দুঃস্থ মেধাবী পড়ুয়াদের বৃত্তির একাংশ আত্মসাতের অভিযোগ উঠল বর্ধমানের রাজ কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক বিজয় পাল-সহ তিন টিএমসিপি নেতার বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ এনেছেন সংগঠনেরই একাংশই। অভিযোগকারীদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি অভোরকিশোর লস্কর, সংস্কৃতি সম্পাদক স্নিগ্ধা ঘোষ, সহ-সম্পাদক রাহুল চৌধুরীও।
মাত্র চার মাস আগেই রাজ কলেজে ছাত্র সংসদ দখল করেছে টিএমসিপি। এর মধ্যেই অধ্যক্ষ সুুভাষচন্দ্র নন্দীর কাছে লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তহবিল থেকে দুঃস্থ মেধাবী পড়ুয়াদের বছরে চার হাজার টাকা ভাতা পাঠানো হয়। তাঁরা এই ভাতা পাইয়ে দিচ্ছেন, এমন দাবি করে প্রাপকদের কারও কাছ থেকে এক হাজার, কারও থেকে দু’হাজার টাকা করে নিয়ে নিচ্ছেন টিএমসিপি নেতা সন্তোষ সিংহ এবং শৈলেশ সোনকার। আর এই কাজে তাঁদের মদত দিচ্ছেন কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক বিজয় পাল। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, টাকা দিতে রাজি না হলে ছাত্রছাত্রীদের ভয় দেখানো হচ্ছে। এ ভাবে প্রায় একশো ছাত্রছাত্রীর থেকে ভাতার টাকা একাংশ আদায় করা হয়েছে।
শনিবার এই অভিযোগের জেরে রাজ কলেজে উত্তেজনা দেখা দেয়। ছাত্র সংসদের প্রায় ৫০ জন ক্লাস প্রতিনিধি অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে দাবি জানান, অবিলম্বে সংসদের সাধারণ সম্পাদককে বরখাস্ত করতে হবে। অপর দুই টিএমসিপি নেতার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এই আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়ে টিএমসিপি-র কার্যকরী সভাপতি পিঙ্কি ক্ষেত্রপাল বলেন, “দুঃস্থ মেধাবি ছাত্রছাত্রীদের থেকে এ ভাবে ভাতার টাকা আদায় করে ওই তিন জন চরম অন্যায় করেছে। দোষীরা যাতে ছাড়া না পায়, তা আমরা দেখব।”
অধ্যক্ষ সুভাষবাবু শনিবার ঘেরাওকারীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, রবিবার এই অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হবে। সেই মতো এ দিন দুপুরে তিনি সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার পরেই অভিযুক্ত সন্তোষ সিংহ ও শৈলেশ সোনকারের ছাত্র সংসদের কোনও কাজে যোগ দেওয়া ও কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে কলেজে ঢোকায় আপাতত নিষেধাক্ষা জারি করার সিদ্ধান্ত নেন। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, যেহেতু ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক গর্ভনিং বডির সদস্য, তাই তাঁর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে গর্ভনিং বডির বৈঠক ডাকা হবে।
তবে তাঁর ও সংগঠনের আরও দুই নেতার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানতে চাননি সাধারণ সম্পাদক বিজয় পাল। তাঁর পাল্টা দাবি, “এটা ছাত্র পরিষদ এবং এসএফআইয়ের ষড়যন্ত্র। সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে কলেজে ঢুকতে না দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত অধ্যক্ষ নিতে পারেন না। অভিযোগের সাপেক্ষে কোনও প্রমাণ ছাড়াই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা আদালতে যাব।” |