দলনেত্রীর নির্দেশ মেনে ভাড়া বাড়াবেন না কোনও মতেই। তাই রেলের আয় বাড়াতে পুরনো সব রাস্তাই ফের বাতলালেন রেলমন্ত্রী মুকুল রায়। সেই সঙ্গে রেলের স্বাস্থ্য ফেরাতে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের কাছ থেকে আরও অর্থের পুরনো দাবি।
এ দিন রাজ্যসভায় রাজ্যসভায় বাজেট বরাদ্দ নিয়ে বিতর্কের জবাবে রেলমন্ত্রী তাঁর দুই পূর্বসূরির সুরেই জানান, ষষ্ঠ বেতন কমিশনের পাওনা মেটাতে গিয়ে রেলে আর্থিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘুরে দাঁড়াতে হলে রেলের বাজেট বাড়াতে হবে। মমতা রেলমন্ত্রী থাকার সময়ও রেলের জন্য অনুদান চেয়ে সরব হন। আজ মুুকুলও জানান, বেতন কমিশনের রায় কার্যকর করতে গিয়ে রেলের ঘাড়ে অতিরিক্ত ৭৩ হাজার কোটি টাকার বাড়তি বোঝা রয়েছে। তবুও তার মধ্যেই আলোর সন্ধান করা হচ্ছে। মুকুলের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই মুহূর্তে রেলের অপারেটিং রেশিও ৯৫%। রেলের আয় ১০০ টাকা হলে খরচ ৯৫ টাকা। উন্নয়নের জন্য থাকছে ৫ টাকা। ঘুরে দাঁড়াতে জমির বাণিজ্যিক ব্যবহার, বিজ্ঞাপন ও পিপিপি প্রকল্পের মাধ্যমে আয় বাড়ানোর পুরনো পথের সন্ধান দেন।
আজ প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টার বাজেট বিতর্কে অংশগ্রহণকারী সব দলের সাংসদই নিজেদের এলাকার জন্য বিভিন্ন রেল প্রকল্পের দাবি জানান। রেলমন্ত্রী জবাবে বলেন, সামান্য সময়ের মধ্যে সবার সমস্যা নিয়ে আলোচনা বা সমাধান সম্ভব নয়। তাই পরে প্রত্যেক সাংসদের দাবির লিখিত জবাব তিনি দেবেন। পূর্বসূরি মমতার তৈরি করা ‘ভিশন-২০২০’ যে তাঁর কাছে ভবিষ্যতের নির্দেশিকা এ কথা জানিয়ে মুকুলবাবু বলেন, যাত্রী ভাড়া ও পণ্য মাসুল না বাড়িয়ে রেলের আয় বাড়ানোটাই তাঁর লক্ষ্য। ডেরেক ও’ব্রায়ান জানান, ২০১১-র এপ্রিল থেকে ২০১২-র এপ্রিল পর্যন্ত তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে নিয়মানুবর্তিতা, যাত্রী আয়-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটেছে। সার্বিক ভাবে অর্থনীতিতে মন্দা চলার সময়ই এ সব ঘটেছে। বিতর্কে যোগ দিয়ে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়ানও কিছু প্রস্তাব দেন, যেগুলি বাস্তবায়িত করা হবে বলে জানান মুকুুল। নিরাপত্তার দিকটির উপরেও জোর দিতে চেয়েছেন রেলমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “৯৫-এ দেশের ২০৭৮৬টি লেভেল ক্রসিং প্রহরাবিহীন ছিল। এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১৩৪৭১-এ।” শূন্য পদ পূরণ প্রশ্নে মুকুল বলেন, “কর্মী নিয়োগের কাজ শুরু হয়েছে। শূন্য পদে ৭৫,০০০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। ২০১২-১৩ আর্থিক বছরের মধ্যে ১ লাখ ৪৪ হাজার কর্মী নিয়োগ করার প্রস্তাব রয়েছে।” |