জল-দূষণের গুজবে তোলপাড় শিলিগুড়ি
ল-দূষণের গুজব ঘিরে সোমবার দিনভর তোলপাড় হল শিলিগুড়ি শহর ও লাগোয়া এলাকা। পুরসভার সন্দেহ, কোনও একটি দুষ্টচক্র বিশেষ কোনও অভিসন্ধি নিয়ে ওই গুজব রটিয়ে ফায়দা তুলতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সারাদিনে পুরসভার তরফে নানাভাবে প্রচারও চালানো হয়েছে। রাতে পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়ে গুজব রটনাকারীদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবও গুজব, অপপ্রচার রটানোর ঘটনায় বিরক্ত। মন্ত্রী বলেন, “মেয়র এ ব্যাপারে আমাকে কিছু জানাননি। তবে এ ধরনের গুজব রটনা রুখতে সকলকেই ভূমিকা নিতে হবে।” শিলিগুড়ির বিধায়ক বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যও উদ্বিগ্ন। বিধায়ক বলেন, “রাজ্যে ‘পরিবর্তন’-এর পর থেকে এমন নানা গুজব রটানোর চক্রান্ত চলছে। আগেও দক্ষিণবঙ্গে পুকুরে বিষ মেশানোর গুজব রটিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। এটাও হয়তো চক্রান্তেরই অঙ্গ। কিন্তু, মানুষ চক্রান্তকারীদের পরাস্ত করেছেন ও আগামী দিনেও করবেন।” একইসঙ্গে শিলিগুড়িতে চক্রান্তকারীদের চিহ্নিত করে পুলিশ-প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রুদ্রনাথবাবু। এদিন রাতে মেয়র বলেছেন, “সকাল থেকে নানা জায়গায় গুজব রটানো হয়েছে। পুরসভার জলাধার থেকে পচাগলা দেহাংশ উদ্ধার হয়েছে বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে। গুজব রটনাকারীরা অনেকেই নাগরিকদের আতঙ্কিত করে পানীয় জলের বোতল কিনে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আমাদের সন্দেহ, একটি দুষ্টচক্র গুজব রটিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে নিজেরা ফায়দা তুলতে চাইছে। পুলিশ-প্রশাসন গুজব রটনাকারীদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেবে।”
কী ভাবে জল পরিশোধিত হয়: ৭-কাহন
ক্যানাল থেকে জল পৌঁছয় মূল জলাধারে।
মেশিনে ফিটকিরি মেশানো হয়।
দ্বিতীয় যন্ত্রে প্রচণ্ড ঘূর্ণি তৈরি করে ময়লা-সহ ফেনা ফেলে দেওয়া হয়।
অন্য আধারে জল নিয়ে তাতে ক্লোরিন মেশানো হয়।
বিশুদ্ধতা যাচাইয়ে জল পাঠানো হয় পরীক্ষাগারে।
পাঠানো হল শহরে সব জলাধারে।
এর পরে বাড়ি-বাড়ি জল সরবরাহ।

তথ্য: পুরসভা
পুরসভা সূত্রের খবর, কয়েকদিন ধরে পুর এলাকার কয়েকটি এলাকায় ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। শুধু জল নয়, কাটা ফল খাওয়া সহ নানা কারণে ওই রোগের প্রকোপ ছড়াচ্ছে বলে চিকিৎসকদের সন্দেহ। খোলা জায়গায় খাবার বিক্রি রুখতে পুরসভা অভিযানেও নেমেছে। এরই মধ্যে এদিন সকালে শহরের কয়েকটি এলাকায় গুজব রটে যায়, ফুলবাড়িতে পুরসভার মূল জলাধারে পচাগলা দেহাংশ রয়েছে। তার পরেই কয়েকটি এলাকায় মিনারেল ওয়াটারের বোতল বিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। বহু বাসিন্দা পুরসভায় ফোন করে উদ্বেগ প্রকাশ করে কী হয়েছে জানতে চান। প্রবীণ নাগরিকদের অনেকে মেয়রকেও ফোন করে মিনারেল ওয়াটার বিক্রি হু হু করে বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গেই পুরসভার পক্ষ থেকে গুজব রুখতে পাল্টা প্রচারে নামা হয়। পাশাপাশি, পুরসভার মেয়র, পূর্ত দফতরের মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল সহ পুরসভার কর্তারা ফুলবাড়িতে পানীয় জলের প্রধান জলাধারে যান। পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার ও আধিকারিকরাও সেখানে যান। সেখান থেকে কয়েক দফায় জল তুলে পরীক্ষা করা হয়। পরে পুলিশ গিয়েও ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন। কৃষ্ণবাবু বলেন, “ওই গুজব রটার পরে আমরা জলাধারে যাই। কয়েক দফায় জল পরীক্ষা করে দেখা হয়। সম্পূর্ণ পরিশুদ্ধ পানীয় জল শহরে সরবরাহ করা হচ্ছে। চক্রান্ত করে ওই গুজব ছড়ানো হতে পারে। এর পেছনে কাদের হাত রয়েছে তা পুলিশকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।” পুরসভা সূত্রের খবর, সম্প্রতি রাজ্য সরকার বিভিন্ন পানীয় জল প্রস্তুতকারক সংস্থার নমুনা পরীক্ষা করে দেখছে। সে জন্য বাজারে মজুত বোতল দ্রুত বিক্রি করে ফেলতে কোনও সংস্থা ছক কষেছে কি না তাও পুলিশকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে বলে কৃষ্ণবাবু জানান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.