সাংসদের গাড়িতে আগুন কোচবিহারে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
রাজ্যসভার সাংসদ তারিণী রায়ের গাড়ির ধাক্কায় এক মোটরবাইক আরোহীর জখম হওয়ার ঘটনাকে ঘিরে রবিবার উত্তেজনা ছড়ায় কোচবিহার কোতোয়ালি থানার বাহান্নঘর এলাকায়। উত্তেজিত জনতা সাংসদের গাড়িতে আগুন লাগায়। সাংসদ ও তাঁর সঙ্গীদের ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ হয়। পরিস্থিতি সামলাতে সাংসদের নিরাপত্তা রক্ষী চঞ্চল ঘোষ শূন্যে দু’রাউন্ড গুলি চালান।
এলাকারই কিছু বাসিন্দা তারিণীবাবুকে একটি বাড়িতে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন। জনতার ক্ষোভের মুখে পড়ে চালক পালিয়ে গেলেও তারিণীবাবুর সঙ্গী দিশারী বক্সী নিগৃহীত হন বলে অভিযোগ। |
|
গাড়ির ধাক্কায় আহত পরীক্ষিৎ সরকার। |
সাংসদের গাড়ির আগুন নেভাতে কোচবিহার থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়। জখম মোটরবাইক
|
তারিণী রায় |
আরোহী পরীক্ষিৎ সরকার কোচবিহার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর মাথায় চোট লেগেছে। জেলা পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “সাংসদের গাড়ির ধাক্কায় এক যুবক জখম হওয়ায় পরিস্থিতি তেতে ওঠে। সাংসদের নিরাপত্তা রক্ষী শূন্যে দু’রাউন্ড গুলি চালান বলে প্রাথমিক রিপোর্ট পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
তারিণীবাবুর অভিযোগ, “এলাকার কিছু মানুষ ও একটি চ্যানেল ওই যুবককে মৃত বলে রটিয়ে দেওয়ায় উত্তেজনা বেড়ে যায়। না হলে গাড়িতে আগুন ধরানোর মতো ঘটনা ঘটত না।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, “জখম যুবককে হাসপাতাল পৌঁছনোয় উদ্যোগী না হয়ে সাংসদ অমানবিক কাজ করেছেন। না হলে জনতার এতটা ক্ষোভ হত না।” |
|
তারিণী রায়ের পুড়ে যাওয়া গাড়ি উদ্ধার করছে পুলিশ। রবিবার। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালে তারিণীবাবু কোচবিহার থেকে দলের ভাড়া গাড়ি নিয়ে বাগডোগরার দিকে রওনা হয়েছিলেন। বাগডোগরা থেকে বিমানে তাঁর দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল। পথে পুন্ডিবাড়ির বাহান্নঘর এলাকায় তাঁর গাড়িটি ওই মোটরবাইক আরোহীকে ধাক্কা মারে। অভিযোগ, সাংসদের গাড়ি বেশ কিছুটা রাস্তায় ওই যুবককে ছেঁচড়ে নিয়ে যায়। ওই ঘটনা দেখে এলাকাবাসী গাড়িটিকে ধাওয়া করেন। শেষ পর্যন্ত আরও কিছুটা দূরে গিয়ে গাড়ি থামে। চালক পুতুল রায় পালান। তারিণীবাবু ও তাঁর সঙ্গী কোচবিহারে ফেরার জন্য একটি ট্রাকে ওঠেন। বাহান্নঘরে ট্রাকটি পৌঁছতেই সাংসদ ও তাঁর সঙ্গীদের ঘিরে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ। তার মধ্যেই জখম যুবকের মৃত্যুর ভুল খবর রটে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত জনতা সাংসদের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
তারিণীবাবু বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক ভাবে দুর্ঘটনা ঘটে। আমার গাড়ির টায়ার ফেটে যায়। যন্ত্রাংশও খারাপ হয়। তার জেরেই গাড়িটি কিছুটা দূরে গিয়ে থামে। তবে, ট্রাকে চেপে ফেরার সময়ে যে ভাবে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে, তা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছি। জখম যুবককে হাসপাতালে দেখে এসেছি। তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে সব রকম সহযোগিতা করা হবে।’’ জখম যুবকের দাদা অখিল সরকার বলেন, “ভাই সুস্থ ভাবে বাড়ি ফিরুক, এখন শুধু এটাই চাইছি।”
|
ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব |
|