মিনি কাজিরাঙার সৃষ্টিকর্তা যাদব পায়েং ওরফে মোলাইকে ‘ফরেস্ট ম্যান অফ অসম’ সম্মানে ভূষিত করল দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়। আজ বসুন্ধরা দিবস (আর্থ ডে) উপলক্ষে যাদববাবুর হাতে এই সম্মান তুলে দেওয়া হল।
পঞ্চাশ বছর বয়সী যাদববাবু শৈশব থেকেই যোরহাটের উত্তর-পশ্চিমে ব্রহ্মপুত্রের বালুচরে গরু চরাতে যেতেন। দেখতেন, খাদ্যের অভাবে গবাদি পশু কী ভাবে চর থেকে চরে ঘুরে বেড়ায়। ১৯৮১ সাল থেকে বিভিন্ন গাছের চারা সংগ্রহ করে কাঠোনিবাড়ি দ্বীপের বালুচরে রোপণ করতে থাকেন তিনি। গাছ বড় হয়। গড়ে ওঠে ছোট্ট জঙ্গল। সেখানে প্রথমে আশ্রয় নিয়েছিল বানভাসি হরিণের দল। ধীরে ধীরে, চিতল, হগ ডিয়ার-সহ একাধিক প্রজাতির হরিণ যাদববাবুর জঙ্গলে বাসা বেঁধেছে। পরে দুই শাবক নিয়ে মোলাইবাবুর কাঠোনিবাড়িতে হাজির হয় এক বাঘিনিও। গত বছর বুনো মোষের একটি দলও কাঠোনিবাড়ির জঙ্গলে আসে। ফি বছর হাতির দল আসছে এখানে। এ অরণ্যে আছে শিয়াল, শকুন, নানা ধরনের সাপ ও পাখিও।
সবুজ বাঁচানো অভিযান, সবুজ বিপ্লব, বহুজাতিক সংস্থাগুলির সবুজাভিযান, সরকারি অরণ্যায়ন প্রকল্পের আড়ম্বর থেকে বহুদূরে এক প্রৌঢ়, জীবনের প্রায় তিনটি দশক একক সাধনায় আস্ত এক অরণ্য গড়ে ফেলেছেন। তাঁর নামেই এখন সেই সবুজ দ্বীপের নাম ‘মলোই কাঠোনিবাড়ি’। ডাকনাম, ‘মিনি কাজিরাঙা’। সপরিবারে দ্বীপ আঁকড়ে থাকেন তিনি। যাদববাবুর সাধের অরণ্য এখন ৩০০ হেক্টর জুড়ে ছড়িয়ে। তবে, বন বাঁচিয়ে সম্মান নয়, উল্টে অপযশই জুটেছে। জঙ্গল গড়ে বাঘ, হাতি, মোষ টেনে আনায়, আশপাশের গ্রামবাসীরা এ কালের ‘যুগলপ্রসাদ’কে কার্যত ত্যাজ্য করে দিয়েছে। তবু লড়াই থামেনি। সম্মান বলতে জুটেছে যোরহাট অসম জাতীয় যুব ছাত্র পরিষদের সংবর্ধনা। এতদিনে জাতীয় স্তরে স্বীকৃতি মিলল। |