|
|
|
|
উপনির্বাচনে নতুন মুখ আনল সিপিএম |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
সিপিএমে ‘পরিবর্তনে’র হাওয়া! বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় দু’টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে ‘নতুন মুখ’ সামনে আনল তারা। বাঁকুড়ায় সিপিএম প্রার্থী হচ্ছেন আইনজীবী, ৩৮ বছরের নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের প্রার্থী মধ্য চল্লিশের ‘দাপুটে’ নেতা সমর মুখোপাধ্যায়। গত বিধানসভা ভোটে বাঁকুড়ায় প্রায় ২৯ হাজার এবং দাসপুরে প্রায় ২৫ হাজার ভোটে হেরেছিল সিপিএম। সে দিক থেকে এই উপনির্বাচন দুই নবাগতের সামনে ‘কঠিন লড়াই’।
দুই তৃণমূল বিধায়কের মৃত্যুর কারণে দু’টি আসনেই উপনির্বাচন হচ্ছে আগামী ১২ জুন। বাঁকুড়ায় গত বার বিধানসভা ভোটে সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন প্রতীপ মুখোপাধ্যায়। তাঁর বদলে প্রার্থী করা হয়েছে বামপন্থী সংগঠন গণতান্ত্রিক আইনজীবী সঙ্ঘের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক নীলাঞ্জনবাবুকে। নতুনগঞ্জের বাসিন্দা নীলাঞ্জনবাবুর বাবা এলাকার পরিচিত চিকিৎসক। ছাত্র জীবনে এসএফআই-করা আইনজীবী সিপিএমের সদস্য হয়েছেন ১৯৯৪ সালে। দলের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্রের কথায়, “আমরা এমন এক জনকে প্রার্থী হিসাবে চাইছিলাম, যার গায়ে কোনও দাগ থাকবে না। নীলাঞ্জন তেমনই এক জন। তাই ওকেই আমরা বেছে নিয়েছি।” অমিয়বাবুর পাশে বসে নীলাঞ্জনবাবু বলেন, “দল আমায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছে। সেটা যথাসাধ্য পালন করার চেষ্টা করব।”
পশ্চিম মেদিনীপুরে ডিওয়াইএফআইয়ের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক সমরবাবু জেলা কমিটির তরফে গত বিধানসভা ভোটে বিনপুর কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন। জঙ্গলমহলে একের পর এক আসন হারাতে হলেও বিনপুর পুনরুদ্ধার করেছিল সিপিএম। মাওবাদীদের বিরুদ্ধে সিপিএমের গণ প্রতিরোধেও জেলায় তিনি উল্লেখযোগ্য নাম। সেই সমরবাবুই এ বার দাসপুরে প্রার্থী। গত বার যেখানে প্রার্থী ছিলেন সুনীল অধিকারী।
ঘটনাচক্রে, সোমবারই পশ্চিম মেদিনীপুরের নবগঠিত জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে স্থান পেয়েছেন সমরবাবু। যে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে প্রত্যাশিত ভাবেই পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন কঙ্কাল-কাণ্ডে অভিযুক্ত, এখন জামিনে মুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা গড়বেতার বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। রয়ে গিয়েছেন ওই কঙ্কাল-কাণ্ডের সূত্রেই ‘ফেরার’, কৃষক সভার রাজ্য সম্পাদক তরুণ রায়ও। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন মেঘনাদ ভুঁইয়াও। শালবনি ও কেশপুরের দু’-দু’টি কঙ্কাল-মামলায় কিছু দিন আগে পর্যন্তও ‘ফেরার’ ছিলেন তিনি। তবে সম্প্রতি আগাম জামিন পেয়েছেন।
সিপিএম সূত্রের ইঙ্গিত, জেলায় জেলায় নতুন সম্পাদকমণ্ডলী গঠনের পাশাপাশিই পূর্ব মেদিনীপুর ও কলকাতায় জেলা সম্পাদক পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় হাত দেওয়া হতে পারে। কলকাতার জেলা সম্পাদক রঘুনাথ কুশারী বয়স এবং শরীরের কারণে আগেই অব্যাহতি চেয়েছিলেন। এ বার রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে ফের স্থান পাওয়ার সময়েও তিনি একই কথা জানিয়েছেন। গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে দীর্ণ কলকাতা জেলায় নিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, দিলীপ সেন বা অনাদি সাহুদের মধ্যে থেকে নতুন জেলা সম্পাদক বাছার ‘কঠিন কাজ’ সারতে হবে আলিমুদ্দিনকে।
পূর্ব মেদিনীপুরে ‘লক্ষ্মণ-ঘনিষ্ঠ’ কানু সাহুর জায়গায় কে আসবেন, তা নিয়েও ঐকমত্য নেই। নিরঞ্জন সিহি, প্রশান্ত প্রধানেরা যেমন দৌড়ে আছেন, তেমনই তৃতীয় কোনও মুখের কথাও তুলছে দলের একাংশ। |
|
|
|
|
|