কলকাতায় বাণিজ্য কেন্দ্র
চিনকে চাপে রাখতে তাইওয়ানের কাছাকাছি ভারত
বেজিংয়ের উপর চাপ বাড়াতে শঠে শাঠ্যং কূটনীতি নয়াদিল্লির। একের পর এক বিতর্কে চিনের সঙ্গে সম্পর্ক যখন উত্তপ্ত হচ্ছে, সেই সময় তাইওয়ানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে ভারত। আর তার জেরে খুব শীঘ্রই কলকাতায় একটি বাণিজ্য কেন্দ্র খুলতে চলেছে তাইওয়ান।
চিনের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিতে প্রভাব বিস্তার ও সুসম্পর্ক তৈরি করে বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত ভাবে বেজিংকে চাপের মধ্যে রাখাটাই এই মুহূর্তে কৌশল মনমোহন সরকারের। আর তাই দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, জাপানের মতো দেশগুলির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আদানপ্রদান ও সহযোগিতা বাড়িয়ে চলেছে ভারত। প্রাক্তন বিদেশসচিব নিরুপমা রাওয়ের ব্যাখ্যা, “বেজিং আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিতে পরিকাঠামো তৈরি করছে, সীমান্তে প্রভাব বাড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে কথা চালাচালি না করে বরং আমরাও চেষ্টা করব দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ভারতের উপস্থিতিকে আরও জোরদার করতে।”
গত ষাট বছর ধরে চিন ও তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনার সম্পর্ক রয়েছে। তাইওয়ান মনে করে চিনের সামরিক শক্তি তাদের স্বাধীনতা অর্জনের পক্ষে সব চেয়ে বড় বাধা। তাইওয়ানের সঙ্গে ভারতের পুরোদস্তুর কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই ঠিকই, কিন্তু চিনের রক্তচক্ষু অগ্রাহ্য করেই তাদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে চলেছে নয়াদিল্লি।
ভারতে আপাতত তিনটি অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র রয়েছে তাইওয়ানের। চেন্নাইয়ে রয়েছে একটি বাণিজ্য কেন্দ্র। কার্যত এগুলি দূতাবাসেরই অফিস। তাইওয়ানের সঙ্গে সরকারি ভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকার ফলে কৌশলগত সম্পর্ক বাড়ানো সম্ভব না হলেও সে দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমশ বাড়িয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী ভারত। অন্য দিকে তাইওয়ানের পক্ষ থেকেও আগ্রহ রয়েছে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর। গত এক বছরে সে দেশ থেকে তিন জন মন্ত্রী ভারত সফর করে গিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছেন অর্থনৈতিক সমন্বয় মন্ত্রীও। তাইওয়ানের বিদেশমন্ত্রী টিমোথি ইয়াং-এর কথায়, “ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি সম্প্রতি জাপান এবং আমেরিকার বৃদ্ধির হারকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার সব চেয়ে বড় দেশ হিসাবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে তাই গুরুত্ব দিই আমরা।”
ভারতের অন্যান্য রাজ্যের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য সচেষ্ট তাইওয়ান। বামেরা ক্ষমতাসীন থাকার সময়েই প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল তাইওয়ানের দু’টি বৃহৎ সংস্থা। রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের মন্ত্রী দেবেশ দাস তাদের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন। কিন্তু প্রাথমিক আলোচনার পর বিষয়টি এগোয়নি। তবে, তাইওয়ানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল রাজ্যে জমি নিয়ে বিতর্ক, রাজনৈতিক অস্থিরতা বা শ্রমিক ইউনিয়নের মত সমস্যাগুলি নিয়ে তাঁরা অবহিত। কিন্তু তা সত্ত্বেও এখানে বিনিয়োগ করতে পিছপা নন তাঁরা।
পশ্চিমবঙ্গে নতুন সরকার আসার পর সেই উদ্যোগ নতুন প্রাণ পেয়েছে। তবে বিনিয়োগ নয়, আপাতত কলকাতায় একটি বাণিজ্য কেন্দ্র খুলতে চায় তাইওয়ান। কেন্দ্র অনুমতি দিয়ে দিয়েছে। সবুজ সঙ্কেত রয়েছে রাজ্যের পক্ষ থেকেও। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তিনি মনে করছেন, এখানে এমন কেন্দ্র খোলা হলে রাজ্যই লাভবান হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.