|
|
|
|
পুকুরের দখল নিয়ে ‘গোষ্ঠী-সংঘর্ষ’, তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
পুকুরের দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের ‘গোষ্ঠী-সংঘর্ষে’ জখম হলেন ১০ জন। রবিবার উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের বৈদড়া এলাকায় ওই সংঘর্ষে পিঠে গুলি লাগে রহমত আলি নামে এক তৃণমূল কর্মীর। তিনি রায়গঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের অবশ্য অভিযোগ, কংগ্রেসের টিকিটে নির্বাচিত ইটাহার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য দানেশ আলির নেতৃত্বে এ দিন ওই পুকুরটি দখলের চেষ্টা হয়। দানেশের সঙ্গে ছিলেন কিছু কংগ্রেস কর্মী। তৃণমূলের সমর্থকেরা বাধা দিতে গেলে বাধে সংঘর্ষ। দানেশ আলির দাবি, তিনি সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে তাঁর বিরুদ্ধে। আর জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের জেরেই ওই সংঘর্ষ।”
রায়গঞ্জের ডিএসপি অম্লান ঘোষ বলেন, “পুকুরের দখলকে কেন্দ্র করে এ দিন সকালে দু’পক্ষে সংঘর্ষ হয়েছে। গুলিবিদ্ধ যুবকের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। সংঘর্ষে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, যে পুকুরের দখলকে কেন্দ্র করে এ দিন গোলমাল হয় সেটি শতাধিক বছর আগে স্থানীয় এক জমিদার এলাকার বাসিন্দাদের একাংশকে দান করেন। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের নথিতে অবশ্য পুকুরটি (পীরোত্তর সম্পত্তি) স্থানীয় বাহারুদ্দিন সরকার, নফিলুদ্দিন সরকার, বসিরুদ্দিন মণ্ডল, খয়াত আলি সরকার ও বাজারু সরকার বলে পাঁচ জনের নামে নথিভুক্ত। বংশ পরম্পরায় তাঁদের শরিকেরা ওই পুকুরে মাছ চাষ করছেন।
নফিলুদ্দিন সরকারের ছেলে তথা তৃণমূলের জয়হাট অঞ্চল কমিটির সদস্য নজরুল ইসলামের অভিযোগ, “পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য দানেশ আলির নেতৃত্বে কংগ্রেসের কিছু লোক দীর্ঘ দিন ধরে পুকুরটি দখল করার চেষ্টা করছে। এ দিনও দানেশ আলির সঙ্গে কংগ্রেসের কিছু লোক ওই পুকুর থেকে জোর করে মাছ ধরার চেষ্টা করছিল। সেই সময় তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। দানেশ আলির ছোড়া গুলিতে রহমত আলি জখম হন। পুলিশকে সব জানিয়ে অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে।” নজরুল ইসলামের দাবি, “দানেশ তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে আমাদের জানা নেই।”
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দানেশ আলি বলেন, “পীরোত্তর সম্পত্তি বলে পরিচিত ওই পুকুরে সবারই মাছ ধরার অধিকার রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ পুকুরটি দখল করে রেখেছেন। এ সব অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করাতেই এক দল দুষ্কৃতী আমাদের উপরে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাড়া করে তাদের হটিয়ে দেন।” তাঁর দাবি, “আমি সম্প্রতি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি, এ তথ্য কারও অজানা নয়। আমি কংগ্রেসের লোকেদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরি না।” ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের জেলা সভাপতি অমল আচার্যের বক্তব্য, “দানেশ আলি আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু এটা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা নয়। পুকুরের দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে বলেই শুনেছি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।” |
|
|
|
|
|