রাজ্য ভাঙন রোধে ব্যর্থ, মিছিলে নুর
বার নদী ভাঙনের সমস্যাকে হাতিয়ার করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে লাগাতার আন্দোলনে নেমে পড়লেন উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নূর। শুক্রবার সকালে কোতুয়ালিতে গনি খানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শতাধিক কর্মীকে নিয়ে মশাল নিয়ে জেলা সদরের বিভিন্ন রাস্তায় দৌড়ন মৌসম নিজেও। প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তায় মশাল-দৌড়ের পরে যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি তথা উত্তর মালদহের সাংসদ বলেন, “গঙ্গা, মহানন্দা, ফুলহারের ভাঙনে হাজা-হাজার মানুষ ঘরছাড়া। রতুয়া-হরিশ্চন্দ্রপুরে ৬০ হাজার বাড়ি ভেঙেছে। দুর্গতরা আকাশের তলায় রয়েছেন। রাজ্য সরকার একটাকাও সাহায্য করেনি। ভাঙন রোখার কাজও হচ্ছে না। রাজ্য সরকারের বঞ্চনা ও ব্যর্থতার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।” কিন্তু সেচ দফতর কংগ্রেসের হাতে। তা হলে দায় কী তাঁর উপরে বর্তায় না? মৌসমের যুক্তি, “দফতর থাকলেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী না-চাইলে তো কাজ হতে পারে না। দফতর কংগ্রেসের হাতে বলেই তো মালদহকে কী ভাবে বঞ্চনা করা হচ্ছে তা ভালভাবে উপলব্ধি করা যাচ্ছে।” সে ক্ষেত্রে তো মন্ত্রিসভার বৈঠকে সমস্যার কথা তুলে সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে না কেন সেই প্রশ্নে মৌসম জানান, তেমন পরিস্থিতি নেই বলেই তাঁরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।
ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।
এর পরেই মৌসম বলেন, “জোটে আছি বলে মানুষের বিপদ, জেলার বঞ্চনা দেখে প্রতিবাদ করতে পারব না? এটা হতে পারে না। তাই তো ভাঙন রোখার কাজে রাজ্য সরকারের টালবাহানা, বঞ্চনা ও ব্যর্থতার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। আমার সঙ্গে পদযাত্রায় সামিল হচ্ছেন এআইসিসি সদস্য তথা রাজ্যের পর্যবেক্ষক সাকিল আহমেদ, সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া , কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাসমুন্সি সহ প্রদেশ কংগ্রেসের বহু নেতা।” তিনি জানান, আজ, শনিবার সকালে আড়াইডাঙ্গা বটতলি থেকে ওই পদযাত্রা শুরু হবে। চার দিনে ৭০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে পদযাত্রা হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসিহাটে শেষ হবে। যে এলাকা দিয়ে পদযাত্রা হবে সেখানকার মানুষদের মৌসমরা কী ভাবে বঞ্চনা হচ্ছে সে কথা বোঝাবেন বলে জানিয়েছেন। এই আন্দোলনকে ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। তাঁর অভিযোগ, “কংগ্রেস এখনও সিপিএমকে ভুলতে পারছে না। তাই সিপিএমের হাত শক্ত করার জন্য কংগ্রেস সাংসদ এই পদযাত্রা করছেন। এঁরা চাইছে রাজ্যে সিপিএম ৪০০ বছর থাকুক।” পাশাপাশি, সাবিত্রী দেবী দাবি করেন, কদিন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া মালদহে বৈঠক করে ভাঙন রোখার কাজে কোনও সমস্যা নেই বলে ঘোষণা করেছেন। চলতি মাসেই সেই কাজ শুরু হওয়ার কথা। সাবিত্রী দেবীর কটাক্ষ, “মৌসম সব জানেন। সব জেনেও নাটক হচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনক।” একইসঙ্গে সাবিত্রী দেবীর অভিযোগ, উত্তর মালদহ পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে বলেই ওই নাটক করতে হচ্ছে। ঘটনা হল, সম্প্রতি সেচমন্ত্রী মালদহে গিয়ে ভাঙন পরিদর্শন করে দ্রুত তা রোখার কাজ হবে বলে ঘোষণাও করেন। সে সময়ে টাকার অভাব হবে না বলে মানসবাবু জানিয়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথাও বলবেন বলে মানসবাবু বৈঠকে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু, রাজ্য রাজনীতির সাম্প্রতিক জোট-জটিলতার জেরে মানসবাবু এখন ভাঙন সমস্যাকে হাতিয়ার করে জোট শরিককে চাপে ফেলতে চাইছেন বলে জেলায় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন। তবে মৌসমের পদযাত্রার বিষয়টি কিন্তু অনেক আগেই ঘোষণা করা হয়েছে। পদযাত্রা করা কথা ছিল ২৬ ডিসেম্বর থেকে। লোকপাল বিলের জন্য লোকসভায় থাকার বাধ্যবাধকতায় ২৬ ডিসেম্বর পদযাত্রা স্থগিত করে দিয়েছিলেন। পদযাত্রা কর্মসূচিতে দীপা দেবী আসার বিষয়টি আগে ঘোষমা হলেও সেচমন্ত্রী, এআইসিসির পর্যবেক্ষকের যোগ দেওয়ার বিষয়টি শেষ মুহূর্তে ঘোষণা করা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.