বোমা ফেটে দম্পতি-সহ তিন তৃণমূল কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় মঙ্গলকোটের সিপিএম বিধায়ক শাহাজাহান চৌধুরী-সহ দশ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হল। পাশাপাশি, ‘বিস্ফোরক তৈরির’ সময়ে ওই ঘটনা ঘটেছে বলে নিজে থেকে একটি অভিযোগ করেছে পুলিশ।
গত বুধবার রাতে বর্ধমানে মঙ্গলকোটের ধারসোনা গ্রামে বোমা ফেটে মেহের শেখ, তাঁর স্ত্রী আস্পিয়া বিবি ও তাঁদের পড়শি কুরবান শেখের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কুরবানের স্ত্রী রশিনা বিবি। গ্রামবাসীরা জানিয়েছিলেন, একশো দিনের কাজ নিয়ে তৃণমূলের স্থানীয় দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল চলছিল। গত সোমবার এক গোষ্ঠীর লোকজন অন্যদের ওই প্রকল্পে কাজ করতে না দেওয়ায় বচসা বাধে। বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতা ইরফান শেখ অভিযোগ করেছিলেন, “আমাদের খুন করার জন্য তৃণমূলের এক নেতা ওদের দিয়ে বোমা বাঁধাচ্ছিলেন। তিন জনের মৃত্যুর পরে এখন আমাদের সিপিএম বানানো হচ্ছে।” যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতা মেহবুব চৌধুরীর দাবি করেন, “গ্রাম দখল নেওয়ার জন্য সিপিএমের লোকজন আমাদের কর্মীদের লক্ষ করে বোমা ছোড়ে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃত মেহের শেখ মেহবুব চৌধুরীর ‘অনুগামী’ ছিলেন। তাঁর বাবা জলিল শেখ এক সময়ে সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। তিনিই মঙ্গলকোট থানায় অভিযোগ করেন, সিপিএম বিধায়ক, ধারসোনা গ্রামেরই বাসিন্দা শাহাজাহান চৌধুরীর মদতে ৯ জন দুষ্কৃতী বোমা ছুড়েছে। যদিও তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, ওই ৯ জনের মধ্যে ৫ জনই তাদের কর্মী। তবে এই অভিযোগ দায়ের হওয়ার আগেই পুলিশ নিজে থেকে একটি মামলা রুজু করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়েই এমন ঘটেছে। বৃহস্পতিবারই ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ডিআইজি (বর্ধমান রেঞ্জ) বাসব তালুকদার জানিয়েছিলেন, বিস্ফোরক তৈরির সময়ে এক দম্পতি-সহ তিন জনের মৃত্যু হয়েছে ও এক জন জখম হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরক তৈরির নমুনাও সংগ্রহ করে।
অভিযুক্ত বিধায়ক বলেন, “পুলিশ ও গ্রামবাসীই জানিয়েছেন, বোমা তৈরির সময়ে ঘটনা ঘটেছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই বোমা বাঁধা হচ্ছিল। অথচ আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হল। মানুষ এর জবাব দেবেন।” তৃণমূলের মঙ্গলকোট ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর দাবি, “ঘটনার সত্যতা যাচাই করেই অভিযোগ করা হয়েছে।” |