|
|
|
|
|
|
পরীক্ষা মানে সুযোগ |
নিজেকে তৈরি করে নেওয়ার সুযোগ। পরীক্ষাকে উপলক্ষ করে কিছু ভাল অভ্যেস
রপ্ত করে নেওয়ার সুযোগ। সারা জীবন যা তোমার কাজে লাগবে। পৌলমী দাস চট্টোপাধ্যায় |
একটা গল্প বলি। এক ভদ্রলোক তাঁর ছেলেকে হাওড়া স্টেশনে দিল্লির ট্রেনে তুলে দিয়ে এসেছেন। ছেলেটি দিল্লি পৌঁছে বাবাকে ফোন করল। বাবা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কী কী দেখলে?’ ছেলেটি বলল, ‘ওই তো, তুমি হাওড়ায় ট্রেনে তুলে দিলে, আমার কাছে দিল্লির টিকিট ছিল, আমি সোজা দিল্লি এসে নেমেছি।’ বাবা বললেন, ‘সে কী, এতগুলো জায়গার ওপর দিয়ে গেলে, রাস্তায় এত কিছু দেখার ছিল, কোনও কিছুই তোমার চোখে পড়ল না?’ ছেলে আমতা আমতা করে উত্তর দিল, ‘না বাবা, আমি তো হাওড়া আর দিল্লি স্টেশন ছাড়া আর কিছু দেখিনি।’
গল্পটা একটু চেনা চেনা লাগছে? কোথাও একটা মিল খুঁজে পাচ্ছ কি নিজের জীবনের সঙ্গে? আমাদের চারপাশের বেশির ভাগ মানুষ কিন্তু এই ট্রেনের যাত্রীর মতোই। সেই ছোট্টবেলায় বাবা-মা’র হাত ধরে স্কুলে ভর্তি দিয়ে যাত্রা শুরু। আর তার পর একটার পর একটা পরীক্ষার প্রস্তুতি আর নম্বর প্রাপ্তির মধ্যে দিয়ে দৌড়ে চলা সাফল্যের পিছনে। যেটা পড়ছি, সেটা আদৌ কোনও কাজে লাগল কি না, আমার জন্য অন্য কারও ক্ষতি হল কি না, নিজের জীবনে কোনও শৃঙ্খলা এল কি না এ সব নিয়ে কে আর ভাবে! কোনও মতে কাঙ্ক্ষিত নম্বর পেয়ে মনের মতো একটা কাজ জুটিয়ে নিতে পারলেই কেল্লাফতে এই হল গড়পড়তা আমাদের মনোভাব। একেবারে দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক আর নিচু ক্লাসের বার্ষিক পরীক্ষা। তাই সকলেই এখন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে বড় ব্যস্ত। কিন্তু সিলেবাসের বাঁধা ছকের বাইরে অন্য অনেক জানলা-দরজা খুলে দিতে ছাত্রজীবনের মতো সেরা সময় আর হয় না। তাই, নিজেদের যে গুণগুলো পাঠ্যপুস্তকের ভারে চাপা পড়ে গিয়েছে, পরীক্ষা প্রস্তুতির ফাঁকে ফাঁকে সেগুলো আর এক বার ঝালাই করে নাও। রেজাল্টে তো এর প্রভাব পড়বেই, ভবিষ্যৎ জীবনের উন্নতিতেও এই গুণগুলো কাজে আসবেই। প্রথম কথা হল, নিজের মনকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনা। সে বড় সহজ কথা নয়। সে জন্য কয়েকটা জিনিস অভ্যাস করো। |
স্বভাব নির্মাণের আদি পাঠ |
গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল বলেছিলেন, নিয়মিত অভ্যাসই মানুষের স্বভাবকে তৈরি করে। যন্ত্রের মতো কতকগুলো কাজ করে যাওয়া নয়, সচেতন ভাবে, নিষ্ঠার সঙ্গে কিছু সৎ গুণের অনুশীলন করে চললে সেই গুণগুলি চরিত্রের অঙ্গ হয়ে দাঁড়ায়। তার থেকেই আসে সাফল্য, আসে মানসিক পরিতৃপ্তি। অ্যারিস্টটলের এই মন্তব্য নিয়ে বড় বড় চিন্তাবিদরা পরে অনেক আলোচনা করেছেন। আমাদের সে সব তত্ত্ব না জানলেও চলবে। আমরা শুধু একটা সার কথা বুঝে নেব। নিজেকে উন্নত করার জন্য অনেক বড় বড় পরিকল্পনা, আকাশ ছোঁয়ার সঙ্কল্প, এ সব না হলেও কোনও ক্ষতি নেই, আসলে চাই ঠিক ঠিক অভ্যাস। এক বার তৈরি করে ফেলতে পারলে সেই অভ্যাসগুলোই আমাদের চালিয়ে নিয়ে যাবে। পরীক্ষা-প্রস্তুতির এই রাতজাগা দিনগুলোয় অনেক অভ্যাসই মজ্জাগত হচ্ছে। আর একটু মন দিয়ে যদি এই সময়টাকে আত্ম-অনুশীলনের কাজে লাগাতে পারো, তা হলে ফল মিলবে ভবিষ্যতেও। |
|
নিজে চিন্তা করতে শেখো |
যে বিষয়টা তুমি এই মাত্র পড়লে, দশ-পনেরো মিনিট সেটা নিয়ে ভাবো। যে ব্যাখ্যাটা তুমি এই মাত্র পড়লে, সেটার সঙ্গে কি তুমি এক মত? যদি না হও, তা হলে অন্য কোনও বই পড়ে দেখতে পারো তার সঙ্গে তোমার মত মিলছে কিনা। হতে পারে, এমন উদ্ভট ব্যাখ্যা মাথায় এল, যা নিয়ে তুমি অন্যের হাসির খোরাক হলে। হাল ছেড়ো না কিন্তু। জেনে রেখো, এক সময় অনেক বিখ্যাত বিজ্ঞানী বা দার্শনিকের বক্তব্যই এ ভাবে খারিজ করে দিয়েছিল তখনকার সমাজ। নিজে চিন্তা করতে শিখলে দু’ভাবে উপকার হয়। প্রথমত, কোনও বিষয়কে বিশ্লেষণের মাধ্যমে তার গভীরে যাওয়ার সুযোগ থাকে। দ্বিতীয়ত, নিজের মতের স্বপক্ষে যুক্তি খাড়া করতে গিয়ে আরও পাঁচটা বই তোমাকে পড়ে দেখতে হবে, আশেপাশের ঘটনা সম্পর্কে জানতে হবে। এতে জানার আগ্রহ আর পড়ার অভ্যেস দুই-ই তৈরি হবে। এখানে একটা কথা বলা দরকার। আমাদের দেশে শিক্ষাপদ্ধতিতে নিজে চিন্তা করার যথেষ্ট মূল্য দেওয়া হয় না। প্রশ্নপত্রে যে প্রশ্নগুলি থাকে, মনে করা হয়, তাদের প্রত্যেকটির একটি, এবং একটিই, ‘ঠিক’ উত্তর আছে। এ বার শিক্ষার্থীর উত্তর সেই ‘ঠিক উত্তর’-এর কতটা কাছাকাছি যেতে পেরেছে, সেটা বিচার করে নম্বর দেওয়া হয়। নিজের মতো করে পরীক্ষার খাতায় উত্তর লিখলে সচরাচর ফল ভাল হয় না। তাই পরীক্ষার জন্য পরীক্ষার মতো করেই তৈরি হতে হবে। কিন্তু খেয়াল রেখো, যেন তোমার বিশ্লেষণ করার অভ্যেসটা চলে না যায়। কারণ, উচ্চতর শিক্ষায়, এবং বৃহত্তর জীবনেও, তোমার এই অভ্যেসই বেশি কাজে আসবে। হীনম্মন্যতায় ভুগো না
