‘ছুটি’তে থাকা চিকিৎসক নিয়ে জেরবার পলসন্ডা হাসপাতাল
হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সাকুল্যে দু’জন রোগী। তাঁদের চিকিৎসার জন্য নবগ্রামের পলসণ্ডা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে খাতা-কলমে মজুত রয়েছেন দুই চিকিৎসক ও নার্স-সহ মোট ১১ জন স্বাস্থ্যকর্মী। তবুও রবিবার সকাল থেকে ভর্তি থাকা ওই দুই রোগীর চিকিৎসা পরিষেবা মেলেনি।
এমনই অভিযোগে সোমবার সকালে ওই দুই রোগীর পরিবারের লোকজন হাসপাতাল চত্বরে চিকিৎসকদের সরকারি আবাসনে তালা ঝুলিয়ে দেন। খবর পেয়ে এ দিন দুপুরে হাসপাতালে পৌঁছন নবগ্রাম ব্লক মেডিক্যাল অফিসার জয়ন্ত বিশ্বাস এবং বিডিও সুদীপ চক্রবর্তী। তাঁরা জানান, দুই চিকিৎসকের এক জনও হাসপাতালে নেই, ১০ শয্যার পলসণ্ডা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক সুমিত সরকার সপ্তাহ খানেক আগে কাউকে কিছু না জানিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। অন্য চিকিৎসক সুপ্রতীক রায় এক প্রসূতির সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ হাসপাতাল থেকে চলে গিয়েছেন।
ফলে ওই প্রসূতি, সদ্যজাত শিশু ও ডায়েরিয়া আক্রান্ত এক মহিলাকে রবিবার দুপুর থেকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়নি। বিডিও বলেন, “এ ব্যাপারে জেলাশাসককে রিপোর্ট দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হবে।” আর বিএমওএইচ বলেন, “জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধাকারিককে ওই ঘটনার রিপোর্ট দিয়েছি।”
ওই গ্রামীণ হাসপাতালে এ ঘটনা অবস্য নতুন নয়। গত এক বছরে ওই দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এমনই অজস্র অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁরা জানান, ওই হাসপাতালে দুই চিকিৎসককে পাওয়া মানে ‘আকাশের চাঁদ পাওয়া’। তাঁরা যে এর আগেও হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে কাউকে না জানিয়ে ‘ছুটিতে’ চলে গিয়েছেন এমন অভিযোগের কথা মেনে নিয়েছেন বিএমওএইচ-ও। তাসত্ত্বেও দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? উত্তর মেলেনি। তবে সিএমওএইচ জানান, এটাই ‘সেই সুযোগ’। তিনি বলেন, “এরপরে ওই দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এত দিন নেননি কেন? একইরকম ‘মৌন’ থেকেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকও।
এ দিন অবস্য পরে বিএমওএইচ সুমিতবাবুকে ডেকে পাঠান বলে জানা গিয়েছে। তাঁকে ‘সতর্কও’ করা হয়েছে। সুমিতবাবুর অবশ্য তাতে বিশেষ হেলদোল নেই। চেষ্টা করেও তাঁকে যোগাযোগও করা যায়নি।
ওই হাসপাতালে বিদ্যুৎ সংযোগ ছাড়াও রয়েছে জেনারেটর। লেবার রুমের জন্য রয়েছে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র। তবুও প্রসূতি লক্ষ্মী বেসরার অভিযোগ, “লোডশেডিং হলে মোমবাতির আলোয় সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। বাড়ি থেকে আনা কুপির জ্বালিয়ে থাকতে হল সারারাত।” ভর্তি রয়েছেন ডায়েরিয়া আক্রান্ত অন্য রোগী মালেকা বিবি। তিনি বলেন, “এই গরমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং-এর সময় জেনারেটর না চলেনি।” অভিযোগ মেনে নিয়েছেন বিএমওএইচ। তিনি বলেন, “জেনারেটর চালানোর জ্বালানি তেলের জন্য হাসপাতালের তহবিলে যথেষ্ট টাকা মজুত রয়েছে। তবুও জেনারেটর না চালিয়ে মোমবাতির আলোয় সন্তান ভূমিষ্ঠ করানো হয়েছে বলে শুনেছি। কেন বুঝতেই পারছি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.