তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে পণ্ড হল দলীয় সভা। মারপিটের জেরে জখম হলেন উভয়পক্ষের ১০ জন সমর্থক। কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। কিছু সময়ের জন্য রাস্তা অবরোধও করা হয়েছে। রবিবার বিকেলে উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ থানার নিমিচি হাসপাতালের কাছে এ ঘটনা ঘটেছে। মারপিটে জখম পাঁচ জনকে মিনাখাঁ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। গুরুতর আহত তিন জনকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ফের গোলমালের আশঙ্কায় এলাকায় পুলিশি টহল শুরু হয়েছে। তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনার পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “কোনও ভাবেই দলীয় কর্মীদের উপরে আক্রমণ মেনে নেওয়া হবে না। তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিনাখাঁ থানার চাপালি পঞ্চায়েতের সুলতানপুর গ্রামে আঞ্চলিক সভা ছিল তৃণমূলের। দলীয় সম্মেলন ও সাংগঠনিক বিষয়ের উপরে জোর দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য সভা ডাকা হয়েছিল। বিকেল চারটে নাগাদ মিনাখাঁ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পঙ্কজ গোল, কালাম মল্লিক, আয়ুব গাজি-সহ কয়েক জন নেতা-কর্মী গাড়িতে চেপে সেখানে যাচ্ছিলেন। পথে নিমিচি হাসপাতালের কাছে দলের একটি গোষ্ঠীর লোকেরা তাঁদের পথ আটকায়। কিছু বোঝার আগে কালাম মল্লিক ও আয়ুব গাজিদের উপরে হামলা করা হয়। বাঁশ-লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। ছ’টি গাড়িতে যথেচ্ছ ভাঙচুর করা হয়। হামলার খবর পেয়ে সভা ছেড়ে তৃণমূলের কর্মীরা ওই এলাকায় পৌঁছালে পরিস্থিতি চরমে ওঠে। তবে দু’পক্ষে মারপিটের সম্ভবনার খবর আগে থেকে পুলিশের কাছে ছিল। সে কারণে পুলিশ ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে যায়। ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠী রাস্তা অবরোধ শুরু করে। পুলিশ তাঁদের বুঝিয়ে শান্ত করে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরে তৃণমূল নেতা গিয়াসুদ্দিন মোল্লা ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পঙ্কজ গোলের মধ্যে দলের পদ নিয়ে গোলমাল চলছিল। সম্প্রতি তৃণমূল জেলা দফতরে দু’জনের মধ্যে বচসা থেকে হাতাহাতি লেগে যায়।
হামলার জন্য গিয়াসুদ্দিনকে দায়ী করে পঙ্কজবাবু বলেন, “আগেও গিয়াসুদ্দিনের নেতৃত্বে রুহুল আমিন, রাম মণ্ডলেরা আমার উপরে হামলা করেছিল। এ দিন যখন আমরা সুলতানপুরের সভায় যাচ্ছিলাম সে সময়ে ওরা লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের উপরে আক্রমণ করে। গোলমালের জেরে সভা বানচাল হয়। বিষয়টি উর্দ্ধতন নেতৃত্বকে জানান হয়েছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে।” তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গিয়াসুদ্দিন মোল্লা। তিনি বলেন, “শুনেছি একটা মারামারি হয়েছে। আমি মারামারি পছন্দ করি না। তবে ঘটনার সময়ে আমি পারিবারিক কারণে কলকাতায় ছিলাম। কারা এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বলতে পারব না।” পুলিশ অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে। |