পেয়ে যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমাদের হাতে অকাট্য তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। আদালতেই সবটা প্রমাণ হয়ে যাবে।”
পুলিশ জানায়, হাওড়ার বালির দুর্গাপুরে বাড়ি রমেশের। মূলত হুগলি শিল্পাঞ্চলেই সে সমাজবিরোধীমূলক কাজ করে বেড়াত। কোন্নগর, রিষড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে তার নামে। ‘পেশিশক্তি’ কাজে লাগিয়ে জমি কেনাবেচা এবং ফ্ল্যাট তৈরিতে ওস্তাদ এই সমাজবিরোধী। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকায় তার প্রভাব আরও বাড়ে। তবে আইনের জালে আটকা পড়ায় আপাতত নিজের ‘সাম্রাজ্যের’ পরিধি ছোট হয়ে এসেছে তার। শ্যামল খুনের পরে রমেশ, নেপু, চিকুয়ার মতো দুষ্কৃতীরা গারদের পিছনে থাকায় হুগলি শিল্পাঞ্চলে অন্ধকার জগতের বাড়বাড়ন্ত এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে পুলিশের দাবি। যদিও পুলিশেরই অন্য একটি মহলের খবর, জেলের ভিতরে থেকেই ইদানীং অন্ধকার জগতের ‘কাজকর্ম’ নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে রমেশ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.