তোমার বন্ধু হয়তো অঙ্কে দারুণ। তোমার আবার সাহিত্য পড়তে ভীষণ ভাল লাগে। হতেই পারে। এতে তো দোষ কিছু নেই। কিন্তু অনেক সময়ই আমাদের শুনতে হয়, ‘ও অঙ্কে এই নম্বর পেল, আর তুমি পেলে না?’ আসলে এই অভিযোগের কিন্তু কোনও ভিত্তি নেই। সবাই যদি সব কিছু পারত, তা হলে ‘উদ্ভাবক’, ‘আবিষ্কারক’ এই শব্দগুলোই থাকত না। প্রত্যেক মানুষই তার নিজের জায়গায়, নিজের মতো করে ভাল। এখানে হীনম্মন্যতার কোনও জায়গাই নেই। |
ব্যক্তিগত প্রতিযোগিতা নয় |
পড়াশোনায় প্রতিযোগিতা ভাল, কারণ তাতে সব প্রতিযোগীই নিজেকে উন্নত করতে পারে। কিন্তু সেই প্রতিযোগিতাকে কখনও ব্যক্তিগত রেষারেষি বা ঈর্ষায়, কিংবা পরস্পরকে বাধা দেওয়ার মানসিকতায় নিয়ে আসা উচিত নয়। সেটা তখন রেষারেষি হয়ে যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বাবা-মায়েরাই সন্তানদের মধ্যে এক ধরনের অসুস্থ রেষারেষির বীজ ঢুকিয়ে দেন। রেজাল্ট বেরোলেই কে কত নম্বর পেয়েছে জানতে ঝাঁপিয়ে পড়া, ক্লাস ওয়ার্ক-এর খাতা অন্যকে দেখতে না দেওয়ার পরামর্শ (ক্ষেত্র বিশেষে আদেশ), পরীক্ষার আগে বন্ধুকে সাহায্য করতে বাধা দেওয়া এ সবই মনকে বিষাক্ত করে তোলে। এক দিক থেকে দেখলে, তাঁদের যুক্তি অকাট্য। বন্ধুকে সাহায্য করলে সে সত্যিই পরীক্ষায় তোমার চেয়ে ভাল করতেই পারে। এটা কঠোর বাস্তব। তা হলে? এটা তোমাকেই ভাবতে হবে। তুমি যদি নিজের স্বার্থের ওপরে ওঠো, তা হলে হয়তো প্রতিযোগিতায় তুমি সব সময় সফল হবে না। কিন্তু মানুষ হিসেবে অনেক এগিয়ে থাকবে। আর শুধুমাত্র পরীক্ষা বা কেরিয়ারের সাফল্যই যদি তোমার কাছে অর্জুনের পাখির চোখ দেখার মতো এক মাত্র লক্ষ্যবস্তু হয়, তা হলে অন্যের পরোয়া না করেই তুমি এগিয়ে যেতে পারো। সাফল্যও হয়তো আসবে। কিন্তু তুমি একটা স্বার্থসর্বস্ব যন্ত্রে পরিণত হবে। আর বড় জীবনের কথা যদি ভাবো, তা হলে দেখবে, শুধু নিজেরটা দেখলে অন্যের সাহায্য পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, সেটা আখেরে নিজের পক্ষেও ভাল নয়। |
|
হীনম্মন্যতায় ভুগো না |
তোমার বন্ধু হয়তো অঙ্কে দারুণ। তোমার আবার সাহিত্য পড়তে ভীষণ ভাল লাগে। হতেই পারে। এতে তো দোষ কিছু নেই। কিন্তু অনেক সময়ই আমাদের শুনতে হয়, ‘ও অঙ্কে এই নম্বর পেল, আর তুমি পেলে না?’ আসলে এই অভিযোগের কিন্তু কোনও ভিত্তি নেই। সবাই যদি সব কিছু পারত, তা হলে ‘উদ্ভাবক’, ‘আবিষ্কারক’ এই শব্দগুলোই থাকত না। প্রত্যেক মানুষই তার নিজের জায়গায়, নিজের মতো করে ভাল। এখানে হীনম্মন্যতার কোনও জায়গাই নেই। |
