পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জেরেই রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে মারধরের ঘটনার ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা তিলক চৌধুরী ও টিএমসিপির জেলা পর্যবেক্ষক প্রিয়ব্রত দুবে অধরাই রয়ে গিয়েছে। এর দায় রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রীকেই নিতে হবে। শুক্রবার বিকেলে রায়গঞ্জে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা বললেন রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সি। তিনি তিলকবাবু ও প্রিয়ব্রতবাবুর নাম উল্লেখ না করে বলেন, “অধ্যক্ষকে মারধরের ঘটনার ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ দুই মূল অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। তাদের এখনও গ্রেফতার করা হল না। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা না হলে আমরা রাজনৈতিক ভাবে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব। অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হওয়ার দায় পুলিশমন্ত্রীকে নিতে হবে।” পাশাপাশি, পুলিশ পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করেছে বলেই ভাঙচুর ও অধ্যক্ষকে মারধরের ঘটনায় এদিন ৯ তৃণমূল সমর্থক জামিন পেয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দীপা দেবী। তাঁর কথায়, “সরকারি সম্পত্তি নষ্ট ও অধ্যক্ষকে মারধর করার মতো গুরুতর ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পুলিশ জামিনযোগ্য ধারা দিয়ে জামিন পাইয়ে দিল। পুলিশের ভূমিকা ভালো নয়। পুলিশ রাজনৈতিক চাপে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে বলে সন্দেহ হচ্ছে। অভিযুক্তরা জামিন না পেলে ভবিষ্যতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের ঘটনা এড়ানো সম্ভব হত।” পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ও পক্ষপাতমূলক কাজকর্মের জেরেই অভিযুক্ত তৃণমূল সমর্থকেরা জামিন পেয়ে গেল বলে এদিন দীপাদেবী অভিযোগ করেন! দীপাদেবীর অভিযোগ, “ঘটনার দিন পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল বলেই পুলিশের সামনে কলেজ চত্বরে তৃণমূল সমর্থকরা তান্ডব চালানোর পর অধ্যক্ষকে মারধর করতে পেরেছে। এমনকী প্রায় দেড়মাস আগে এই পুলিশেরই নিষ্ক্রিয়তার জেরেই টিএমসিপি সদস্যরা জোর করে কালিয়াগঞ্জ কলেজের ছাত্র সংসদের ক্ষমতা দখল করেছে।” দীপাদেবী ওই দিন কলেজে কী হয়েছে তা ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “যারা কলেজে হামলা চালাল তাদের সঙ্গে কলেজের কোনও সম্পর্ক নেই। হয়েছে। অভিযুক্তরা বেশির ভাগই বেসরকারি গাড়ির চালক ও খালাসি। তাঁরা বহিরাগত। টিএমসিপি ছাত্র সংসদ দখল করতে পারবে না বুঝতে পেরে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন বানচাল করতে তৃণমূল সমর্থকরা পরিকল্পিত ভাবে কলেজে হামলা চালিয়েছে বলে মনে করছি। এখন তৃণমূলের তরফে প্রচার করা হচ্ছে কংগ্রেসের সমর্থকেরাই নাকি কলেজে ভাঙচুর ও অধ্যক্ষকে মারধর করেছে। সংবাদমাধ্যমের ছবিতে তো হামলাকারী সবাইকেই দেখা গিয়েছে। সেখানে কংগ্রেসের কাউকে দেখা গিয়েছে কি না পুলিশ ও তৃণমূল নেতারা স্পষ্ট করে বলুন।” উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক নয়। পুলিশ সবদিক খতিয়ে দেখে তদন্ত করে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে মামলা শুরু করেছে। পুলিশ কখও নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে নি। যে ধরনের অভিযোগ হয়েছে। সেই অনুযায়ী ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। পুলিশ কারও কাছে নতি স্বীকার করেনি। মূল অভিযুক্তদের অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে।” |