অশোকনগর বয়েজ সেকেন্ডারি স্কুলের পরিচালন সমিতির ভোটে ক্ষমতা ধরে রাখল বামেরা। রবিবার ছিল ভোট। ছ’টি আসনের সব ক’টিতেই জয়ী হয়েছে তারা।
গত ১০ ডিসেম্বর স্কুলের মধ্যে ঢুকে এক দল ‘বহিরাগত’ হামলা চালায় প্রধান শিক্ষক সুশান্ত ঘোষের উপরে। ভাঙচুর চালানো হয় স্কুলে। ববারাসতের একটি নার্সিংহোমে দু’দিন ভর্তি ছিলেন সুশান্তবাবু। এই ঘটনায় কারও নামে পুলিশের কাছে নির্দিষ্ট অভিযোগ জানাননি তিনি। শুধু জানান, ‘বহিরাগতেরা’ হামলা চালিয়েছে। যদিও ওই ঘটনায় স্থানীয় এক তৃণমূল কাউন্সিলরের নাম জড়িয়ে যায়।
এর আগে মাজদিয়া কলেজে অধ্যক্ষকে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার কিছু দিনের মধ্যেই ছাত্রসংসদের ভোটে জয়ী হয় এসএফআই। তেমনই, অশোকনগরের স্কুলে প্রধান শিক্ষক নিগ্রহের পরে পরিচালন সমিতির ভোটে জয়ী হওয়ার মধ্যে ‘বাড়তি সাফল্য’ দেখছে বাম শিবির। অশোকনগরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সত্যসেবী কর বলেন, “এলাকার ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের উপরে শারীরিক আক্রমণের ঘটনা মানুষ ভাল ভাবে নেননি। ভোটদাতারা অবশ্যই ওই ঘটনা ভাবনা-চিন্তার মধ্যে রেখেছিলেন।”
অন্য দিকে, তৃণমূলের তরফে পরাজয়ের পিছনে এই ‘যুক্তি’ উড়িয়ে দিয়েছেন। অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সমীর দত্ত বলেন, “ওই ঘটনার কোনও প্রভাব পড়েনি। কারণ, ঘটনাটি সম্পূর্ণ ভাবেই ছিল সিপিএমের অপপ্রচার। প্রধান শিক্ষককে কেউ সে দিন মারধর করেনি। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমরাই ওঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।” নির্বাচনে পরাজয়ের পিছনে তৃণমূলের ব্যাখ্যা, অতীতে এই স্কুলে তারা নির্বাচনে যোগ দেওয়ার সুযোগই পেত না। শেষ বার ভোটের সময়েও তৃণমূলের ভোটারদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। সমীরবাবুর কথায়, “ওই স্কুলে সকলেই বামপন্থী। স্কুলে ভর্তির সময়ে দেখে নেওয়া হয়, ছাত্রটির পরিবার বামপন্থী কিনা। এত কিছুর পরেও আমরা এ বার সামান্য ব্যবধানে পরাজিত হয়েছি।” এর পিছনে সাংগঠনিক কোনও দুর্বলতা আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা।
সিপিএমের বক্তব্য, অতীতে ওরা কখনও এই স্কুলের ভোটে সন্ত্রাস বা জোরজুলুমের কোনও অভিযোগ করেনি। বিধানসভা ভোটের পরে আমরা স্কুলের ভোটে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছিল। সে কারণেই ক্ষমতা ধরে রাখা গিয়েছে।
এ বার অশোনগর বয়েজ স্কুলের ভোট আক্ষরিক অর্থেই দুই শিবিরের কাছে ছিল ‘সম্মানের লড়াই।’ ‘সর্বশক্তি’ দিয়ে প্রচার চালিয়েছিল দু’পক্ষই। সমীরবাবুর দাবি, এলাকার ২৩টি স্কুলের ভোটে ২২টিতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। |