কচ্ছপের ছানা হাতে স্বরাজ মহাকুড়, চন্দন মহাকুড়ের তোলা ছবি। |
লক্ষ্মীপুজোর দিন সকালে ভরতগড়ের এক চাষির মাছ ধরার আটলেতে ধরা পড়ে ৭টি বিরল প্রজাতির কচ্ছপ। চাষি সেগুলো নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য। সেই সময় মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে খেলছিল স্বরাজ। সে বায়না ধরে, টিফিনের জমানো টাকা দিয়ে কিনে ছানাগুলোকে পুষবে। ওইটুকু ছেলের আগ্রহ দেখে চাষি ৪০০ টাকাতেই ছানাগুলো দিয়ে দেন। স্বরাজ পুকুর পাড়ে বাচ্চাগুলোকে রাখতেই সেগুলো দৌড়ে জলে নেমে যায়। ছোট ছেলেটির এই কাজে গ্রামের সকলেই খুশি।
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বাসন্তী থানার জয়গোপালপুরের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র স্বরাজ মহাকুড়। ছোট থেকেই দেখে আসছে বাবা পুকুরে কচ্ছপ পোষেন। মানুষ কুকুর, বিড়াল, গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি পোষে, কিন্তু কচ্ছপ তো কেউ পোষে না, পেলেই খেয়ে নেয়। বাবার কাছেই শুনেছে, মানুষ আর কয়েক বছরের মধ্যে সব কচ্ছপ খেয়ে নেবে। ঘুম থেকে উঠেই স্বরাজ ছুটে যায় পুকুরের ধারে, কচ্ছপের টানে। ছড়িয়ে দেয় টিফিনের অংশ। সম্প্রতি তাদের পুকুরে কচ্ছপের কয়েকটি ছানা হয়েছে। তাই টান আরও বেড়েছে। বড়দের কাছ থেকে পাওয়া পুজোর খরচ ও রোজকার টিফিনের টাকা স্বরাজ জমিয়ে রাখে। তাই দিয়েই ও তাদের লালনপালন করে।
প্রভুদান হালদার। বাসন্তী, দঃ চব্বিশ পরগনা
|
ব্যান্ডেল স্টেশনের পশ্চিমে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বর্ধিষ্ণু গ্রাম রাজহাট। হুগলি জেলার পর্যটন মানচিত্রে গ্রামটি ‘ময়ূরমহল’ নামে পরিচিত। একদা গ্রামের যত্রতত্র ময়ূর ঘুরতে দেখা যেত। তাই এই নাম। কিন্তু বর্তমানে ময়ূরের সংখ্যা কমে এসেছে। প্রথমে রাজহাটের উত্তরে ময়ূরের বসতি ছিল। পরিবেশগত অসুবিধের জন্য তারা সরে আসে দক্ষিণে। তার পর ময়ূরদের দেখা যেত কুন্তী নদীর তীর সংলগ্ন ঝোপঝাড়ের মধ্যে। এখন গাঁধীগ্রাম কলেজের পেছনের জঙ্গলে তারা আশ্রয় নিয়েছে। তবে সংখ্যাটা এতই কম যে রাজহাটে এলে ময়ূর দর্শন হয় না, বাস্তবিকই ‘কপালে থাকা চাই’। বেশ কিছু সমস্যা ময়ূরদের অস্তিত্বের পক্ষে সঙ্কটজনক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বসবাস জনিত কারণই তার মধ্যে প্রধান। ঘরবাড়ি নির্মাণে বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে গাছ কাটার ফলে ময়ূরদের বাসস্থান সংকুচিত হয়ে পড়েছে। নষ্ট হচ্ছে ঝোপঝাড়। এর ওপর আছে চোরাশিকারিদের উপদ্রব।
দুঃখের বিষয়, ময়ূর সংরক্ষণে এ পর্যন্ত সরকারি পর্যায়ে কোনও পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। কেবল রাজহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের সৌজন্যে কয়েকটি হোর্ডিং চোখে পড়ে। স্বাভাবিক ভাবেই তাতে কাজ কিছু হয়নি। যেখানে সরকারি সহায়তায় গড়ে ওঠে ‘পারমাদান বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য’ বা ‘বেথুয়াডহরি অরণ্য’, এমনকী অন্য জায়গা থেকে হরিণ এনে লালনপালন করা হয় সযত্নে, সেখানে কুন্তী নদীর তীরে ময়ূরের বিকাশ ও বৃদ্ধির পক্ষে সুন্দর ও স্বাভাবিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও সরকারি বদান্যতা থেকে রাজহাট বঞ্চিত কেন?
উজ্জ্বলকুমার মণ্ডল। শেওড়াফুলি, হুগলি
|
সত্যিই নীল নির্জন। যেখানে বক্রেশ্বর নদীর স্রোত থমকে গিয়েছে কংক্রিটের দেওয়ালে। পরপর পাঁচখানা লকগেট আটকে ফেলেছে নদীর গতিপথ। কারণ জল দরকার বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য। বাঁধের এক পাশে বিস্তীর্ণ নীলাভ জলরাশি, অন্য পাশে শুকনো খটখটে নদী। সেখানে শুধুই কাশবনের সমারোহ। যেটুকু সামান্য জল লকগেটের উল্টো দিকে দেখা যায়, তা পাম্প করে তোলা। তবে ওই নীল জলেই শীতের অতিথিরা এসে গিয়েছে। উত্তুরে হাওয়া নীল জলে ঢেউ তুলছে, আর পরিযায়ী পাখিরা ঢেউয়ের তালে নাচছে। জায়গাটা বীরভূমের দুবরাজপুরের কাছে সাতকেন্দুরি। সিউড়ি থেকে ৬০ নং জাতীয় সড়ক ধরে ডান হাতে পাকা রাস্তায় মিনিট পাঁচেক যাওয়ার পর দেখা মিলবে নীল নির্জনের। মনে হতে পারে জায়গাটা পিকনিকের পক্ষে আদর্শ। কিন্তু শীতের অতিথিরা এই ব্যাপারটি একদম পছন্দ করে না। আবার ছোট বাচ্চারা বাঁধের ওপর থেকে গুলতি ছুঁড়ে পাখিদের মারার চেষ্টা করে। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নজর দিলে পাখিরা নির্ভয়ে থাকতে পারে।
অলোক মুখোপাধ্যায়। পাঁচরা, বীরভূম
|
এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
আমাদের চিঠি, সম্পাদকীয় বিভাগ,
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১ |
|