অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় • মুরারই |
দুই ছেলে মেয়েকে পুকুরের জলে ডুবিয়ে মারতে ভোর হয়ে যাওয়ায় তৃতীয় সন্তানকে আর খুন করতে পারেননি বাবা। দুই সন্তান খুনের অভিযোগে ধৃত মুরারইয়ের বিশোড় গ্রামের আহেসান মণ্ডল জেরায় তাঁদের কাছে একথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি পুলিশের।
শনিবার গ্রামের পুকুরে আহেসানের দুই ছেলে মুকারিম শেখ (১২) ও লায়লাতুন খাতুনের (৭) দেহ ভাসতে দেখা যায়। ঘটনার পরে আহেসান পালিয়ে গেলেও রাতে গ্রামের কাছ থেকে পড়শিরা তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। স্ত্রী রাসেদা বিবি তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছিলেন। এসপি হৃষিকেশ মিনা বলেন, “আহেসান সন্তানদের খুন করার কথা স্বীকার করেছে। দারিদ্রের জন্যই সে খুন করেছে বলে জানালেও তা আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। সে মানসিক বিকারগ্রস্ত বলে মনে হচ্ছে। চিকিৎসার কথা ভাবা হচ্ছে।” রবিবার ধৃতকে রামপুরহাট আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন জেল হয়।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, আহেসান জেরায় জানিয়েছে পরিবারের দারিদ্রের জন্যই সে ছেলেমেয়েদের ভাল খেতে পরতে দিতে পাচ্ছিল না। তাই তিন সন্তানকে সে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। শুক্রবার রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পরে সে প্রথমে মেয়ে লায়লাতুনকে কোলে তুলে নিয়ে গ্রামের একটি পুকুরে যায়। পুকুরে তাকে ডুবিয়ে খুন করে বাড়ি ফিরে আসে। বড়ছেলে মুকারিমকে তুলে অন্য একটি পুকুরে নিয়ে যায়। পথে একবার মুকারিমের ঘুম ভেঙে যায়। তখন তাকে ঘুমাতে বলে আহেসান। দুই সন্তানকে খুনের পরে আকাশ ফর্সা হতে শুরু করে। লোক চলাচল শুরু হয়ে যাবে ভেবে আহেসান তার স্ত্রীর পাশে শুয়ে থাকা মেজছেলে সুকারিমকে তুলে আনতে পারেনি। ঘরে ঢুকে ভিজে পোশাক পাল্টে গ্রামের পশ্চিমপ্রান্তে ধান-গমের খেতে সে লুকিয়ে পড়ে।
অন্ধাকার নামার পরে চুপিসাড়ে আহেসান বাড়িতে ঢুকতে গেলে বাসিন্দারা ধরে ফেলেন। স্ত্রী রাসেদা বিবির দাবি, “জমিতে চাষ করে, লোকের জমিতে কাজ করে যা রোজগার হত, তাতে সংসারে খুব দারিদ্র ছিল না। কী ভাবে ওঁর মাথার গোলামাল হল জানি না। পুলিশের কাছে স্বামীর চিকিৎসার আবেদন জানাব।” |