পাথর খাদানের এক আধিকারিককে অফিসের ভিতরে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। ঝাড়খণ্ডের দুমকায় শিকারিপাড়া থানা এলাকায় শনিবার রাতে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। শিকারিপাড়া থানার ওসি এস এন শেখ জানান, নিহতের নাম পবনকুমার রায় (২৮)। বাড়ি কলকাতার বড়বাজার এলাকায়।
খাদানের মালিক প্রবীণ ধামানিয়া ও ইসলাম শেখ জানান, এক মাস আগে পবন তাঁদের খাদানে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন। খাদানে জমে থাকা জল তোলার কাজ চলছিল। তিনি সেই কাজ দেখাশোনা করছিলেন। ইদানীং শিকারিপাড়া থানা এলাকার বিভিন্ন পাথর খাদান অফিসে দুষ্কৃতীরা আগুন লাগাচ্ছে। তাই চার পাঁচ দিন আগে খাদানের কর্মীদের তাঁরা ছুটি দিয়ে দেন। কিন্তু পবন ফিরতে চাননি। তিনি একাই খাদানে থেকে গিয়েছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ধানবাদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রবীণ ধামানিয়া বলেন, “সল্টলেকে আমার বাড়ি। বড়বাজারে যাতায়াতের সূত্রে পবনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল। তাঁকে কাজ দিই। কিন্তু এমন পরিণতি হবে ভাবতে পারিনি। আমরা তাঁর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।” তিনি জানান, ডানলপে পবনের দাদাকে খবর দেওয়া হয়েছে। ইসলাম শেখ বলেন, “আমার বাড়ি রামপুরহাটে। শনিবার রাত প্রায় ২টো নাগাদ খবর পাই খাদানের অফিসে আগুন লেগেছে। ওই এলাকার বাসিন্দা আমাদের কর্মীদের খোঁজ নিতে বলি। পুলিশকেও খবর দেওয়া হয়। রাত সাড়ে তিনটা নাগাদ খাদানে পৌঁছে দেখি, তখনও ধিকধিক করে আগুন জ্বলছে। তত ক্ষণে পবনের দেহ পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছিল। যে ঘরে তাঁর দেহ পাওয়া গিয়েছে, সেই ঘরের দরজা বাইরে থেকে শিকল তোলা ছিল।”
শিকারিপাড়া থানার পাথর খাদানগুলি মাঝেমধ্যেই আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে শিকারিপাড়া থানার বারমেসিয়ায় সাতটি পাথর খাদানের অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই রাতেই স্থানীয় পিনারগড়িয়ার দু’টি ক্রাশার অফিস ও মাটি কাটার একটি যন্ত্রও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। খাদানগুলির অফিসে রাতে কেউ ছিলেন না। তবে বছর দেড়েক আগে এই এলাকারই চিত্রগড়িয়ার একটি খাদান অফিসের ভিতর এই ভাবেই এক কর্মীকে পুড়িয়ে মারা হয়। এক বছর আগে এই থানার মুড়িতলা এলাকায় রামপুরহাটের বাসিন্দা স্থানীয় এক পাথর ব্যবসায়ীকে দুষ্কৃতীরা অপহরণ করে খুন করেছিল। তার আগে চিত্রগড়িয়ায় পাথর ব্যবসায়ীকে বাড়ির ভিতরে খুন করা হয়। উদ্ধার হয় মাওবাদীদের বিভিন্ন দাবি সম্বলিত পোস্টার। |