বিরোধীদের লাগাতার চাপে শেষ পর্যন্ত গঙ্গারামপুরের কালদিঘি লিজ নিয়ে কার্যত পিছু হটল সিপিএম নিয়ন্ত্রিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ। বিরোধী তৃণমূল সদস্যের দাবি মেনে লিজ প্রক্রিয়া পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার বালুরঘাটে জেলা পরিষদ সভাকক্ষে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ স্থায়ী সমিতির সভায় কালদিঘি প্রসঙ্গ ওঠে। বিরোধী তৃণমূল সদস্য অখিল বর্মন লিজ প্রক্রিয়ায় অসচ্ছ্বতার অভিযোগ তুলে সরব হন। তাঁর অভিযোগ, ৯৪ একর আয়তনের সরকারি ওই জলাশয় নামমাত্র মূল্যে গঙ্গারামপুরের একটি বেসরকারি সংস্থাকে ৩৩ বছরের মেয়াদে লিজ দিয়ে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ অনিয়ম করেছেন। অবিলম্বে ওই লিজ প্রথা বাতিল করে সরকারি নিয়ম মেনে নতুন করে লিজ প্রক্রিয়া করা না-হলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে জেলা পরিষদ। এর আগে কালদিঘি লিজ দেওয়া নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে জেলা পরিষদের বিরোধী কংগ্রেস নেত্রী নার্গিসবানু চৌধুরি সরব হয়েছিলেন। তৃণমূলের তরফে জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করে মৎস্য দফতরের নথি দিয়ে বলা হয়। সরকারি নিয়মে ৩ বছরের বেশি জলাশয় লিজ দেওয়া যায় না। তা ছাড়া লিজ মানি বছরে সরকারি দর হিসাবে ওই জলাশয়ে বছরে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা হওয়া উচিত। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে নথিপত্র হেফাজতে নিয়ে জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী পুনর্নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ দিনের বৈঠকে আলোচনার পর ওই লিজ প্রক্রিয়া পুনর্নির্ধারণের সন্মত হন সভাধিপতি-সহ সভায় উপস্থিত বাম সদস্যরা। কম মূল্যে লিজ দিয়ে জেলা পরিষদের ক্ষতি হচ্ছে, তাও সকলে সহমত হন। প্রাণি সম্পদ স্থায়ী সমিতির আরএসপি কর্মাধ্যক্ষ নন্দদুলাল ঘোষ বলেন, “জেলাশাসকের সিদ্ধান্ত মতো লিজ প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে মূল্য নির্ধারণ কমিটি গড়া হয়েছে। ওই কমিটিতে রয়েছেন জেলাশাসক, জেলা ভূমিরাজস্ব আধিকারিক এবং জেলা মৎস্য দফতরের সহ-অধিকর্তা। জেলা সভাধিপতি মাগদালিনা মুর্মু বলেন, “মার্চের মধ্যে ওই কমিটি লিজ প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবেন। দীর্ঘ প্রায় ১০ বছরের উপর সিপিএম পরিচালিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ নামমাত্র মূল্যে গঙ্গারামপুরের এক সংস্থাকে কালদিঘি লিজ দিয়ে আসছে। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। সিপিএম শরিক আরএসপির পাশাপাশি জেলা পরিষদে পা রাখে তৃণমূল এবং কংগ্রেস। এরপরই কালদিঘি লিজ নিয়ে অচ্ছ্বতার অভিযোগ তুলে লাগাতার সরব ছিল বিরোধী তৃণমুল ও কংগ্রেস। |