জানার জানলাটা বন্ধ কোরো না |
নিজের মনটাকে তৈরি করতে গেলে জানার জানলা সব সময় খুলে রাখতে হবে। লেখার শুরুতে যে গল্প বলেছি ট্রেনের ওই চোখ-কান বোজা যাত্রীর মতো জীবনে পরীক্ষাটাই এক মাত্র লক্ষ্যবস্তু হতে পারে না। তাৎক্ষণিক সাফল্যের জন্য পাঠ্যবইটাকে আদ্যপান্ত মুখস্থ করতে হবে ঠিকই, কিন্তু এর বাইরেও একটা বিশাল জগৎ আছে, যেখানে প্রতি দিন অনেক কিছু ঘটে চলেছে। অনেকেই দেখবে, পড়ার নির্দিষ্ট অংশটুকু দারুণ ভাল ভাবে তৈরি করে। রেজাল্টও হয় দুর্দান্ত। কিন্তু তাকে তুমি দু-চার কথায় লোকপাল বিল নিয়ে বলতে বল, দেখবে কিছুই বলতে পারছে না। সমসাময়িক ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকার প্রবণতা এক বার তৈরি হয়ে গেলে পরবর্তী কালের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অন্যদের থেকে তুমি বেশ কয়েক কদম এগিয়ে থাকবে। তাই নিয়মিত কাগজ পড়া, টিভিতে খবর শোনা, ইন্টারনেট ঘাঁটার অভ্যেস এখন থেকেই তৈরি করো। এতে পড়াশোনার ক্ষতি হবে না। দিনে কিছুটা সময় অনায়াসে এর জন্য তুমি বরাদ্দ করতে পারো। নিজেকে তৈরি করার পাশাপাশি জীবনে শৃঙ্খলা আনাও কিন্তু একটা বড় কাজ। আমরা বড় অগোছালো। তাই কোনও কাজই সময় মতো শেষ করতে পারি না, শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়ো করে কোনও রকমে একটা আধাখ্যাঁচড়া কাজ নামিয়ে দিই, সেই নিয়ে টেনশন, খাওয়া বন্ধ, ঘুম বন্ধ ইত্যাদি ইত্যাদি। শৃঙ্খলা আনতে হলে কী করবে? |
টাইম ম্যানেজমেন্ট |
শুধু পরীক্ষার আগে সময়ের চার্ট বানিয়ে পড়ে যথেষ্ট লাভ হয় না। সারা বছরই একটা চার্ট মেনে চলো। পরিস্থিতি অনুযায়ী তাতে রদবদল করো। এই চার্টে শুধু মাত্র কোন কোন বিষয় কত সময় ধরে পড়বে সেটাই দেওয়া থাকবে না। অন্য বিষয়গুলিও থাকবে। একটু পরিষ্কার করে বলা যাক। সকাল সাড়ে ছ’টায় পড়তে শুরু করে ন’টা অবধি একটানা পড়ার পর আর নতুন কিছু মাথায় ঢুকবে না। এই ঘণ্টাখানেক সময় চার্টে ঢুকিয়ে দাও খবরের কাগজ দেখার জন্য বা কোনও ঘটনা নিয়ে বাড়ির বড়দের সঙ্গে আলোচনার জন্য। অথবা, ঘণ্টাদেড়েক একটানা অঙ্ক করার পর আধঘণ্টা সময় চার্টে রাখো যে কোনও একটা বিষয়ের ওপর রচনা লেখার জন্য। এতে পড়ার একঘেয়েমি কম আসে। এক বার অভ্যেস হয়ে গেলে দেখবে চাকরি জীবনেও এই ভাবে অফিসের কাজ আর বাড়ির কাজ সময় অনুযায়ী ভাগ করে ফেলতে পারবে। |
পড়ার ফাঁকে ইনসেনটিভ |
