প্রায় পাঁচ বছরের মেয়াদে সরকারের কোনও কাজ নিয়ে সমালোচনা দূরস্থান, বিতর্কিত কোনও মন্তব্য করে তিনি কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে ফেলেননি। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রাক-মুহূর্তে মুখ খুললেন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল। এক সাক্ষাৎকারে সরকার ও সেনাপ্রধান ভি কে সিংহের সাম্প্রতিক দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আরও সুশৃঙ্খল ভাবে বিষয়টির নিষ্পত্তি করা উচিত ছিল।”
যদিও রাষ্ট্রপতি এর অতিরিক্ত কিছু বলেননি, তবু তাঁর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই রাজনীতির অলিন্দে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। পুনেতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের জমিতে প্রতিভা পাটিলের অবসর আবাস গড়ে তোলা নিয়ে কিছু দিন ধরেই বিতর্ক চলছিল। গত শুক্রবার ওই জমি ছেড়ে দিয়েছেন পাটিল। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে বার্তা পেয়েই তিনি এমন করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে এখন এই প্রশ্নও উঠছে যে, এ বিষয়ে ক্ষোভের কারণেই কি রাষ্ট্রপতি এই মন্তব্য করলেন? |
সেশেলস্ সফরে গিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। সে দেশের প্রেসিডেন্টেকে উপহার
প্রতিভা পাটিলের। সোমবার মাহেতে। ছবি: পি টি আই। |
তবে কংগ্রেস নেতৃত্ব এ ব্যাপারে আজ কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কংগ্রেস মুখপাত্র রশিদ আলভি বলেন, “রাষ্ট্রপতি দেশের প্রথম নাগরিক। তাঁর মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না।” কিন্তু ঘরোয়া আলোচনায় কংগ্রেস নেতারা বলেন, রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্যে কংগ্রেসের সামান্য অস্বস্তি হচ্ছে ঠিকই। তবে বিজেপি বা বিরোধীরা রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্যকে অস্ত্র করে সরকারের সমালোচনায় নেমেও পড়েনি। সব মিলিয়ে বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস আর কথা বাড়াতেও চাইছে না। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা আজ বলেন, প্রতিভা পাটিলকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসাবে কংগ্রেস যে ফের মনোনীত করবে না তা তাঁর কাছেও স্পষ্ট। রাজেন্দ্র প্রসাদ ছাড়া অতীতে কাউকেই কংগ্রেস রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসাবে দ্বিতীয় বার মনোনীত করেনি। সম্ভবত তা আগাম বুঝেই অবসর আবাসের ব্যাপারে বাড়তি চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন প্রতিভা পাটিল। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে ওঠা বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতেও শুরু করেছেন তিনি।
গত পাঁচ বছরের মেয়াদে রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল ২২টি দেশে সফরে গিয়েছেন। তাঁর এই সফরে ২০০ কোটির বেশি টাকা খরচ হয়েছে বলে তথ্য অধিকার আইনে জানা যায়। তা নিয়েও সম্প্রতি বিতর্ক হয়েছিল। এই মুহূর্তেও দক্ষিণ আফ্রিকা ও সেশেলস সফরে রয়েছেন রাষ্ট্রপতি। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর এত বিদেশ সফর নিয়ে সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, “নিজের ইচ্ছামতো কোনও সফরই করিনি। সরকারের অনুরোধেই গিয়েছি। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়াতে ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই সব সফর খুবই ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছে।” |