|
|
|
|
বন্দুক-বিষমদ ছেড়ে সুস্থ সমাজে ফেরার বার্তা আদিবাসী নাটকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বিষমদ কাণ্ড থেকে দরিদ্র মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথাসাম্প্রতিক এমনই নানা প্রসঙ্গ উঠে এল আদিবাসী নাটক প্রতিযোগিতায়। জেলা অনগ্রসর কল্যাণ বিভাগের উদ্যোগে শনিবার জেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হল আদিবাসী ভাষায় রচিত একাঙ্ক নাটক প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতা শুরু হয় বিকেলে। শেষ হয়ে রবিবার ভোরে! এই সময়ের মধ্যে গোয়ালতোড়, সবং-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের সব মিলিয়ে ১১টি দল নাটক মঞ্চস্থ করে। রাত পর্যন্ত উৎসাহী মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। অনগ্রসর সম্প্রদায় কল্যাণ বিভাগের জেলা আধিকারিক রাহুল নাথের কথায়, “প্রতিযোগিতা কেমন হবে তা নিয়ে একটা ভাবনা ছিলই। তবে, অনুষ্ঠান শুরু হতে সেই ভাবনা কেটে যায়।” |
|
মেদিনীপুরে আদিবাসী নাটক প্রতিযোগিতা |
প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে সবংয়ের ‘আদিম লাহান্তি গায়ান গাঁওতা’র নাটক। নাটকটির নাম ‘রাহ্লা দানাং রিনিজ্ বেড়া’। অর্থাৎ, মেঘে ঢাকা সূর্য। নাটকটি লিখেছেন সুনীল টুডু। কাহিনীটা এ রকম‘দশম শ্রেণীর ছাত্রী গৌরী। মা মারা গিয়েছেন। সৎ মায়ের লাঞ্ছনা সইতে না-পেরে ও টাকা উপার্জনের আশায় দাদা নরেন কলেজের পড়া ছেড়ে বনপার্টিতে নাম লিখিয়েছে। বড় হয়ে সংসারের ‘হাল’ ও দাদাকে সমাজের মূলস্রোতে ফেরানোর স্বপ্ন দেখে গৌরী। এরই মধ্যে বিনা মেঘে বজ্রপাত। একদিন বাড়ি ফিরে গৌরী জানতে পারে, চোলাই ঠেকের দেনা মেটাতে না-পেরে বাবা এবং সৎ মা ওই ঠেকের মালিক লালচাঁদের ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে। এরপরই প্রতিবাদে গজের্র্ ওঠে ওই স্কুল ছাত্রী। শেষমেশ স্থানীয় মহিলা বিধায়কের উদ্যোগে গৌরীর বিয়ে ভেঙে যায়। পড়া শেষে শিক্ষকতার চাকরি পায়। দাদাও বন্দুক ছেড়ে সুস্থ সমাজে ফিরে আসে। বাবা চোলাই বিরোধী প্রচার শুরু করেন। সৎ মা’ও নিজের ভুল বুঝতে পেরে বাল্য বিবাহ বিরোধী প্রচারে সামিল হন।’ প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন সনাতন মুর্মু, দুর্গাপ্রসাদ হেমরম-সহ পাঁচ জন। সনাতন বলেন, “সবংয়ের এই দলটির নাটক খুব ভাল হয়েছে। কম সময়ের মধ্যে সাম্প্রতিক বেশ কিছু বিষয় ছুঁয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে।”
প্রতিযোগিতায় সব মিলিয়ে ১৭টি দল যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। তবে, যোগ দেয় ১১টি দল। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য, সহ-সভাধিপতি নমিতা দে, অনগ্রসর সম্প্রদায় কল্যাণ বিভাগের জেলা আধিকারিক রাহুল নাথ, কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু পাল প্রমুখ। সভাধিপতি বলেন, “এই উদ্যোগ আদিবাসী ছেলেমেয়েদের নাটকের প্রতি উৎসাহ বাড়াবে।” |
|
|
|
|
|