স্কুলে তালাবন্দি শিক্ষকেরা |
নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ |
নিজস্ব সংবাদদাদতা • ময়ূরেশ্বর |
বিডিও-র নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। এই অভিযোগে বৃহস্পতিবার ময়ূরেশ্বর থানার লোকপাড়া হাইস্কুলের শিক্ষকদের অফিসঘরে তালাবন্দি করে রাখলেন অভিভাবক ও গ্রামবাসীদের একাংশ।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৮ এপ্রিল ওই স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ দের সঙ্গে যোগাযোগ করেন গোপীনাথপুর দয়াময়ী বিদ্যাপীঠের ছাত্রী নীপা মণ্ডলের পরিবার। অভিজিৎবাবু ওই ছাত্রীর পরিবারকে বদলির শংসাপত্র-সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যোগযোগ করতে বলেছিলেন বলে দাবি। সেই মতো তাঁরা সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে যান নীপার পরিবার। কিন্তু ভর্তির সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে বলে, তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এই হয়রানির কথা জানিয়ে গত ৪ মে জেলা ভারপ্রাপ্ত স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সন্তোষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন ওই কিশোরীর পরিবার।
৫ মে খবর প্রকাশিত হওয়ায় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ওই ছাত্রীকে ভর্তি নিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের বিডিও বাবুলাল মাহাতো। দুঃস্থ ওই ছাত্রীর পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও ভর্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস করতে দেওয়ার নির্দেশ ছিল ওই চিঠিতে। নীপার মেসোমশাই জয়ন্ত দাসের অভিযোগ, “প্রধান শিক্ষক অভিজিৎবাবু নির্দেশ অমান্য করে পুরনো স্কুলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।” খবর ছড়িয়ে পড়তে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা। স্কুল ছুটির পরে প্রধান শিক্ষক-সহ অন্য শিক্ষকদের অফিসঘরে আটকে রাখেন তাঁরা। পরে বিডিও-র হস্তক্ষেপে বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদক প্রভাকর মণ্ডল বলেন, “আমরা শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ওই ছাত্রীকে ভর্তি নেওয়ার ব্যাপারে কোনও আইনি বাধা নেই। তা সত্বেও প্রধান শিক্ষক আইনের দোয়াই দিয়ে ওই ছাত্রীকে ভর্তি নিতে রাজি হচ্ছেন না।” জেলা ভারপ্রাপ্ত সরকারি স্কুল পরির্দশক (মাধ্যমিক) মনোরমা পাল সর্দার বলেন, “ওই ছাত্রীকে ভর্তি নেওয়ার ব্যাপারে কোনও আইনি জটিলতা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক কেন এমন করছেন বুঝতে পারছি না।” এ দিন বার বার চেষ্টা করেও প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। অবশ্য বিডিও বাবুলাল মাহাতো বলেন, “প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, ওই ছাত্রীকে আজ, শুক্রবার থেকে ক্লাস করতে দেওয়া হবে। তার ভর্তির ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক ও প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।” |