সাফাই দেখে মনে হয় না কর্মী আছে |
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় • নলহাটি |
জল, নিকাশি সমস্যা দূর করা গিয়েছে বলে এলাকার কাউন্সিলর দাবি করলেও, বাসিন্দারা তার উল্টো কথা বলছেন। ওয়ার্ড ঘুরেও বাসিন্দাদের ক্ষোভের সত্যতা মিলেছে।
এই দু’টি সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পাইপ চুরি ও জঞ্জাল সাফাই নিয়ে ক্ষোভের কথা। ২ নম্বর ওয়ার্ডের ছায়াপল্লি, অশোকপল্লি, খাসপাড়া ঘুরলে ওয়ার্ডবাসীর পরিশ্রুত পানীয় জল না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভের কথা শোনা যাবে, তেমনি জঞ্জাল সাফাই ও পাইপ চুরি নিয়ে নানা কথা উঠছে। এলাকার বাসিন্দা তথা এসইউসি নেতা আব্দুস সালামের অভিযোগ, “পুরপ্রধানের তরফ থেকে পাইপ চুরির যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। রাতারাতি ৫৪০টি পাইপ চুরি হয়ে গেল তা কী করে সম্ভব?” তাঁর দাবি, “ছায়াপল্লি এলাকায় পরিকল্পনাহীন ভাবে বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়ায় জল নিকাশিতে সমস্যা হচ্ছে। পুরসভার আগের পুরপ্রধান কংগ্রেসের আইনাল হুদাআহমেদ যদি বা বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে নজরদারি ছিল বর্তমান পুরপ্রধানের আমলে সেই নজরদারি নেই। যার ফলে পরিকল্পনাহীন ভাবে বাড়ি তৈরি হচ্ছে। পুরসভার উদ্যোগে পরিকল্পনাহীন ভাবে নিকাশি নালা হয়েছে।” |
অপরিকল্পিত ভাবে নিকাশি নালা ও বাসটার্মিনাস তৈরি হওয়ায় নালার জল কাঁদরে পড়ার আগে পুনরায় ধাক্কা খেয়ে এলাকা প্লাবিত করে। এ ছাড়া, শপিং মল নির্মাণ নিয়েও ক্ষুব্ধ ওই নেতা। অশোকপল্লির বাসিন্দা গৃহবধূ মালা ভকত ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। তিনি বলেন, “আমরা কাজ শুরু করেছিলাম, কিন্তু এখনও পাইপ লাইন দিয়ে পরিশ্রুত জল ঘরে ঘরে পৌঁছল না।” এলাকার বাসিন্দা নুরি বিবি, মারুফা বেগমদের ক্ষোভ, “পুরসভায় সাফাই কর্মীরা আছে, এলাকার অবস্থা দেখে তা আমরা বুঝতে পারি না। জমে থাকা আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।” বাসিন্দাদের আরও ক্ষোভ, নিকাশি ও বিদ্যুতের তো সমস্যা রয়েছেই। তার উপরে জঞ্জাল সাফাই করা হয় না। সেই আবর্জনা স্তূপের মাঝে থাকা নলকূপ থেকে জল এনে তাঁদের খেতে হচ্ছে।
কাউন্সিলর অর্চনা দাস কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হয়ে পরে তৃণমূলে যোগ দেন। এ বার পুরভোটে তিনি প্রার্থী হননি। পরিবর্তে তাঁর স্বামী অমর দাস প্রার্থী হয়েছেন। অমরবাবুই ওয়ার্ডের কাজ দেখাশোনা করতেন। তাঁর দাবি, “৪০০ মিটারের মতো নিকাশি নালা তৈরি করা হয়েছে। হাইরোডের নীচে থাকা একটি মাত্র হিউম পাইপ দিয়ে জল নিকাশি হয়। হিউম পাইপ তৈরি কালভার্ট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। পরিশ্রুত জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের অনুমোদন নিয়ে অশোকপল্লি এলাকায় ১টি ও ছায়াপল্লি এলাকায় ২টি স্ট্যান্ড পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে। এলাকায় ১৪টি নতুন নলকূপ বসানো হয়েছে।” পুরপ্রধান বিপ্লব ওঝা বলেন, “বাসটার্মিনাস নিয়ে যে সমস্যার কথা উঠেছে, সেটা ঠিক নয়। কারণ, বাসটার্মিনাস যেখানে করা হয়েছে তাতে ২ নম্বর ওয়ার্ডে জল আটকাবে না।” বাসিন্দাদের ক্ষোভ, আশ্বাস তো সকলে দিচ্ছেন, কিন্তু তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। |
নজরে নলহাটি |
ওয়ার্ড ২ |
• নিকাশি সমস্যায় এলাকা প্লাবিত হয়। এখনও পানীয় জলের সুষ্ঠু ব্যবস্থা হয়নি।
• নতুন নতুন বসতিতে এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি।
• জঞ্জাল পরিষ্কারের হাল খারাপ। |
নিকাশির সমস্যা মিটেছে। ৩, ৪, ৫, ৬ এবং পুরসভা সংলগ্ন পাইকপাড়া
পঞ্চায়েতের একাংশের জল এই ওয়ার্ডের উপর দিয়ে চলে যায়।
জলের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।
অর্চনা দাস, তৃণমূল কাউন্সিলর
|
কাউন্সিলর এলাকার উন্নয়নে ব্যার্থ। তৃণমূলে যাওয়ার জন্য উপঢৌকন
হিসেবে ২ কাঠা জমি পেয়েছেন। নিকাশি সমস্যা,
পানীয় জল ও বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে ব্যর্থ।
প্রকাশ প্রসাদ, বিরোধী প্রার্থী, কংগ্রেস
|
|