প্রদেশ সভাপতি নিয়ে ত্রিপুরা কংগ্রেসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব
ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন সভাপতি নিয়োগ নিয়ে দলে নতুন করে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব মাথা চাড়া দিয়ে উঠল। অপসারিত প্রদেশ সভাপতি সুরজিৎ দত্ত খোলাখুলিই বলেছেন, “২০১৩ সালে ত্রিপুরায় কোনও ভাবেই ক্ষমতায় ফিরতে পারবে না কংগ্রেস। আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে বাম জমানাকে হঠানোর যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছেল, সুদীপ রায়বর্মণকে সভাপতি করায় তা নষ্ট করে দেওয়া হল।” আরও এক ধাপ এগিয়ে সুরজিতবাবুর ক্ষুব্ধ মন্তব্য, “সুদীপ আসলে সিপিএমের লোক।”
আগামী বছরই ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই সুরজিৎ দত্তকে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে বসানো হল ৬ নম্বর আগরতলা কেন্দ্রের বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মণকে। কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের নির্দেশই এই রদবদল। নতুন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুদীপ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীররঞ্জন রায়বর্মনের ছেলে।
সদ্য পদ হারানো সুরজিৎ দত্ত-সহ দলের একটি বড় অংশই এই সিদ্ধান্তে অখুশি। সুরজিৎবাবুর মন্তব্য, “এআইসিসি-র এ সিদ্ধান্ত রাজ্যের কংগ্রেসকর্মীরা ভাল চোখে দেখছেন না। দলে ঘরোয়া বিবাদ কাটিয়ে সবে ঘর গোছানো শুরু হয়েছিল। ভোটের কয়েক মাস আগে নতুন প্রদেশ সভাপতি নিযুক্ত হওয়ায় সে উদ্যোগ ধাক্কা খেল। এতে শাসক সিপিএমের সুবিধাই হবে।’’
পিতা-পুত্র। রবিবার উমাশঙ্কর রায়চৌধুরীর তোলা ছবি।
অন্য দিকে সুদীপ রায়বর্মণের নির্বাচন কেন্দ্র ঘিরে এখন খুশির হাওয়া। আজ দুপুরে আগরতলা বিমানবন্দরে নেমে সুদীপ সোজা চলে যান তাঁদের আখাউড়া রোডের বাড়িতে। বাব সমীররঞ্জনের আশীর্বাদ চাইতে। উচ্ছ্বসিত বাবা সমীররঞ্জনও তাঁর মেজ ছেলেকে জড়িয়ে ধরেন। এ দিন বিমানবন্দর থেকেই বহু তরুণ সঙ্গী হন নতুন প্রদেশ সভাপতির। বাবা সমীররঞ্জন বর্মনের নির্বাচন কেন্দ্র বিশালগড়েও কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা বাজি পুড়িয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। ঘটনা হল, ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে পোড় খাওয়া রাজনীতিক ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীররঞ্জনবাবুকে সরিয়েই সুরজিৎ দত্তকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব দেয় কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।
সুদীপবাবু বলেন, ‘‘আমি খুশি। হাইকম্যান্ড যে দায়িত্ব আমাকে দিয়েছে, আমার কাছে তা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। বাম সরকারকে গদিচ্যুত করতে রাজ্যের সমস্ত কংগ্রেস কর্মী-সমর্থককে সঙ্গে নিয়ে আমি সে দায়িত্ব পালনে এগিয়ে যাব।’’
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা রতনলাল নাথ বলেন, ‘‘২০১৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে হাইকম্যান্ড ইতিবাচক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। আশা করব, সুদীপবাবু দলের সকল নেতার সাহায্য নিয়ে এগিয়ে যাবেন।” ত্রিপুরা প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি সুশান্ত চৌধুরীও একই সুরে বলেন, ‘‘রাজ্যে সিপিএমের মোকাবিলায় দক্ষ সংগঠক সুদীপবাবুকে প্রদেশ সভাপতি হিসাবে বেছে নেওয়াটা হাইকম্যান্ডের একটি কার্যকরী পদক্ষেপ ।’’
ত্রিপুরায় শাসক দল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর বলেন, ‘‘এটা আবার প্রমাণিত হল, কংগ্রেস আদতে কোনও গণতান্ত্রিক দল নয়। ব্যক্তির ইচ্ছাই দলের সিদ্ধান্তে পরিণত হয়।’’
ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের ইতিহাসে খুব সম্ভবত সুদীপবাবুই সব থেকে কম বয়সে সভাপতি হলেন। সুদীপ ত্রিপুরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে এলএলবি-ও পাশ করেন ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াকালীনই রাজনীতিতে হাতেখড়ি। ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ পর্যন্ত ছিলেন প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি। এরই মধ্যে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য হন। প্রদেশ সহ-সভাপতির পদও সামলেছেন কয়েক বছর।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.