পড়তে পড়তেই আলাপ ও ঘনিষ্ঠতা। তার পরে সম্পর্কে চিড়। অবশেষে মুখোমুখি হয়ে প্রচণ্ড রাগের বশেই তরুণী বান্ধবী এবং তাঁর পিসিকে গলা কেটে খুন করেছিল সে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট থেকে গ্রেফতার হওয়ার পরে মহেশতলার জোড়া খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সন্তোষ সিংহ এ কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানায়।
পুলিশি সূত্রের খবর, গত ১ মে সন্ধ্যায় মহেশতলার হায়াতপুরের বাড়িতে খুন হন অন্তরা নাহা (২৩) এবং তাঁর পিসি শিবানী দে (৬৪)। দু’জনেরই নলি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা ছিল। ওই ঘরেই পড়ে ছিল একটি নতুন কেনা ছুরি। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, বছর তিনেক আগে অন্তরা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের একটি ডিপ্লোমা পাঠ্যক্রমে ভর্তি হয়েছিলেন। উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা সন্তোষও সেখানেই পড়ত। সেই সূত্রেই দু’জনের আলাপ-পরিচয় বাড়তে থাকে। বছরখানেক আগে নার্সিং প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য অন্তরা বেঙ্গালুরু যান। মাসখানেক আগে মহেশতলার বাড়িতে ফিরে আসেন।
পুলিশি জেরায় সন্তোষ জানিয়েছে, বছরখানেক ধরেই অন্তরার সঙ্গে তার মনোমালিন্য চলছিল। ঘটনার দিন অন্তরাই তাকে তাঁদের বাড়িতে যেতে বলেছিলেন। পুলিশকে সন্তোষ জানিয়েছে, অন্তরার কিছু চিঠিপত্র ও জামাকাপড় ছিল তার কাছে। অন্তরা সেগুলি ফেরত পাওয়ার জন্যই তাকে বাড়িতে ডেকেছিলেন। জামাকাপড় ও চিঠি ফেরত দেওয়ার পরে সন্তোষ অন্তরার কাছে থাকা তার সব ছবি ফেরত চায়। সন্তোষের বক্তব্য, সেই সময়েই দরজার পাশ থেকে অন্তরার পিসি শিবানীদেবী নানা কটূক্তি করতে থাকেন। সন্তোষ পুলিশকে জানিয়েছে, কটূক্তি শুনে রাগের বসে সে রান্নাঘর থেকে ছুরি নিয়ে এসে শিবানিদেবীর গলায় বসিয়ে দেয়। পরে অন্তরাকে বিছানায় পেড়ে ফেলে তাঁরও নলি কেটে দেয় সে। তার পরে ছুরিটি ঘরে ফেলে রান্নাঘরের বেসিনে হাত ধুয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে সন্তোষ। নুঙ্গি স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে প্রথমে সে আসে শিয়ালদহে। রাতের ট্রেনেই সে উত্তরপ্রদেশ চলে যায় বলে পুলিশকে জানিয়েছে সন্তোষ। |