নিজস্ব সংবাদদাতা • চুঁচুড়া |
গুলি করে, কুপিয়ে খুন করা হল এক ব্যক্তিকে। রবিবার রাতে চুঁচুড়ার ঘুটিয়াবাজার-মল্লিকবাটি পাঠশালার মাঠ থেকে প্রদীপ বসু (৪১) নামে ওই ব্যক্তির দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। নিহতের বাড়ি বৈদ্যবাটির নিমাইতীর্থ ঘাট এলাকায়। বছর দুয়েক আগে অবশ্য তিনি চুঁচুড়ায় কাপাসডাঙা এলাকায় থাকতেন। ২০০৯ সালে পিপুলপাতি এলাকার এক জনকে খুনের অভিযোগে প্রদীপকে হাজতবাসও করতে হয়। তার বিরুদ্ধে নানা অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পুরনো শত্রুতার বদলা হিসেবেই খুন করা হয় প্রদীপকে।
হুগলির পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “নিহতের দাদার পক্ষ থেকে পাঁচ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। মনে হচ্ছে, একটি খুনের বদলা হিসেবেই এই খুন। তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে পর্যন্ত কাপাসডাঙায় থাকতেন প্রদীপ। এখন সেখানে তাঁর দাদা উজ্জ্বল বসু থাকেন। ২০০৯ সালের ২৫ জুলাই পিপুলপাতির সরকারি আবাসনের সামনে তাঁর ভাই কৃষ্ণ বসুকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। তিনি গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। সেই ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তাঁদের মধ্যে ছিলেন পিপুলপাতির মাধব চক্রবর্তীও। তিনি গাড়ির ব্যবসা করতেন। ওই বছরেই কয়েক মাস পরে খুন হন মাধব। সেই ঘটনায় অভিযুক্ত প্রদীপকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হাজতবাসের পরে মাস ছয়েক আগে তিনি জামিন পান। বৈদ্যবাটিতে স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে তাঁর সংসার ছিল। রং-মিস্ত্রির কাজ করতেন প্রদীপ। রবিবার বিকেলে বাড়িতে চুঁচুড়ায় যাওয়ার কথা বলে বেরিয়ে যান। রাতে না ফেরায় তাঁর স্ত্রী সোমাদেবী খোঁজ শুরু করেন।
এ দিকে, উজ্জ্বলবাবুকে স্থানীয় লোকজন জানান, ঘুটিয়াবাজার-মল্লিকবাটি পাঠশালার মাঠে তাঁর ভাইয়ের রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ জানায়, প্রদীপের বুকে ও পেটে দু’টি গুলি এবং গলার নলি কেটে দেওয়া হয়। মাথার পিছনেও ধারাল অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। সোমবার সকালে উজ্জ্বলবাবু ৫ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
প্রদীপের স্ত্রী সোমা বলেন, “রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে চুঁচুড়ায় যাচ্ছি বলে ও বেরিয়ে যায়। রাতে না ফেরায় ভাসুরকে ফোন করি। তার পরেই খুনের কথা জানতে পারি। ওকে কারা মারল কিছুই বুঝতে পারছি না।” |