চার্ট অনুযায়ী কাজ করতে প্রথমে অসুবিধে হতে পারে। কিন্তু অভ্যেস হয়ে গেলে দেখবে বরাদ্দ সময়ের আগেই তুমি কাজটা শেষ করে ফেলতে পারছ। এই অতিরিক্ত সময় এ বার নিজের পছন্দ মতো ব্যবহার করো। অনেকটা নিজেই নিজেকে ইনটেনসিভ দেওয়ার মতো। তবে খেয়াল রেখো, ইনটেনসিভ-এর মাত্রা যেন এতটা বেড়ে না যায়, যাতে পরের কাজের সময়টুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটা কিন্তু ঠিক নয়। |
নিজেকে রিল্যাক্সড রাখো |
অযথা টেনশন কোরো না। এটা তো ছাত্রজীবন। একটায় ব্যর্থ হলে আবার একটা সুযোগ পাবে। ঘাবড়ানোর তো কিছু নেই। পরবর্তী কালে আরও অনেক কঠিন কাজ তোমার সামনে আসতে পারে। তখন কী করবে? টেনশনকে বেশি প্রশ্রয় দিলেই মুশকিল। কিছুতেই তোমার পিছু ছাড়তে চাইবে না। তখন সব কাজ করতেই একরাশ ভয় মনে জমা হবে, কাজটা কোনও ভাবেই ঠিকঠাক করতে পারবে না। লক্ষ করলে দেখবে, যে ঠান্ডা মাথায় কাজ করে, সে দ্রুত আর নিপুণ ভাবে কাজটা শেষ করতে পারে। অন্য দিকে যে কাজের আগেই ভয় পেয়ে যায় বা টেনশনে হাঁউমাউ করে চেঁচাতে থাকে, সে কিছুতেই কম সময়ে কাজটা শেষ করতে পারে না। অনেক গলদও থেকে যায়। তাই পরীক্ষার আগে মনটাকে ধীর-স্থির রাখো। ঠিক সময়ে হাল্কা সহজপাচ্য খাবার খাও আর পর্যাপ্ত ঘুমোও, মাঝেমাঝে খেলাধুলো করো দেখবে এমনিতেই মনটা কত হালকা থাকবে। |
আত্মসংযম হারিয়ো না |
শৃঙ্খলার একেবারে গোড়ার কথা। নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকলে কোনও কাজই তুমি সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারবে না। আসলে আমাদের চারপাশে অজস্র লোভনীয় জিনিস আছে, যারা প্রতি মুহূর্তে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যায়। পড়তে বসে পাশের বাড়ি থেকে রিয়্যালিটি শো-র আওয়াজ ভেসে এলে প্রথমেই আমরা টিভির সামনে দৌড়ে যাই না। কিন্তু ক্রমাগত যখন মনটা ওই দিকে চলে যেতে থাকে, তখন একটা সময় ‘কী-ই বা এমন ক্ষতি হবে!’ বলে উঠে পড়ি। অথবা ধরো, মাটন তোমার সহ্য হয় না। কিন্তু পরীক্ষার ঠিক আগে পাড়ার কেষ্টদার দোকানের পাশ দিয়ে আসার সময় মাটন চপের মনকাড়া গন্ধে নেচে উঠে খানদুয়েক খেয়েই ফেললে। পর দিন যথারীতি ডাক্তারের কাছে যেতে হল।
এখানেই দরকার সংযমের। এমন প্রলোভনে পড়লে আগে নিজেকে জিজ্ঞাসা করো এটা না করলে কি আমার বিরাট কোনও ক্ষতি হবে? যদি না হয়, তা হলে ক’দিন পরে তো আমি কাজটা করতে পারি। চট করে সংযম কারও মধ্যে আসতে পারে না। চেষ্টা করলে তবে আত্মসংযম নিজের মধ্যে আসে। সে চেষ্টা বরং এখনই শুরু করো। |
|
|
|
|
|